‘দৈহিক সম্পর্কের পর মীম ও তার বোনকে হত্যা করেছে রিফাত’

প্রকাশিত: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৬:৫১ পিএম
রংপুর নগরীর মধ্যগনেশপুর এলাকার বাসা থেকে স্কুলছাত্রী দুই বোনের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় রংপুর কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে তাদের পরিকল্পিতভাবে হত্যার তথ্য পায়। এ ঘটনায় শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে পুলিশ মাহফুজুর রহমান রিফাত নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাহফুজ দুই বোনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গতকাল রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে নগরীর সেন্টাল রোডস্থ ডিবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) মো. আবু মারুফ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, মো. মাহফুজুর রহমান রিফাতের সঙ্গে সুমাইয়া আক্তার মীমের দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সস্প্রতি সময়ে মীমের সঙ্গে তাদের মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। গেল বৃহস্পতিবার রাতে মীমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য সুকৌশলে মীমের চাচার বাড়িতে প্রবেশ করে রিফাত। এ সময় মীমের চাচাতো বোন জান্নাতুল মাওয়া অপর রুমে অবস্থান করে। মীমের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর তার সঙ্গে দৈহিক মেলামেশা করে রিফাত। এরপর সে মীমকে মোবাইল ফোনের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে অন্য বন্ধুর সঙ্গে কেন যোগাযোগ করে সেই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মীমের সঙ্গে তার মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। তখন মীমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যা ও ধর্ষণের বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে মীমের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে রাখে এবং বিছানার ওপর থাকা সিলিং ফ্যানের দুইটি পাখা নিচের দিকে বাঁকা করে রাখে। হত্যা করার পর সে সুকৌশলে পালানোর চেষ্টাকালে অন্য রুমে থাকা মীমের চাচাত বোন জান্নাতুল মাওয়া তাকে বোন কোথায় জানতে চায়। জান্নাতুল মাওয়া তার আপা মীমকে ডাকাডাকি করলে কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে রুমে ঢোকার চেষ্টা করে। এ সময় রিফাত মাওয়াকেও ঘরে ঢুকতে না দিয়ে তাকেও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে রুমের মেঝেতে ফেলে রাখে। জান্নাতুল মাওয়াকে হত্যার বিষয়টিও ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশে হত্যার পর তার গলায় আয়নার কাঁচ দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পর সে গোপনে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে নিজ বাড়িতে না গিয়ে পুনরায় লাহিড়ীহাটে তার বন্ধু আরিফুল ইসলামের বাড়িতে যায়। গ্রেপ্তারকৃত রিফাতকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে অপরাধে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, বিভিন্ন ধরনের সীমকার্ড এবং গুরুত্বপূর্ণ আলামত জব্দ করা হয়েছে। এর আগে গতকাল রোববার বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. দেলোয়ার হোসেনের কাছে রিফাত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালতে। সংবাদ সম্মেলন উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) মো. শহিদুল্লাহ কাওছার, উপ-পুলিশ কমিশনার উত্তম কুমার পাঠকসহ (মিডিয়া) পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: