পিছলে পড়ার দায়ে এক বাস চালককে বেধড়ক পিটুনি দিলেন নাটোরে গুরুদাসপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আশিকুর রহমান। গ্রামীণ ট্রাভেলসের ওই চালকের নাম নাজিমউদ্দীন মিঠু (৫৬)। সে নাটোর শহরের বড় হরিশপুর এলাকার মুক্তিযোদ্ধা মৃত নাজমুল হোসেনের ছেলে।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) বিকেলে নাটোর-ঢাকা মহাসড়কের রয়নার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আশিকুর রহমানের বিচার দাবীতে ৭২ ঘন্টা আল্টিমেটাম দিয়েছে জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী গ্রামীণ ট্রাভেলসের বাস একটি নিয়ে নাটোরের বড়াইগ্রাম অতিক্রম করছিলেন চালক নাজিমউদ্দীন মিঠু। এ সময় চালক দেখেন ফিডার রোড বাদ দিয়ে প্রধান সড়কে বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে নাটোর অভিমুখে আসছিলেন গুরুদাসপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক আশিকুর রহমান। বেপরোয়া গতিতে চালানোর কারণে একাকি এএসআই আশিক পিছলে পড়ে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এএসআই আশিক ধাওয়া করে কাছিকাটা টোল প্লাজায় এসে গ্রামীণ ট্রাভেলসের বাসটি থামিয়ে চালক নাজিমউদ্দীন মিঠুকে জোরপূর্বক নামিয়ে টোলপ্লাজা একটি কক্ষে আটকে রেখে ঘন্টাব্যাপি বেধড়ক কিল, ঘুষি এবং লাঠি দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। পরে বাসে থাকা যাত্রীরা চালককে অন্যায়ভাবে মারপিট করার প্রতিবাদ করলে মিঠুকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় ফেলে রেখে সে চলে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় পরিবহন শ্রমিকরা তাকে উদ্ধার করে নাটোর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাহারুল ইসলাম বলেন, এএসআই আশিককে আজকেই রাজশাহীতে বদলী করা হয়েছে। আজ গুরুদাসপুরে ছিল তাঁর শেষ কর্মদিবস।
চালককে পেটানোর কথা স্বীকার করে অভিযুক্ত এএসআই আশিক বলেন, গ্রামীণ ট্রাভেলসের চালক বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর জন্য আমি রাস্তার পার্শ্বে পরে যাই। ভবিষ্যতে সে যেন ভালোভাবে গাড়ি চালায় এ জন্য উত্তম মাধ্যম দিয়েছি।
এ ব্যাপারে নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকরামুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ থাকলে চালকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। মারপিট করার অধিকার কারো নেই। এ ঘটনায় তদন্তস্বাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নাটোর জেলা পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন বলেন, আমাদের সদস্য নাজিমউদ্দীন মিঠুকে অন্যায়ভাবে মারপিট করা পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে ব্যবস্থা না নেয়া হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
পাঠকের মন্তব্য: