হাজী সেলিমের দখলকৃত হলসহ সকল হল দখলমুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন

প্রকাশিত: ৩০ অক্টোবর ২০২০, ০১:৪২ এএম
সংসদ সদস্য হাজী সেলিম কর্তৃক দখলকৃত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিব্বত হল সহ সকল হল দখলমুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, বারবার হল উদ্ধারের জন্য কমিটি গঠনের মাধ্যমে কালক্ষেপণ করছে প্রশাসন। আগামী এক যুগের মধ্যে নতুন ক্যাম্পাসে হল পাওয়া আর রূপকথার গল্প দুটোই সমার্থক। অথচ হল তো দূরের কথা পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্লাসরুমই নেই আমাদের। প্রশাসনের যদি সদিচ্ছা এবং শিক্ষার্থীবান্ধব হয় আমরা মনে করি দ্রুতই হল উদ্ধারে পদক্ষেপ নিবে। হাজী সেলিমের লাঠিয়াল বাহিনীকে যে জবি প্রশাসন ভয় পায়না তার প্রমাণ হবে উদ্ধারের মাধ্যমে এই আশায় আছি। এ সময় "তিব্বত হল কখনোই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছিলনা" উপাচার্যের এমন মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানান মানববন্ধনে অংশ গ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা। রাজধানীর পুরান ঢাকায় বুড়িগঙ্গার তীরে পাটুয়াটুলীর ওয়াইজঘাট এলাকার ৮ ও ৯ নম্বর জিএল পার্থ লেনে ৮ দশমিক ৮৮৯ কাঠা জায়গায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (তৎকালীন জগন্নাথ কলেজ) ‘তিব্বত হল’। ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অর্পিত সম্পত্তি শাখার (স্মারক জেপ্রঢা/অর্পিত/১১৮৩) তথ্য অনুযায়ী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেদখলকৃত ১২টি হলের মধ্যে ‘তিব্বত হল’ একটি। হলটি বর্তমানে ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের দখলে রয়েছে। ২০০১ সালে হাজী সেলিম হলটির অবকাঠামো পরিবর্তন করে তার স্ত্রীর নামে ‘গুলশান আরা সিটি মার্কেট’ নামক বহুতল বিপণী বিতান তৈরি করেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (তৎকালীন জগন্নাথ কলেজ) বেদখলকৃত হলসমূহে ১৯৮৫ পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা বসবাস করে আসছিলেন। ওই বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি আরমানিটোলায় স্থানীয়দের সঙ্গে শহীদ আব্দুর রহমান হলের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের পর তিনটি বাদে বাকি হলগুলো বন্ধ করে দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে পাটুয়াটুলীর ওয়াইজঘাট ৮ ও ৯ নম্বর জিএল পার্থ লেনের ‘তিব্বত হল’ একটি। শিক্ষার্থীরা নব্বইয়ের দশকে একবার হলটি ফেরত নিতে গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এক পর্যায়ে স্থানীয়রা ওই ভবনের দোতলায় আগুন দিলে তখনকার অধ্যক্ষ ড. হাবিবুর রহমান শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনেন। পার্থ লেনের বিভিন্ন স্থানে ২০১১ সাল পর্যন্ত ‘তিব্বত হল’ লেখা সাইনবোর্ড দেখা গেলেও শিক্ষার্থীরা আর সেখানে ফিরতে পারেননি। সর্বশেষ ২০১৪ সালে জগন্নাথের শিক্ষার্থীরা হলটি ‘ঘেরাওয়ে’ গেলে হাজী সেলিমের সমর্থকরা হামলা করে এবং পুলিশ লাঠিপেটা ও গুলি করে। ঐদিন বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি বিভাগের তৎকালীন চেয়ারম্যান নাসিরউদ্দীন গুলিবিদ্ধসহ তিন শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এসময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের হল উদ্ধার আন্দোলনে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।  

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: