সূচী গ্রেপ্তার অন্যদের গা ঢাকা

প্রকাশিত: ১৭ আগষ্ট ২০১৯, ০২:১১ পিএম
কেন্দ্রীয় বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক প্রতিমন্ত্রী হারুন আল রশিদের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় ওবায়দুল হক সূচী নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকালে শহরের ডা. ফরিদুল হুদা সড়কে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সূচীকে। পুলিশ জানিয়েছে, বাড়ি ভাঙচুরের সঙ্গে সে জড়িত। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সে এব্যাপারে তথ্যও দিয়েছে। তার রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সেলিম উদ্দিন। তিনি জানান, এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তার করতেও তাদের অভিযান চলছে। তবে সূচীকে গ্রেপ্তারের পর গাঢাকা দিয়েছে বাকিরা। লুট করে নিয়ে যাওয়া মালামাল উদ্ধারের চেষ্টাও করছে পুলিশ। ১৩ই আগস্ট দিবাগত রাতে শহরের প্রধান সড়কের পাশে হারুন আল রশিদের বাড়ির (চাষী ভবন) দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশের সীমানা প্রাচীর এবং ভেতরের বিভিন্ন স্থাপনা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। দ্বিতল বাড়িটিতে ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকা মডার্ন এক্স-রে ও প্যাথলজি ক্লিনিকের ৮২ লাখ টাকারও বেশি মালামাল লুট করে নেয়া হয় সে সময়। ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে ঈদের পরদিন রাতে বাড়িটি ভাঙচুর করা হয়। খননযন্ত্র (ভেকু), বুলডোজার, রামদা, লোহার শাবল, কুড়ালসহ নানা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাড়ি ভাঙতে সেখানে আসে শ্রমিকসহ শতাধিক লোক। সেখান থেকে মালামাল সরিয়ে নিতে ৭/৮টি ট্রাক্টর নিয়ে আসা হয়। বাড়ি ভাঙচুরের সময় সেখানকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং সিসিটিভি ক্যামেরা অচল করে দেয়া হয়। করাত দিয়ে কাটা হয় বাড়ির ভেতরের কয়েকটি পুরাতন গাছ। হারুন আল রশিদের বাড়ির পশ্চিম পাশে একটি জায়গা কিনে সেখানে হাসপাতাল করার উদ্যোগ নেন আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগের কয়েকজন নেতা এবং একাধিক ডাক্তার ও ব্যবসায়ী। সেই হাসপাতালে যাওয়ার রাস্তা প্রশস্ত করতেই বাড়িটিতে তাণ্ডব চালানো হয়। এই বাড়ি ভাঙার সঙ্গে কারা জড়িত তাদের সবার নামধাম এরই মধ্যে পেয়েছে পুলিশ। হারুন আল রশিদের চাচাতো ভাই শামীম রশিদ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি অভিযোগও দিয়েছেন। তারা হচ্ছেন প্রস্তাবিত ডা. জাকারিয়া মা ও শিশু জেনারেল হসপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মো. জাকারিয়া, শহর যুবলীগের আহ্বায়ক আমজাদ হোসেন রনি, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হেলাল উদ্দিন, সদর উপজেলার দারিয়াপুর এলাকার মিজান ওরফে জামাই মিজান, আবু কাউসার, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মনির হোসেন ও পৈরতলা এলাকার মিজান মিয়া। এ ছাড়াও মডার্ন এক্সরে ক্লিনিকের পরিচালক মো. জসিম উদ্দিন আহমেদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ভাঙচুরের সময় প্রস্তাবিত হাসপাতালের একজন অংশীদার রুবেল মিয়া বেশ তৎপর ছিল ঘটনাস্থলে। শহরের টেংকেরপাড়ে স্ট্যান্ডার্ড হাসপাতালে একটি ফার্মেসি রয়েছে তার। সে একটি ব্যানারও টানায় ভাঙচুরের সময় মডার্ন ক্লিনিকের সামনে। ব্যানারের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি উঠায়। এ ছাড়াও শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম তৌছির রাত ১২টার পর থেকে একাধিকবার ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া মডার্ন এক্সরে ক্লিনিকের মালিক আজিজুল হককে ফোন দেন। এসময় বাড়ি ভাঙার জন্য উপরের অর্ডার হয়েছে বলে আজিজকে জানান তৌছির। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে ভাঙা তদারকি করেন প্রস্তাবিত হাসপাতালের আরো কয়েকজন অংশীদার। সূত্র: মানবজমিন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: