শৈশবে নিলেও প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে গেলে আমরা যেসব ভ্যাকসিন নেই না

প্রকাশিত: ২৬ মে ২০২০, ০৮:২৮ পিএম
শৈশব থেকে কৈশোরে নিরাপত্তার জন্য আমরা নিজেদের সন্তানদের কিছু ভ্যাকসিন দিলেও প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে গেলে সেভাবে কোনো ভ্যাকসিন বা টিকা দেইনা। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক হলেও অনেক সময় ভ্যাকসিন দেয়া দরকার। একজন ব্যক্তির ইমিউন সিস্টেমের ওপরে অ্যাডাল্ট ভ্যাকসিনেশন নির্ভর করে। কিডনি, লিভার, অ্যাজ়মা, ডায়াবিটিস এবং এইচআইভি; এর কোনোটির একটি সমস্যায় ভুগল কিছু ভ্যাকসিন নিয়ে রাখার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। ভ্যাক্সিনগুলো হলো- ১. ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন: অনেকেই ইনফ্লুয়েঞ্জায় ভুগে থাকেন। এই ভ্যাকসিন নেয়া থাকলে রোগ হওয়ার আশঙ্কা কম। আর হলেও তার প্রকোপ জোরালো হবে না। ভ্যাকসিনটি বছরে একবার করে নিতে হয়। ২. এমএমআর ভ্যাকসিন: মিজ়ল, মাম্পস এবং রুবেলা; এই তিনটি রোগ প্রতিরোধের কারণে এমএমআর ভ্যাকসিন দেয়া হয়। যাদের বয়স ১৮-৪০ বছরের মধ্যে তাদের প্রত্যেকের এই ভ্যাকসিন নেয়া দরকার। এটি সাধারণত একবার নিলেই চলে। ৩. টিটেনাস, ডিপথেরিয়া এবং হোপিং কাফের জন্য: টিডিএপি ভ্যাকসিন বলা হয় এটিকে। ছোটবেলায় না নেয়া থাকলে প্রাপ্তবয়স্কেরা এটি নিতে পারেন। সাধারণত চিকিৎসকেরা ১০ বছর অন্তর একবার করে এই ভ্যাকসিন নেয়ার পরামর্শ দেন। কিছু দেশ আছে যারা হোপিং কাফের ভ্যাকসিন নেয়া না থাকলে ভিসা দেয় না। ৪. সার্ভিকাল ক্যানসার রোধে: এইচপিভি (হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস) মেয়েদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি ভ্যাকসিন। সার্ভিকাল ক্যানসার রোধে এই ভ্যাকসিন নিতে হয়। সরকারি নিয়মে ১২-১৩ বছর বয়স থেকেই এটি দেওয়া যায়। ১৮ বছর (মেয়েদের বিয়ের বয়সসীমা) পর্যন্ত নেওয়া যায়। যৌন সম্পর্ক তৈরি হওয়ার আগে পর্যন্তই মেয়েরা এটি নিতে পারে। ৫. হেপাটাইটিস বি: ১০ থেকে ১৫ বছর আগে এই ভ্যাকসিন ছিল না। খুব জরুরি এই ভ্যাকসিন সকলেরই নিয়ে রাখা উচিত। ১৮ থেকে ৭০ বা তার বেশি বয়সের ব্যক্তিই এটি নিতে পারেন। একটি কোর্সের তিন ধাপে নিতে হয় হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন। বয়স্ক মানুষ বা যাঁদের কিডনি, লিভার, অ্যাজ়মা, ডায়াবিটিস এবং এইচআইভির মধ্যে যে কোনও একটি রোগ রয়েছে তাদের এটি জরুরি। তা ছাড়া চিকিৎসক, নার্স বা মেডিক্যাল ল্যাবে কর্মরত ব্যক্তিদের এই ভ্যাকসিন নেওয়া আবশ্যিক। ৬. নিউমোনিয়া রোধে: ডাক্তারি পরিভাষায় এই ভ্যাকসিনের নাম নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন। এটি নেয়া না থাকলে যে কোনও বয়সেই নেয়া যায়। বয়স্ক বা যাদের ইমিউনিটি কম, তাদের জন্য চিকিৎসকেরা বিশেষ করে পরামর্শ দেন এই ভ্যাকসিন নেয়ার। ৭. হিমোফাইলাস ভ্যাকসিন: যাদের স্‌প্লিন (প্লীহা) কেটে বাদ দিতে হয় তাদের এইচআইবি (হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা টাইপ বি) ভ্যাকসিনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। সাধারণত থ্যালাসেমিয়া রোগীর জন্য এই ভ্যাকসিন আবশ্যিক। ৮. মেনিনজাইটিস প্রতিরোধে: প্রাপ্তবয়স্কদের মেনিনগোকক্কাল ভ্যাকসিন খুব জরুরি না হলেও কিডনি, লিভার, অ্যাজ়মা, ডায়াবিটিস এবং এইচআইভির মধ্যে একটি থাকলে চিকিৎসকেরা এই ভ্যাকসিন নিয়ে রাখার পরামর্শ দেন। ৯. চিকেনপক্স প্রতিরোধে: ভ্যারিসেলা নামক একটি ভ্যাকসিন দেয়া হয় চিকেনপক্সের জন্য। পুরোপুরি প্রতিরোধ না করা গেলেও, প্রকোপ কিছুটা কমাতে সাহায্য করে। ১০. বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে: কিছু ভ্যাকসিন রয়েছে, যা আমাদের দেশের জন্য প্রযোজ্য নয়, কিন্তু বিদেশে যেতে হলে প্রয়োজন। আফ্রিকার দেশগুলিতে যাওয়ার আগে ইয়েলো ফিভারের জন্য ভ্যাকসিন নিতে হয়। যারা জঙ্গলে কাজ করেন তাদের র‌্যাবিস ভ্যাকসিন নেওয়া বাধ্যতামূলক। কিছু ক্ষেত্রে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের জন্যও ভ্যাকসিন নিতে হয়।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: