রূপপুর বালিশকাণ্ডকেও হার মানিয়েছে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

প্রকাশিত: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:৪১ পিএম
দুর্নীতির অভিযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স অনিক ট্রেডাসের প্রায় ১০ কোটি টাকার বিল বছর খানিক আগে আটকে দিয়েছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বিল পরিশোধের আবেদন জানিয়ে ২০১৭ সালের ১ জুন রিট করে প্রতিষ্ঠানটি। এরপর কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে বেরিয়ে আসে সাপ। জানা যায়, রোগীর বেড আড়ালে ব্যবহৃত একটি মাত্র পর্দা কেনা হয়েছে ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকায়। তখন উঠে আসে আরও অবিশ্বাস্য সব তথ্য। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প এবং যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম কেনায় ২০১২ সাল থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে এসব দুর্নীতি হয়েছে। বেসরকারি টেলিভিশন নাগরিক টিভির একটি প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এর মাঝে সাড়ে ১১ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম কেনাকাটায় বিল দেখানো হয়েছে সাড়ে ৫২ কোটি টাকা। এই একটি কেনাকাটাতেই মেসার্স অনিক ট্রেডার্স বাড়তি বিল দেখিয়েছে অন্তত ৪১ কোটি টাকা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আইসিইউতে ব্যবহৃত সাড়ে ৩৭ লাখ টাকায় একটি পর্দার কেনার বাহিরে একটি অক্সিজেন জেনারেটিং প্ল্যান্টে খরচ দেখানো হয়েছে ৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা। একটি ভ্যাকুয়াম প্ল্যান্টে ৮৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার পাশাপাশি একটি বিএইইস মনিটরিং প্ল্যান্টে খরচ ধরা হয়েছে ২৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। তিনটি ডিজিটাল ব্লাড প্রেসার মেশিনের দাম ধরা হয়েছে ৩০ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, আর একটি হেডকার্ডিয়াক স্টেথোসকোপের দাম ১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা। এমন অবিশ্বাস্য দামে ১৬৬টি যন্ত্র ও সরঞ্জাম কিনেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মেসার্স অনিক ট্রেডাসের রিটের পর প্রকাশ পায় ওই সময়কালে হাসপাতালের শীর্ষ কর্মকর্তারাও এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এই অবস্থায় ছয় মাসের মধ্যে দুদককে তদন্ত শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ মাহমুদ বাশার জানান, এক রোগী থেকে আরেক রোগীকে আড়াল করার পর্দার দাম ধরা হয়েছে ৩৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। বাজার মূল্যের সাথে কোনোভাবেই এটি সঠিক মূল্য নির্ধারণ বলা যাবে না। তিনি আরও বলেন, যারা দায়িত্বশীল ব্যক্তি ছিলেন তারা ঘটনায় সম্পৃক্ত। তাহলে তাদের বিরুদ্ধে শুধু প্রশাসনিক নয়, আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। তবে সেটা দুদক তদন্ত সাপেক্ষে নির্ধারণ করবে। পর্দা কেনার বিষয়ে জানতে চাইলে মেসার্স অনিক ট্রেডাসের রিট পিটিশনার ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল কথা বলতে রাজি হননি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: