আমি আর ট্যাক্স দিবনা, আমার টাকার হিসাব দেন !

প্রকাশিত: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০১:১৪ এএম
সাইফ: স্বাধীনতা লাভের ৪৭ বছর পর স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) শ্রেণি থেকে বের হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘ বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যোগ্য বলে স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলাদেশকে কেউ আর ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলতে পারবে না। বিষয়টিকে স্বাধীনতা পরবর্তী অন্যতম অর্জন এবং সম্মাননা বলে অভিহিত করেছেন সুধীসমাজ। এর বাইরে, চলতি বছরে আরেকটি উল্লেখযোগ্য অর্জন- স্বপ্ন থেকে বাস্তবে পদ্মা সেতু। বিশ্বব্যাংক যখন এই প্রকল্প থেকে চলে যায়, তখন পদ্মা সেতু প্রকল্প অনিশ্চয়তার মেঘে ঢাকা পড়ে। অনেকেই ভেবেছিল, এই সেতু আর হবে না। কিন্তু সেই সেতুতে বসেছে স্প্যান, মূল সেতু এখন দৃশ্যমান। এর বাইরে উল্লেখযোগ্য জাতীয় অর্জনের মধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ, ঐতিহ্যের মসলিন ফেরানোর উদ্যোগে সফলতা, সফলভাবে দেশে ফোরজি চালু, পাটের পর ধইঞ্চা, ইলিশ এবং ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জীবনরহস্য উন্মোচন, দেশের ল্যাপটপ তৈরির কারখানা চালু প্রভৃতি। মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি অর্জন চলতি বছরের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও মহান স্বাধীনতার মাসে জাতিসংঘের উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পায় বাংলাদেশ। সম্প্রতি প্রকাশ পাওয়া বিভিন্ন বড় আকারের দুর্নীতি খবর দেশের সাধারন মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বালিশ কাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার আলোচনায় বই কাণ্ড। যেখানে রূপপুরে বালিশ কিনতে খরচ দেখানো হয়েছিল ৫ হাজার ৯৫৭ টাকা। আর এবার সেখানে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকার বই কিনতে খরচ দেখানো হয়েছে ৮৫ হাজার ৫০০ টাকা।আলোচিত রূপপুর বালিশকাণ্ডকে হার মানিয়ে এবার বিস্ময়কর দুর্নীতির নতুন নজির গড়েছে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ (ফেমিক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের জন্য কোরিয়া থেকে কেনা হয়েছে সাড়ে ৩৭ লাখ টাকা দামের পর্দা। এত দাম দিয়ে পর্দা কেনা হলেও ব্যবহার নেই বছরের পর বছর। একইভাবে অভাবনীয় দাম দেখিয়ে কেনা বেশিরভাগ যন্ত্রই ফেলে রাখা হয়েছে। ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কেনা এবং আর্থিক অনিয়মের ঘটনায় ২০ আগস্ট হাইকোর্ট দুদককে এ বিষয়ে তদন্ত করে ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং টক শো গুলোতে এ নিয়ে সাধারন মানুষ ও বিশিষ্টজনরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশের একজন ট্যাক্স-ভ্যাট পেইং নাগরিক হিসাবে তারা তাদের ট্যাক্সের টাকার পূর্ণ হিসাব রাখতে চাইছেন। এমন একটা সিস্টেম চান যেখানে তাদের বছরব্যাপী ভ্যাট এবং ট্যাক্সের টাকা কোন কোন খাতে ব্যয় হবে, তা নির্ধারণ করার সম্পূর্ণ ক্ষমতা জনগনের হাতে থাকবে। কোনো মন্ত্রী মিনিস্টারের বেতন, মোবাইল খরচ, বা প্রাডো কেনার খরচ, রাষ্ট্রপতির লন্ডন চেক-আপের খরচ, বাড়তি খরচে নির্মিত কোনো ফ্লাইওভার বা উন্নয়ন প্রজেক্টের সুদের খরচ সাধারণ জনগণ তাদের ট্যাক্সের টাকায় আর দিতে চাইছে না। তারা তাদের ট্যাক্সের টাকায় শুধুমাত্র সরকারি হাসপাতাল, গণপরিবহন এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে খরচের আহবান জানান। এছাড়া ট্যাক্সের টাকা শিক্ষার্থীদের হলের সিট্ এবং খাওয়াদাওয়ার ভর্তুকি বাবদ খরচ দেবার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। মূলত ব্যাপক আকারের দুর্নীতির খবরে ট্যাক্স দেবার প্রতি সাধরন জনগণের মধ্যে অনীহা তৈরি হয়েছে। এবং তারা তাদের এই টাকা কোন খাতে কিভাবে ব্যয় হচ্ছে তার হিসেব চাইছেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: