ভিপি নুরসহ যে ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশিত: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১০:৩৬ পিএম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। রাজধানীর লালবাগ থানায় মামলাটি দায়ের হয়। এই মামলায় ৬ জন এজাহারভুক্তদের মধ্যে নুর ৩ নম্বর আসামি। লালবাগ থানায় ২০ সেপ্টেম্বর যে মামলা দায়ের করা হয়েছে সেটির এজহারে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুলহক নুরের বিরুদ্ধে 'ধর্ষণের' অভিযোগ করেননি অভিযোগকারী নারী। বরং হাসান আল মামুন নামে কোটা সংস্কার আন্দোলনের এক নেতার বিরুদ্ধে 'বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে (মামুনের বাসায়) ধর্ষণ' করার অভিযোগ করেছেন। মামলায় মামুন ছাড়াও নুরসহ আরও ৫ জনকে আসামি করেছেন অভিযোগকারী নারী। এজহারে নুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে ধর্ষণের ঘটনার বিচার চাওয়ার পরেও বিচার না করে ঘটনা ধামাচাপা দিতে ভিক্টিম নারীকে নানাভাবে চাপ দেয়ার। এজহারে লেখা হয়েছে-- "উপায়ন্তর না দেখে এই বিষয়ে ২০/৬/২০২০ তারিখে ৩ নং বিবাদী নুরুল হক নুরকে মৌখিকভাবে জানালে সে বলে অভিযুক্ত ব্যক্তি (মামুন) আমার পরিষদের, আমার সহযোদ্ধা। তার সাথে বসে একটি সুব্যবস্থা করে দিব। এরপর তিনি ২৪/০৬/২০২০ তারিখে মিমাংসার আশ্বাস দিয়ে আমার সাথে নীলক্ষেতে দেখা করতে আসেন। কিন্তু তখন তিনি মীমাংসার আশ্বাস এড়িয়ে আমাকে এই বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেন। আর আমি যদি বাড়াবাড়ি করি তাহলে তাদের ভক্তদের দিয়ে আমার নামে উলটাপালটা পোস্ট করাবে। এবং আমাকে পতিতা বলে তারা প্রচার করবে তাদের ছাত্র অধিকার পরিষদের ১.২ মিলিয়ন মেম্বারসম্পন্ন গ্রুপে। তিনি আরো বলেন, তার একটি লাইভে আমার সব সম্মান চলে যাবে। ইতিমধ্যে মামলার ৪ নং আসামী সাইফুল ইসলাম আমার নামে কুৎসা রটাতে ৫ও ৬ নং বিবাদীকে লাগিয়ে দেয় চ্যাটগ্রুপে(মেসেঞ্জারে) আমার চরিত্র নিয়ে আমাকে বিভিন্নভাবে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করার মত সম্মিলিতভাবে হীনকাজ করে। ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতৃস্থানীয় প্রায় সকল নেতাকর্মী এসব ঘটনা সম্পর্কে জানেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন বিষয়টিকে সুষ্ঠ সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করতে চাইলেও বিবাদীরা তাদেরকে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রকারী বলে আখ্যা দেয় বলে আমি জানতে পারি।" পুলিশের ডিসি জানান, এই মামলার অন্যতম আসামি ভিপি নুর। এছাড়াও মামলায় এজাহারভুক্ত আরও ৫ জন আসামি রয়েছেন। মামলাটি দায়ের হয়েছে গতকাল সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে। পুলিশের লালবাগ জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) কে এম রায় নিয়তি জানান, এই ধর্ষণ মামলাটি স্পর্ষকাতর। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে, পাশাপশি মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের অন্যতম যুগ্ম-আহ্বায়ক হিসেবে তিনি আলোচনায় আসেন। এরপর ২০১৯ সালের ১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ১১ হাজার ৬২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। নুরুল হক নুরের গ্রামের বাড়ি বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার চর বিশ্বাস ইউনিয়নে। তার বাবা ইদ্রিস হাওলাদার একজন ব্যবসায়ী ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য। মায়ের নাম নিলুফা বেগম। তিন ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে নুর দ্বিতীয়। ঢাকার উত্তরা হাই স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ২০১২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ২০১৩–১৪ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: