সেই জাদেজার প্রশংসায় মাঞ্জরেকার

প্রকাশিত: ১১ জুলাই ২০১৯, ০৬:৫৩ পিএম
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পেলেই সরাসরি ফাইনালে যাবে ভারত। সেই ভারতের সামনে লক্ষ্য ধারায় ২৪০ রান। ভারতের ব্যাটিং লাইন আপের কাছে এই রান কিছুই না। গ্রুপ পর্বে অসাধারন পারফামেন্স করে গ্রুপ সেরা হয়ে সেমিফাইনালে এসেছিল কোহলিরা। তবে মামুলি এই লক্ষ্য তারা করতে নেমে চিত্রটা ছিলো ভিন্ন। দলীয় ৫ রানেই ৩ টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানকে হারায় ভারত। তখনি ভারতের হার প্রায় নিশ্চত হয়ে যায়। তবে মঝপথে এসে ভারতের রানের চাকা সচল করেন ধোনি ও রবীন্দ্র জাদেজা। ধোনি ধীর গতিতে খেললও জাদেজা খেলেন আক্রমনাত্মক। ব্যাটসম্যানদের ব্যার্থতার দিনে ৫৯ বলে ৭৭ রানের অনবদ্য একটি ইনিংস খেলেন এই অলরাউন্ডার। মহেন্দ্র সিং ধোনির সঙ্গে করেন ১১৬ রানের জুটি। তারপরও হার থেকে এরাতে পারেনি ভারত। তবে ভারত হারলেও অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার সঞ্জয় মাঞ্জরেকার। সাবেক এই ক্রিকেটার বলেন, ‘সে (জাদেজা) রীতিমত আমাকে ছিঁড়ে ফেলেছে। সবদিক থেকে নিখাদ পারফর্মেন্স, সে ভুল প্রমাণিত করেছে পুরোপুরি। এটাই রবীন্দ্র জাদেজা যাকে আমরা খুব বেশি দেখি না। সর্বশেষ ৪০টি ইনিংসে তাঁর সর্বোচ্চ রান ছিল প্রায় ৩০ এর মতো, কিন্তু আজকে সে অসাধারণ ছিল, বল হাতেও মিতব্যায়ী ছিল।’ এর আগে মাঞ্জরেকারই তাকে গড়পড়তা মানের একজন খেলোয়াড় হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেছিলেন, ‘সবকিছু একটু একটু করে পারে এ রকম কোনো ক্রিকেটারের ভক্ত আমি নই। জাদেজা ওর ৫০ ওভারের ক্যারিয়ারে এখন এই অবস্থায় আছে। টেস্টে সে পুরোদস্তুর বোলার। কিন্তু ওয়ানডেতে আমি একজন ব্যাটসম্যান আর স্পিনার চাইব।’ তার বক্তব্যের পর চুপ থাকেননি জাদেজাও। এক টুইট বার্তায় তিনি লেখেন, ‘এখনও কিন্তু আমি আপনার দ্বিগুণ ম্যাচ খেলেছি এবং এখনও খেলে যাচ্ছি। মানুষ যা অর্জন করেছে সেটা সম্মান করতে শিখুন। আপনার মুখের ডায়রিয়া অনেক শুনেছি।’ কোহলিকে ব্যাঙ্গ করলেন মাইকেল ভন বিশ্বকাপের জন্য দলের সম্পূর্ণ শক্তি নিয়ে ইংল্যান্ড পারি জমিয়েছিলেন ক্রিকেটের পরাশক্তি ভারত। তাদের সেই শক্তি মত্তাও দেখা গিয়েছিলো গ্রুপ পর্বের ম্যাচ গুলোতে। বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ৯টি ম্যাচে মধ্যে কোহলিদের হার ছিলো মাত্র একটি ম্যাচে। আর বৃষ্টির কারণে একটা ম্যাচ পরিত্যাক্ত হলে সবোর্চ্চ ১৫ পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালি ওঠে ভারত। তবে গ্রুপ পর্বের সেই ছন্দ ধরে রাখতে পারেনি শর্মা-ধোনিরা। যার ফলে প্রথম সেমিফাইনালে ১৮ রানে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যায় ভারত। এদিকে এই হারের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমোল আলোচনা হয়। যতটুক আলোচনা ভারতের দল নিয়ে হওয়ার কথা তার চেয়ে বেশী আলোচনা হচ্ছে ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে নিয়ে। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে বিশ্বের সেরা এই ব্যাটসম্যানকে ব্যাঙ্গ করতে ভুলেনি ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন। ভারতের বিদায় নিশ্চিত হওয়ার পর পর ইন্সটাগ্রামে একটি ছবি পোস্ট করেছেন ইংল্যান্ডের সাবেক এই দলপতি। যেখানে দেখা যাচ্ছে রাজপোশাক পরিহিত কোহলি বসে আছেন সিংহাসনে। তাঁর এক হাতে একটি ক্রিকেট বল এবং আরেক হাতে রয়েছে একটি প্লেনের টিকিট। এই পোস্টের পাশে কমেন্টে ভন লিখেছেন, ‘টিকিট প্লিজ।’ ‘নো’ বলে আউট হয়েছেন ধোনি! ধোনির আউটের সময় বৃত্তের বাইরে অতিরিক্ত ফিল্ডার ছিল নিউজিল্যান্ডের। হিসেব মতো বলটা ‘নো’ হওয়া উচিত ছিল। যদিও হারের পরে এই সব তথ্য খুব গুরুত্ব পাবে কি না, সন্দেহ। ‘নো’ হলেও রান আউট হতে পারতেন ধোনি। সমর্থকদের মতে, একটা বাজে দিন এভাবে শেষ করে দিতে পারে না একটা ভাল দলকে। মাঠ থেকে বেরনোর সময় রীতিমতো ভক্তদের ভিড়ের মাঝে পড়তে হয় সৌরভকে। ভারতীয় সমর্থকেরা তাকে এমনই ঘিরে ধরেছিলেন যে, নিরাপত্তা কর্মীদের ডেকে সামাল দিতে হল। তার মধ্যেই বললেন, কোহালিরা ভাল খেলেছে। গোটা টুর্নামেন্টে ভাল খেলে এক দিনের খারাপ ক্রিকেটে বিদায় নেওয়াটা খুব দুর্ভাগ্যজনক। সত্যিই হতাশজনক।’ চার নম্বর নিয়ে জট পাকিয়ে থাকা কতটা ক্ষতি করল? সৌরভ বললেন, ‘এটা ঠিক করে ফেলা উচিত ছিল আগেই। যার কথাই ভাবি না কেন, তাকে এক বছর ধরে খেলিয়ে তৈরি করা উচিত ছিল বিশ্বকাপের জন্য।’ কাপ হারানোর যন্ত্রণা কী, সৌরভ জানেন। গাড়িতে ওঠার আগে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে গেলেন, ‘ভেবেছিলাম লর্ডসে ফাইনাল খেলব। কী যে হয়ে গেল! দিনের শেষ বিজয়ী অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন সব চেয়ে বেশি করে পাশে দাঁড়ালেন ভারতের। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে কোহালির ভারত হারিয়েছিল উইলিয়ামসনের নিউজিল্যান্ডকে। সেই ইতিহাস বদলে দিয়ে উইলিয়ামসন বলে গেলেন, ভারত দারুণ দল। দুর্ধর্ষ সব ক্রিকেটার রয়েছে। ক্রিকেট খেলাটা অনেক আকর্ষণীয় করে তুলেছে ভারত। ভারতীয় সমর্থকদের বলব, ধৈর্য হারাবেন না। তিনি আরও বলেছেন, ‘জেতায় আমরা অবশ্যই খুশি। কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেটকে অশ্রদ্ধা করার কোনও জায়গা নেই।’ ধোনির অবসর নিয়ে মুখ খুললেন কোহলি ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে এতদিন ধরে ছিল অনেক প্রশংসা। সবার ধারণা ছিল- যে কোনো টার্গেট দেওয়া হোক, সেই রান খুব সহজেই তুলে ফেলবে বিরাট কোহালির দল। কিন্তু আসল দিনে দেখা গেল ভারতের ব্যর্থতা। এতে থেমে গেল তাদের বিজয় রথ। ভারতের বিদায়ের পরপরই দলের উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান মহেন্দ্র সিং ধোনির বিশ্বকাপের পর অবসর নেয়ার কথা চলছে। ৩৮ বছরের ধোনি ২০০৪ সালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছিলেন। তারপর তিনি লাগাতার ভারতীয় দলের অংশ ছিলেন। গত কিছুদিন ধরে ধোনির ব্যাট থেকে আগের মতো রান বেরোচ্ছে না। এই বিশ্বকাপে ধোনি বেশ কিছু ভালো ইনিংস খেললেও কিন্তু তাতে পুরোনো ধোনির ঝলক দেখা যায়নি। মহেন্দ্র সিং ধোনির অবসরের ব্যাপারে টানা কথা বলা হচ্ছে আর তা নিয়েও বিরাট কোহলিকে প্রশ্ন করা হয়। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে হারের পর কোহলি প্রেস কনফারেন্সে মিডিয়ার প্রশ্নের জবাব দেন। যখন কোহলিকে ধোনির অবসরের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয় তখন তিনি বলেন, ‘ধোনি এখনো পর্যন্ত এ ব্যাপারে আমাদের কিছু বলেননি’। ৯২ রানে ৬ উইকেটে হারানো মরা ম্যাচে রবীন্দ্র জাদেজাকে নিয়ে প্রাণ ফিরিয়েছিলেন ধোনি। জাদেজার ৭৭ রানের পর ৭২ বলে ধোনি নিজে ৫০ রান করে দলকে জয়ের কাছেই নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু রানআউটের খাড়ায় পড়ে শেষ পর্যন্ত পারেননি। ম্যাচ শেষে অবশ্য দুজনের ইনিংসেরই ব্যাপক প্রশংসা করেন কোহলি। ধোনির রানআউট নিয়ে বিতর্ক ইনিংসের শুরু থেকে ভারত যখন একের পর এক উইকেট হারাচ্ছিল, তখনও মাঠে দেখা যাচ্ছিল না মহেন্দ্র সিং ধোনিকে। পাঁচ রানে তিন উইকেট হারানোর পর ২৪ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় ভারত। সেমিফাইনালের মতো ম্যাচে প্রথমে তিন উইকেট হারিয়ে ভারত যখন বিপদে, তখনও ধোনি কেন ব্যাটিংয়ে নেই? এমন প্রশ্ন উঠেছিল কমেন্ট্রি বক্স থেকেও। তবে খেলায় শুভ সমাপ্তি টানতে রিজার্ভ ডে তে সম্পূর্ণ দায়িত্বও এসে পড়ে ধোনির কাঁধে। উইকেটের একপ্রান্ত সামলে নিচ্ছিলেন এই সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক। যদিও ম্যাচ ফিনিশ করতে পারেননি মি. ফিনিশার। গাপটিলের অসাধারণ থ্রোতে রান আউট হয়ে টেল-এন্ডারদের হাতে ম্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। গতকাল বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ১৮ রানে জয়ের পর কিউই অধিনায়ক মার্টিন গাপটিলও স্বীকার করেন, ধোনির রান আউট হওয়াই ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু এ রান আউট নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও এবং ছবি প্রকাশের পর ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো ধোনির রান আউট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। ধোনি লকি ফার্গুসনের যে ডেলিভারিতে রান আউট হলেন সেটি বৈধ ছিল কি না এবং বৈধ না হলে ফলটাও পাল্টে যেতে পারত বলে মনে করা হচ্ছে। ম্যাচের সে মুহূর্তে (৪৯তম ওভার) তৃতীয় পাওয়ার প্লে চলছিল, যখন নিয়ম অনুযায়ী ৩০ গজের বাইরে পাঁচজন ফিল্ডার রাখতে হয়। কিন্তু ফার্গুসনের ওই ডেলিভারির (৪৮.৩) আগে টিভিতে একটি গ্রাফিক দেখানো হয়, যেখানে দেখা যায় নিউজিল্যান্ডের ছয়জন ফিল্ডার ৩০ গজের বাইরে। বাউন্ডারি সীমানায় ছয়জন ফিল্ডার রাখার সুবিধা থেকেই ধোনিকে ওই বলে ২রান নিতে দেয়নি নিউজিল্যান্ড। উল্টো রান আউট হতে হয় ধোনিকে। আর নিয়ম অনুযায়ী ফার্গুসনের ডেলিভারিটি ‘নো বল’ হওয়ার কথা। তবে এটাও মনে রাখতে হবে ‘নো বল’ হলেও ধোনি কিন্তু রান আউটই হতেন (নো বলে ব্যাটসম্যান রান আউট হতে পারে)।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: