ঢামেকে কি স্বাস্থ্য পরীক্ষার ভালো যন্ত্র নেই?

প্রকাশিত: ০৪ জুলাই ২০১৯, ০২:৪৩ এএম
দেশের অন্যতম চিকিৎসা কেন্দ্র ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এখানে খুব ভালো চিকিৎসা হয়ে থাকে, এমন কথা অনেকেই বলে থাকেন। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গুরুতর রোগীদের এই হাসপাতালে পাঠানো হয়। এতেই বোঝা যায়, এখানে রোগীর কতটা চাপ থাকে। যারা অসুস্থ হয়ে এখানে আসে, তারা এবং তাদের আত্মীয় সজন এসময় কতটা অসহায় থাকে, ভুক্তভোগী না হলে কেউ বুঝতে পারবে না, বা কল্পনাও করা যায় না। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অতিরিক্ত ভোগান্তি এবং বিভিন্ন জায়গায় অতিরিক্ত টাকা গুনতে হয়। এমন কয়েকজন ভুক্তভোগীর সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকর। ঢাকা মেডিকেলে কলেজে রোগী ভর্তি থাকলেও বিভিন্ন পরীক্ষা করতে হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতালে। বাহিরে পরীক্ষা করতে বাধ্য করে চিকিৎসকরা। কোন জায়গায় পরীক্ষা করা হবে এটা নির্ধারণ করে দেয়া হয়। এমনকি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা গুলো করা হলে রোগীর আত্মীয়-স্বজনের সাথে রাগারাগিও করে চিকিৎসকরা। এমন অভিযোগ করেছেন এক ভুক্ত ভোগী আক্তার হোসেন। তিনি বলেন, আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয় তখন সেখানকার চিকিৎসক বাহির থেকে পরীক্ষা গুলো করার কারণে রাগারাগি করেছে। তারা বলে দিচ্ছে, সকল পরীক্ষা ঢাকা মেডিকেল থেকে করবেন। বাহির থেকে কোন পরীক্ষা করবেন না। কিন্তু ওয়ার্ডের চিকিৎসক সকল টেস্ট বাহিরে করানোর জন্যে বলে। এমনকি বেসরকারি হাসপাতালের লোক রয়েছে সেখানে। তারা পরীক্ষার কাজ করে আবার দিয়ে যায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কি পরীক্ষা করার ভালো যন্ত্র নেই এমন প্রশ্ন করছেন ভুক্ত ভোগীরা? অপর দিকে রিপন মাদবর নামে এক ভুক্ত ভোগী বিডি২৪লাইভকে বলেন, ইমারজেন্সি থেকে আমার রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়ার জন্য একটা টোলি লাগবে সেটা প্রায় ত্রিশ মিনিট ধরে এদিক সেদিক খুঁজে কোথাও পাচ্ছি না। আর কোথায় পাওয়া যাবে তেমন কোন সন্ধানও কেউ দেয় না। যখন একটা টোলি পাওয়া গেল তখন সেই টোলির মাধ্যমে আমার রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হলো। ৩ থেকে ৪ মিনিট সময়ের ব্যাপার। রোগীকে নামানোর পরে টোলি পরিচালনাকারী লোকটির হাতে পাঁচশত টাকা তুলে দেয়া হলো কিন্তু এই টাকা তিনি কোন মতোই নিবেন না। তার দাবি এক হাজার টাকা, এর কম তিনি নিবেন না। পরবর্তীতে তাকে ছয়শত টাকা দিয়ে বিদায় করতে হয়। তিনি বলেন, এখানে তারা আমাদের জিম্মি করে এভাবে টাকা আদায় করে। এখানে আমাদের কিছুই করার থাকে না। পাঁচ মিনিটের পথ এখানে এক থেকে দেড়শ টাকা নিতে পারে কিন্তু এতোটাকা কি ভাবে দাবি করে। অন্য এক রোগীর আত্মীয় জহিরুল হক বলেন, আমার রোগীকে ১০১ ওয়ার্ড থেকে এক্সরে করানোর জন্য নতুন ভবনে নিয়ে এই টেস্টটা করানোর পর একটা ওয়ার্ডে দিবে। রোগীকে টোলিতে ওঠানোর পর বলা হয় এই রোগীর স্বজনকে বলা হয় পাঁচশত টাকা দিতে হবে। তিনি বলেন, হাসপাতালে এতটা হয়রানি হতে হয়, কিন্তু দেখার কেউ নেই। এখানে টাকা ছাড়া কেউ কিছু বুঝে না। টোলিতে নেয়ার জন্য তিনি আগেই টাকা দাবি করে বসেন। এখানে মানুষ যেভাবে হয়রানির শিকার হয়ে থাকে, এসকল বিষয় দেখার মনে হয় কেউ নেই। অপরদিকে এই টোলির বিকল্প মাধ্যম হচ্ছে হুইলচেয়ার। এতেও একই ভাবে টাকা নেয়া হয় রোগীর কাছ থেকে। টোলির কাজ করে এমন কয়েকজনের সাথে কথা হয়। জানতে চাওয়া হয়, টোলি ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত কোন ফি আছে কি না? তারা জানান, এতে কোন নির্ধারিত ফি নেই। অনেকে অতিরিক্ত টাকা নেয়। আমাদের সরদার আছে তিনি অতিরিক্ত টাকা নিতে সকলকে নিষেধ করেন। আর বলা আছে যে যা খুশি হয়ে দেবে তাই যেন নেয়া হয়। তারপরও অনেকে একাজ করে। তারা বলেন, জাত বেজাত আছে না। তারা এধরনের কাজ করে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: