অন্ধ তবুও অদম্য ফরিদপুরের লোকমান!

প্রকাশিত: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০১:৫৯ এএম
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা সদর ইউনিয়নের হাজি ডাঙ্গী গ্রামের আব্দুল কাদেরের চার সন্তানের মধ্যে সবার বড় লোকমান। জন্মের দুই বছরের পর থেকেই তার দুটি চোঁখ অন্ধ। কিন্তু থেমে নেই অদম্য লোকমান। সব প্রতিবন্ধকতাকে পেছনে ফেলে হার না মানা অন্ধ লোকমান সামনে এগিয়ে যেতে চায়। দৃষ্টি শক্তিসম্পন্নরা যা করতে পারেন না, সেসব কাজ খুব অনায়াসেই করতে পারে সে। লোকমানের বয়স ৪৮ পেরিয়ে গেলেও সে তার দুই চোঁখ অন্ধ নিয়েই প্রতিদিন বড় বড় গাছ কাটা, নারকেল পাড়া, মাছ ধরা, আখ কাটাসহ যে কোনো কঠিন কঠিন কাজ অনায়াসেই করে ফেলতে পারে। সে তার মনের মধ্যে জমানো অদম্য প্রতিভা, মনোবল ও আত্ববিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে অন্যের ওপর মুখাপেক্ষী না থেকে নিজে খেটে অর্থ উপার্জন করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে স্বচ্ছন্দে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি। সরেজমিনে উপজেলার হাজি ডাঙ্গী তাঁর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সে বাড়ির পাঁশের বড় একটি কড়ই গাছে উঠে সাবলীলভাবে গাছ কেটে যাচ্ছে। লোকমানের সাথে কথা বলে জানা যায়, সে তার দুই চোখেঁ কিছ্ইু দেখতে না পেলেও যেকোনো কঠিন কাজই হোক সে খুব সহজেই দৃষ্টিসম্পন্নদের মত নিখুঁত ও দক্ষতার সাথে করতে পারে। এসময় লোকমানের সাথে গাছ কাটতে থাকা অপর দুই জন ইসমাইল ও রাকিব জানান, লোকমান চোখেঁ না দেখলেও সে বড় বড় গাছ উঠে কাটাসহ যেকোন ধরনের কঠিন কাজ সাবলীলভাবে করতে পারে। লোকমানের মা ছালেহা বেগম জানান, জন্মের দুই বছর পর থেকেই বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থ্যতার কারণে লোকমানের দুটি চোঁখ সম্পূর্ণভাবে অন্ধ হয়ে যায়। তবুও আল্লাহর রহমতে লোকমান যে কোনো ধরনের কঠিন কাজ সাবলীলভাবে করতে পারে। তিনি আরো জানান, আমরা তো গরিব মানুষ। টাকার অভাবে ছেলেটির চোঁখের চিকিৎসা করাতে পারতেছিনা। চিকিৎসা করাতে পারলে ওর চোঁখ দুইড্যা ভালো হয়ে যেতো বলে তার মা জানান। সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ.জি.এম. বাদল আমিন সাংবাদিকদের জানান, লোকমান অত্যন্ত প্রতিভাবান ও কর্মঠ একজন ছেলে। লোকমান প্রতিভা আর বুদ্ধির জোরে দুই চোঁখ অন্ধ হয়েও যে কোনো কঠিন কাজ খুব দক্ষতার সাথে সহজেই করতে পারে বলে তিনি জানান।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: