আবরার ফাহাদ’র মৃত্যু শুধু একটি খুন নয়…

প্রকাশিত: ১১ অক্টোবর ২০১৯, ০৩:৪৫ এএম
আবরার ফাহাদ এর মৃত্যু যেন শুধু একটি খুন নয়। একটি স্বপ্ন, একটি পরিবার, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্যু তথা সমগ্র জাতির হৃদয়ে আঘাত... আবরার ফাহাদ কে জামাত শিবির সন্দেহে কতিপয় ছাত্র নামধারী সন্ত্রাসীরা পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। অথচ জামাত শিবির তো দূরের কথা কোন প্রকারের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা তার বিরুদ্ধে পাওয়া যায় নি। আমার প্রশ্ন হচ্ছে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস কে কেন্দ্র করে তাকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অধিকার তোমাদের কে দিল? আর তার মোবাইল, ল্যাপটপ চেক করার তোমরা কে? সব সরকারের আমলেই দেখেছি ক্ষমতাশীল দলের ছাত্র সংগঠন প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে, প্রত্যেকটা কলেজে প্রভাব বিস্তার করে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদেরকে আতংকগ্রস্ত করে রাখে। যেখানে প্রত্যেক টি ছাত্রছাত্রী সমান সুযোগে সুবিধা পাওয়ার কথা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকার কথা! সেখানে আজ আমরা কি দেখছি। এই অপসংস্কৃতি তো একদিনে তৈরি হয় নি। এর দায় বিশ্ববিদ্যালয় কতৃর্পক্ষ কোন ভাবেই এড়াতে পারে না। আর ভিন্নমত থাকলেই যে তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলতে হবে! এটা কোন ধরনের ছাত্র রাজনীতি। তোমাদেরকে নিশ্চয়ই কোন রাজনৈতিক নেতা নিদের্শ দেয় নি যে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিটিয়ে মেরে ফেল! তাহলে তোমরা কেন দেশের সর্বোচ্ছ বিদ্যাপীঠে পড়াশোনা করতে গিয়ে সহপাঠি, সহযোদ্ধাকে এভাবে নিদর্য়, নির্মম, পাশবিক, ববর্রোচিতভাবে খুন করলে? তোমরা তো মানুষ নও, নর পশুকে ও হার মানালে। তোমরা যেভাবে মেধাবী, ধার্মিক আবরার ফাহাদকে নির্দয়ভাবে মেরে হত্যা করেছো তোমাদেরকে ও যদি এখন এভাবেই পিঠিয়ে হত্যা করা হতো (যদিও আমাদের দেশের আইনেই তা নেয় বা কোন সভ্য দেশেও এমন নেই) তাহলেই আমার মনে হয় এই রকম দুঃসাহস ভবিষ্যতে আর কেউ দেখাতে পারতো না (এমনটা কাম্যও নয়)। আবরার হত্যার সাথে যারা জড়িতের দৃষ্টান্তমৃলক শাস্থি নিশ্চিত করা জরুরী। ছাত্র রাজনীতির এক উজ্জ্বল ইতিহাস ছিলো। ছাত্র রাজনীতি একসময় ছিলো ছাত্র সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম করা আর এখন তা হয়ে গেছে বিভিন্ন অফিস,থানা, কোর্ট কাচারীতে গিয়ে নিজেদের ক্ষমতা জাহির করে দলের নাম বিক্রি করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করা, কিভাবে কত দ্রুত সময়ে কত বড় লোক হওয়া যায়। সেই চিন্তায় এখন ছাত্র সংগঠন গুলো ব্যতিব্যস্ত। বাংলাদেশের ১৯৫২ সালের ভাষা সংগ্রাম থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তি সংগ্রামে প্রত্যেকটি আন্দোলনে প্রথমে ছাত্ররাই ঝাপিয়ে পড়ে ছিল। অথচ আজ আমরা সময়ের বিবর্তনে দেখতে পাচ্ছি ভিন্ন চিত্র। যা আমাদেরকে খুবই ব্যথিত করে। আজ সময় এসেছে ছাত্র রাজনীতি নিয়ে নতুন করে চিন্তা ভাবনা করার। লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতির সংস্কার প্রয়োজন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা, দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিশ্চয়ই ছাত্র রাজনীতির বিষয়ে একটি বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশা করি। ইতোমধ্যে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কে নির্দেশ দিয়েছেন দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হলে তল্লাশি করার জন্য। আবরার হত্যার সুষ্ঠু বিচার অবশ্যই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিশ্চিত করবেন। সে যেই হোক, যে দলেরই হোক। অপরাধী অপরাধীই। তার আর কোন পরিচয় আমরা দেখতে চাই না। আবরার হত্যার সাথে যারা জড়িত তাদের সবাইকে অতি দ্রুততম সময়ে দ্রত বিচার ট্রাইবুনালের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমৃলক শাস্থি তথা ফাঁসি কাযর্কর করা। লেখক: রাজীব আশরাফ, সরকারি চাকুরীজীবী।

(খোলা কলামে প্রকাশিত সব লেখা একান্তই লেখকের নিজস্ব মতামত। এর সাথে পত্রিকার কোন সম্পর্ক নেই)

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: