স্ত্রীর একাধিক পরকীয়া, কসাই ভাড়া করে স্বামীর কাণ্ড!

প্রকাশিত: ২১ জুলাই ২০১৯, ১২:২০ এএম
সমাজের মূল ভিত্তি হল পরিবার। বিবাহ হল প্রত্যেক ধর্মের পরিবার গঠনের পবিত্র বিধান। সে জন্য বিবাহ বহির্ভূত নারী-পুরুষের সম্পর্ক সকল ধর্মেই নিষিদ্ধ। এই পরকীয়া শুধু একটি সংসারকে ধ্বংস নয়, একটি সমাজ জাতি ও রাষ্ট্রকে কলুষিত করে দিতে পারে। বিবাহের মত পবিত্র বন্ধনের মাধ্যমে যে সম্পর্কের সূচনা হয় বর্তমানে তা অনায়াসে ভেঙ্গে যাচ্ছে পরকীয়া নামক ব্যাধির কারণে। শুধু সংসার ভাঙা নয়, পরকীয়ার কারণে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও ঘটে থাকে। এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। একাধিক পুরুষের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল স্ত্রীর। সেই পরকীয়ার জেরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নিত্য অশান্তি লেগেই ছিল। শেষে কসাইকে সুপারি দিয়ে স্ত্রীকে খুন করাল স্বামী। খুনের জন্য নগদ ৩০ হাজারও দেওয়া হয়। তবে শেষ পর্যন্ত এই হত্যার রহস্য পর্দাফাঁস করল পুলিশ। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জিনিউজ বলছে, গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বালি জেটিয়া হাউসের কাছে গঙ্গার ঘাটে দুটি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। কালো রঙের একটি ব্যাগ ও একটি চটের ব্যাগ। কালো রঙের ব্যাগটি খোলা ছিল। এতে দেখা যায়, এক নারীর কাটা মুন্ডু রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই খবর দেওয়া হয় বালি থানায়। পুলিশ এসে উদ্ধার করে ব্যাগ দুটি। দেখা যায়, কালো ব্যাগে রয়েছে কাটা মুন্ডু ও সেইসঙ্গে দেহের উপরের অংশ টুকরো টুকরো করে কাটা। অন্য একটি চটের ব্যাগ থেকে পাওয়া যায় চপার জাতীয় পাঁচটি ধারালো অস্ত্র ও জামাকাপড়। খুনের তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে ভেবেছিল, দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে ব্যাগে ভরে কেউ গঙ্গায় ফেলে দিয়ে গিয়েছে। কিন্তু দুটি ব্যাগ পাওয়া যাওয়ায়, পুলিশ নিশ্চিত হয় একসঙ্গে দুটি ব্যাগ ভেসে আসতে পারে না। অর্থাৎ ব্যাগ দুটি কেউ ফেলে দিয়ে গিয়েছে। সেইসঙ্গে এই ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকার বিষয়েও নিশ্চিত হয় পুলিশ। এরপরই মহিলার কাটা মুণ্ডুর ছবি থানায় পাঠানো হয় পরিচয় জানানোর জন্য। জানা যায়, শিবপুর থানা এলাকার গণেশ চ্যাটার্জি লেনের বাসিন্দা সোনি রজক নামে এক মহিলার নামে নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছে। যার সঙ্গে উদ্ধার হওয়া কাটা মুণ্ডর মিল রয়েছে। এরপরই পুলিশ পেশায় ধোপা উপেন্দ্র রজককে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। ইতিমধ্যে উপেন্দ্র রজক এলাকায় রটিয়ে দিয়েছিল যে, তার স্ত্রী অন্য এক যুবকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছেন। এদিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই উপেন্দ্র রজকের কথায় অসঙ্গতি মেলে। এরপর পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে। প্রথমে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হয়। দেখা যায়, গত পরশু ভোরে হাতে ব্যাগ নিয়ে তিনজন হেঁটে শিবপুর এলাকা দিয়ে যাচ্ছে। এরপর বালিখাল এলাকারও সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হয়। সেখানেও দেখা যায়, ওই তিনজন ব্যাগসহ রিকশায় চড়ে যাচ্ছে। এরপরই স্বামী উপেন্দ্র রজককে চেপে ধরে পুলিশ। লাগাতার জেরার মুখে খুনের কথা কবুল করে সে। পর্দাফাঁস হয় হাড়হিম করা হত্যালীলার। খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে কসাই দিলওয়ার, নিহতের স্বামী উপেন্দ্র রজক ও শাকিল আহমেদ নামে আরও এক ব্যক্তিকে। খুনে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে ব্যাগের মধ্যে নিহত মহিলার দেহের ওপরের অংশ পাওয়া গেলেও, নীচের অংশ পাওয়া যায়নি। বাকি দেহাংশের খোঁজে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ধৃতদের।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: