জাবির বিতর্কিত শৃঙ্খলা বিধি বাতিল দাবিতে মানববন্ধন

প্রকাশিত: ১৯ জুন ২০১৯, ০২:৫৪ এএম
শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট সংগঠনসমূহ তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা ছাড়াই এবং মতামতের তোয়াক্কা না করেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক গৃহীত ‘ছাত্র-শৃঙ্খলা অধ্যাদেশ-২০১৯’ এর নিবর্তনমূলক ধারা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা চলাকালীন বেলা ১২টার সময়ে নতুন রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম অনিকের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জাবি সংসদের কার্যকরী সদস্য রাকিবুল হক রনি। শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় অংশীদার উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা ছাড়াই এরুপ প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ষড়যন্ত্রের পরিচায়ক। আরও বক্তব্য রাখেন, কার্যকরী সদস্য মিখা পিরেগু। তিনি বলেন, অতি গোপনীয়তার সাথে অনুমোদিত এই ধারাসমূহ শিক্ষার্থীদের স্বার্থের চরমভাবে আঘাত করেছে। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যালোচনা মূলক সাংবাদিকতা, মুক্তবুদ্ধির চর্চা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হবে। সমাবেশে সমাপনী বক্তব্য রাখেন ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি নজির আমিন চৌধুরী জয় বলেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এরূপ স্বেচ্ছাচারী, অগণতান্ত্রিক ও একরোখা সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান ও তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করার পাশাপাশি অবিলম্বে এই শিক্ষার্থী স্বার্থবিরোধী ধারা দুটি বাতিল করে সকল মহলের মতামতের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীবান্ধব একটি যথাযথ, সময়োপোযোগী শৃঙ্খলা অধ্যাদেশ প্রণয়ন করার দাবি জানান। উল্লেখ্য গত ৫ এপ্রিল বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় গৃহীত এই অধ্যাদেশের ৫(ঞ) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনও ছাত্র/ছাত্রী অসত্য এবং তথ্য বিকৃত করে বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত কোনও সংবাদ বা প্রতিবেদন স্থানীয়/জাতীয়/আন্তর্জাতিক প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক সংবাদ মাধ্যমে/সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ/প্রচার করা বা উক্ত কাজে সহযোগিতা করতে পারবে না।’ ৫(থ) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনও ছাত্র/ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও ছাত্র/ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীর উদ্দেশ্যে টেলিফোন, মোবাইল ফোন, ই-মেইল, ইন্টানেটের মাধ্যমে কোনও অশ্লীল বার্তা বা অসৌজন্যমূলক বার্তা প্রেরণ অথবা উত্যক্ত করবে না।’ অধ্যাদেশ মতে, ধারা দুটির ব্যত্যয় ঘটলে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের চোখে ‘অসদাচরণ’ বলে গণ্য হবে এবং এজন্য লঘু শাস্তি হিসেবে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা, সতর্কীকরণ এবং গুরু শাস্তি হিসেবে আজীবন বহিষ্কার, বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার, সাময়িক বহিষ্কার ও পাঁচ হাজার টাকার উর্ধ্বে যেকোনও পরিমাণ জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। পরে ২০ মে গণমাধ্যমে এর নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেয় জাবি ছাত্র ইউনিয়ন। অবিলম্বে শিক্ষার্থী স্বার্থবিরোধী, নিবর্তনমূলক শৃঙ্খলা অধ্যাদেশ বাতিল সহ শিক্ষার্থী স্বার্থবিরোধী সকল কর্মকান্ড থেকে সরে আসার আহ্বানও জানান বক্তারা। পাশাপাশি এই ধরণের যে কোন কালা কানুন ও শিক্ষার্থী স্বার্থবিরোধী কর্মকান্ডের লেশ পেলে শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে তা কঠোরভাবে প্রতিহত করার হুঁশিয়ারিও প্রদান করা হয় কর্মসূচিতে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: