এবারের ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চামড়া ক্রয়-বিক্রয় নিয়ে কোন প্রকার ভোগান্তি না হয় সে লক্ষ্যে খেলাপি ঋণ সুবিধা দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কোরবানির পশুর চামড়া ক্রয়-বিক্রয় ও সংরক্ষণ কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে প্রকৃত চামড়া ব্যবসায়ীদের কাছে অর্থপ্রবাহ সচল রাখার উদ্দেশ্যে এ খাতে খেলাপি ঋণ পুনঃ তফসিলের বিশেষ সুযোগ দিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ২ শতাংশ ডাউনপেমেন্ট এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ আট বছরের জন্য ঋণ পুনঃ তফসিল করতে পারবেন চামড়া ব্যবসায়ীরা। সচল এবং প্রকৃত কারণে ক্ষতিগ্রস্তরাই এ সুবিধা পাবেন। এ ছাড়া কাঁচা চামড়া ক্রয়ে নতুন ঋণের আবেদনও করতে পারবেন সুবিধাভোগীরা। রবিবার (৫ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এসংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হয়েছে। ব্যাংক কম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৪৫ ধারায় ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করেছে কেন্দ্রীয় বাংক, যা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, বিভিন্ন কারণে চামড়া খাতে বিদ্যমান ঋণ নিয়মিতভাবে পরিশোধিত না হওয়ায় কিছু কিছু ঋণ বিরূপ মানে শ্রেণীকৃত হয়ে পড়ছে। ফলে এ খাতে স্বাভাবিক ঋণপ্রবাহ বজায় রাখা অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে খেলাপি ঋণ পুনঃ তফসিলের বিশেষ সুবিধা দিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
সার্কুলার অনুযায়ী, ২০২০ সালের ৩০ জুনভিত্তিক ঋণ স্থিতির ন্যূনতম ২ শতাংশ ডাউনপেমেন্ট নগদে আদায় সাপেক্ষে পুনঃ তফসিল করার বিষয়ে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ব্যাংকগুলো নিজেরাই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে ইতিপূর্বে সংশ্লিষ্ট ঋণ হিসাবে আদায়কৃত কিস্তি ডাউনপেমেন্ট হিসেবে গণ্য হবে না। গ্রাহকের নিয়ন্ত্রণবহিভূত কারণে ঋণ হিসাব শ্রেণীকৃত হয়ে থাকলে এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সচল বা চলমান থাকলে এ সাকুর্লারের আওতায় পুনঃ তফসিল সুবিধা প্রদান করা যাবে। কেস টু কেইস ভিত্তিতে এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ তলবি ও চলমান ঋণ সর্বোচ্চ ছয় বছর মেয়াদে এবং মেয়াদি ঋণ সর্বোচ্চ আট বছর মেয়াদে পুনঃ তফসিল করা যাবে।
এতে আরো বলা হয়, কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়া ক্রয়ের উদ্দেশ্যে নতুন ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে কম্প্রোমাইজড অ্যামাউন্ট গ্রহণের শর্ত শিথিল করা যাবে। আগামী ৩০ জুলাই মধ্যে নিজ নিজ ব্যাংকের কাছে গ্রাহকদের ঋণ পুনঃ তফসিলের আবেদন করতে হবে।
সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়, চামড়াশিল্প দেশীয় কাঁচামালভিত্তিক রপ্তানিমুখী শিল্প। জাতীয় প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান, বৈদেশিক মুদ্রা আয় এবং মূল্য সংযোজনের নিরিখে এটি একটি সম্ভাবনাময় খাত। চামড়াশিল্পে সারা বছর ধরে ব্যবহৃত কাঁচামালের প্রায় অর্ধেক জোগান আসে প্রতিবছর ঈদুল আজহা উৎসবে কোরবানির পশুর চামড়া থেকে। এ সময় কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের কাছে প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান নিশ্চিত করা সম্ভব হলে একদিকে মূল্যবান কাঁচামাল সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে এবং কোরবানীকৃত পশুর চামড়া বিক্রির মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী আর্থিকভাবে উপকৃত হবে।
পাঠকের মন্তব্য: