গতকাল (শুক্রবার) দুপুর ২ টায় এইড ফর মেন ফাউন্ডেশনের ব্যানারে আয়োজন করা হয় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পুরুষাঙ্গ কর্তনকারী শিলা ও কুলসুমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচী। মানববন্ধনে শিলা ও কুলসুমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে নানা রকমের ব্যানার দেখা যায়। যার একটির মধ্যে লেখা ছিল, ‘লিঙ্গ কর্তন হাসির নয়, পুরুষেরও কষ্ট হয় ’।
মানববন্ধন এ বক্তারা বলেন, আপনারা অবগত আছেন গত ২৯ জানুয়ারি ২০২০ ঝিনাইদহের মহেশপুরে সোহাগ হোসেন (২৩) নামের এক যুবকের পুরুষাঙ্গ কেটে দিয়েছে তার স্ত্রী শারমিন আক্তার শিলা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। ঐ দিন বুধবার দুপুরের দিকে মহেশপুর উপজেলার জাগুসা গ্রামে সোহাগের শ্বশুর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। অপরদিকে মাদারীপুর সদর উপজেলায় এক নারীর বিরুদ্ধে স্বামীর গোপনাঙ্গ কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
রবিবার (১ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় দিকে উপজেলার পাঁচখেলা ইউনিয়নের মহিষেরচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। দুই বছর আগে মহিষেরচর গ্রামের ইউসুফ সরদারের মেয়ে কুনসুম আক্তারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক থাকায় বিয়ে হয় ফরিদপুরের জমির উদ্দিনের ছেলে মো. রায়হানের। বিয়ের কিছুদিন পরে রায়হান জানতে পারেন, অন্য একজনের সঙ্গে তার স্ত্রী কুনসুমের পরকীয়ার সম্পর্ক আছে।
বিষয়টি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়। পরে শনিবার (১ফেব্রুয়ারি) ফরিদপুর থেকে রায়হানকে শ্বশুরবাড়ি ডেকে নিয়ে যান কুনসুম। রাতে দু’জন একসঙ্গে ঘুমাতেও যান। রাত সাড়ে ৩টার দিকে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় রায়হানের গোপনাঙ্গের বেশিরভাগ অংশ কেটে দেন কুনসুম। তাকে সঙ্গে সঙ্গে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রায়হানকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। উক্ত সভার সভাপতিত্ব করেন এইড ফর মেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. আবদুর রাজ্জাক খাঁন। এ সময় তিনি বলেন, পুরুষাঙ্গ কর্তনকারী শারমিন আক্তার শীলা ও কুলসুম আক্তারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও পুরুষের প্রতি যৌন সহিংসতার প্রতিরোধে কঠোর আইনের দাবি জানাচ্ছি।
সভায় এইড ফর মেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নাদিম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে উদ্বেগজনক হারে নারী কর্তৃক পুরুষাঙ্গ কর্তনের খবর পাওয়া যাচ্ছে। যা সত্যি উদ্বেগের বিষয় কিন্তু পুরুষের প্রতি এই ধরনের যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে তেমন কোনো প্রতিবাদ সমাজে দেখা যায় না। বরং অনেকেই এই সমস্ত বিষয়কে হাসি ঠাট্টা করে যেন এটা কোনো সমস্যাই নয়। অথচ লিঙ্গ কর্তন, এসিড নিক্ষেপ, ধর্ষণের মতোই একটি মারাত্মক যৌন সহিংসতা তা তার চেয়েও মারাত্মক। কিন্তু এ ব্যাপারে সমাজে তেমন কোনো প্রতিবাদ নেই নেই আইনের কঠোর প্রয়োগ। ফলে প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে পুরুষের প্রতি এই ধরনের যৌন সহিংসতা। তাই এখনই এ বিষয়ে কঠিন আইন এবং আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত না করা গেলে এই সমস্যা ভয়াবহ রূপ ধারন করবে।
পাঠকের মন্তব্য: