ঈদ যাত্রার টিকিট পেতে নানা ভোগান্তি, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

প্রকাশিত: ২৭ জুলাই ২০১৯, ১০:৩৫ পিএম
সম্ভাব্য আগামী ১১ বা ১২ আগস্ট মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদ মানেই নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা। এরই ধারাবাহিকতায় পরিবারের সঙ্গে ঈদ উৎসব পালন করতে বাড়িতে যাবে রাজধানীতে বসবাসকারী একটা অংশের মানুষ। ঈদযাত্রায় নির্বিঘ্নে বাড়িতে পৌঁছে দিতে সরকার ও অন্যান্য পরিবহনের পাশাপাশি বাস পরিবহন মালিক, শ্রমিকরাও নিজেদের ঈদ আনন্দ মাটি করে ঘরমুখী যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। এবারের ঈদেও তার ব্যতিক্রম হবে না। তাই ঈদের ১৫ দিন আগে থেকেই বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে বাস-ট্রাক মালিক সমিতি জানিয়েছে, তারা আগামী ১১ ও ১২ আগস্ট সম্ভাব্য ঈদের তারিখ ধরে শুক্রবার (২৬ জুলাই) থেকে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করেছে। আজ শনিবার (২৭ জুলাই) সকালে থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো টিকিট বিক্রি চলছে। সকালে রাজধানীর সায়দাবাদ, গোলাপবাগ ও টিটি পাড়া, কমলাপুর, আরামবাগ ও ফকিরাপুল এলাকার বাস কাউন্টার ঘুরে দেখা যায়, এসব এলাকার কাউন্টার গুলোতে রয়েছে টিকিট প্রত্যাশীদের উপচে পড়া ভিড়। ভোর ৬টা থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে নারী-পুরুষদের লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করতে দেখা গেছে। অনেক নারী শিশু বাচ্চা কোলে নিয়ে ছাতা মাথায় দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে টিকিট সংগ্রহ করছে। অনেকে টিকিট না পাওয়ার অভিযোগ করছে, আবার অনেকে টিকিটের বেশি মূল্য নিয়েও অভিযোগ তুলেছে। এসব বিষয় নিয়ে বাস পরিবহন শ্রমিক ও টিকিট সংগ্রহকারীরা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছে। লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করা নারী-পুরুষদের অভিযোগের শেষ নেই। একাধিক নারী-পুরুষ অভিযোগ করে বিডি২৪লাইভকে বলেন, রামপুরা থেকে সকাল ৭টায় এসে সায়দাবাদে টিকিট কিনতে লাইনে দাঁড়িয়েছি। এখন সকাল ১১টা বেজে গেছে তবুও টিকিট হাতে পাইনি। অনেকে অভিযোগ করে বলেন, যে তারিখের টিকিট কিনতে চাচ্ছি কাউন্টার থেকে জানানো হচ্ছে সেই তারিখের টিকিট নেই। এখানেও অনিয়ম হচ্ছে। তারা টিকিট রেখে দিয়ে পরে বেশি দামে বিক্রি করার চিন্তা করছে এ কারণেই হয়তো আমাদের নিজেদের পছন্দ মতো তারিখের টিকিট দিচ্ছে না। রাজধানীর বাসাবো থেকে সায়দাবাদ এলাকায় টিকিট সংগ্রহ করতে আসা ফাতেমা বেগম বিডি২৪লাইভকে জানান, আমি রাজশাহীতে যাবো, কাউন্টারে গেলে আমাকে বলা হয় ৯ আগস্টের টিকিট নেই। ৬ আগস্টের টিকিট আছে। আমার অফিস ছুটি ৯ তারিখ, তাহলে আমি ৬ তারিখের টিকিট নিয়ে কি করবো। পরে আরও একটি কাউন্টারে গেলে আমি টিকিট পাই। তবে সেখান থেকেও বলা হয় টিকিট আছে তবে একদম পেছনে। আমি মহিলা মানুষ একা ঈদে বাড়ি যাবো। এই পিছনের সিটে কিভাবে যাবো? তারা ইচ্ছা করলে আমাকে একটা সামনের টিকিট দিতে পারতো কিন্তু দিল না। এরা মানুষের কথা চিন্তা করে না। শুধু বেশি টাকাটাই বোঝে। এম সালমান হোসেন নামে এক ব্যক্তি জানান, ‘টিকিট কিনতে এসে মনে হয় যুদ্ধ করতে এসেছি। আমি ৮ তারিখের টিকিট কিনতে এসেছি। এসে দেখি প্রচুর ভিড়। যাও অনেক কষ্ট করে ৩ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে কাউন্টারে পৌঁছলাম। গিয়ে দেখি টিকিটের দাম চাওয়া হচ্ছে দ্বিগুণ। আর কি করার ঈদে বাড়ি তো যেতে হবে। তাই বেশি দাম দিয়েই টিকিট কিনে নিলাম। তাও আবার গাড়ির পেছনের দিকের সিট পেলাম। আসলে ভাই এই দেশের কোথাও স্বচ্ছতা নেই।’ এ বিষয়ে সায়দাবাদ এলাকার শ্যামলী পরিহনের কাউন্টারম্যান নজরুল বিডি২৪লাইভবকে বলেন, গতকাল থেকে ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। তবে ৮-৯ (আগস্ট) তারিখের টিকিট বেশি বিক্রি হচ্ছে। এই দুই দিনের টিকিট এখন নেই বললেই চলে। তবে ৬, ৭, ১০ ও ১১ তারিখের টিকিট রয়েছে। তবে আশা করছি এসব দিনের টিকিটও বিক্রি হয়ে যাবে। যাত্রীদের বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিডি২৪লাইভকে বলেন, ‘ভাই পাবলিক বড় আজব ক্যারেক্টার। তাদের যত ভালো সার্ভিসই দেন না কেন তারা নানান ধরনের অভিযোগ করবেই। তবে হ্যাঁ, ঈদ উপলক্ষে টিকিটের দাম একটু বেশি থাকবেই। এখানে তো আমাদের দোষ নেই। এটা নির্ধারণ করে দেয় আমাদের সংগঠন, আমরা সেভাবেই দাম নেই, কিন্তু দেখেন পাবলিক আমাদেরকেই গালি দেয়। তারা আসলে বোঝে না যে এখানে আমাদের কোন হাত নেই।’

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: