ভিক্ষার জন্য সন্তানসহ নিজের মাথা ফাটালেন এই নারী!

প্রকাশিত: ০১ ডিসেম্বর ২০২০, ০৩:২৫ পিএম
ভিক্ষার জন্য অভিনব পদ্ধতি বেছে নিয়েছেন এক নারী। ফেনী শহরের মসজিদ, হাসপাতাল, রেলওয়ে স্টেশন ও বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন এলাকায় এ নারীকে ভিক্ষা করতে দেখা যায়। নিজের এবং কোলের সন্তানের মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়েই ভিক্ষা করছেন ওই নারী। রবিবার (২৯ নভেম্বর) সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট ভাইরাল হয়। এরপরই বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। রাত সাড়ে ৮টার দিকে শহরের মিজান রোড়স্থ তমিজিয়া মসজিদের সামনে ভিক্ষা করতে দেখা যায় ওই নারীকে। সেখানে গিয়ে দেখা যায় বাচ্চা দুটিসহ মহিলাটি মানুষের কাছে টাকা ভিক্ষা চাইছে। তখন ওই নারীর অভিনব কায়দায় ভিক্ষাবৃত্তির ব্যাপারে তথ্য দেয় স্থানীয়রা। স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহ-সভাপতি জুলহাস তালুকদার জানান, ২০১৮ সালের শবে বরাতের রাতে শহরে অজ্ঞাত মহিলার খবরে ছুটে যায় আমার সংগঠনের সদস্যরা। সেখান থেকে তাকে ও বাচ্চাদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেসময় তারা বাচ্চার জামা-কাপড় পরিবর্তন করার চেষ্টা করলে, ওই নারীর চিৎকার চেঁচামেচি করে তার স্বামীর কাছে যেতে চান। এরপর বাচ্চাদের নিয়ে ওই নারী হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান। এর দশ দিন পর আবার ফেনী শহর থেকে বাচ্চা দুটিসহ ওই নারীকে এনে আবার হাসপাতালে ভর্তি হলে এক ঘন্টা পর তিনি চলে যান। তখন ফেনী সদর হাসপাতালের চিকিৎসক বাচ্চাদের দেখে জানান, কোনো মাদকদ্রব্য অথবা ওষুধের মাধ্যমে শিশু দুটিকে ঘুমিয়ে রাখা হয় এবং এই সুযোগ নিয়ে ভিক্ষা করা হয়। এর কিছুদিন পর ৯৯৯ থেকে পুলিশের কাছে কল আসে এই শিশুদের নিয়ে, পুলিশের কাজে সহায়তা করতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সহায় শহরের মুক্ত বাজার এলাকা থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে বাচ্চাদের মাথার ব্যান্ডেজ খুলে দেখা যায় মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য মাথায় কোনো ক্ষত ছাড়াই ব্যান্ডেজ লাগিয়ে রাখা হয়েছে। গত মাসের ৩১ তারিখ রাত ২টায় মহিপাল ফ্লাইওভার এর নিচে এক মহিলা ইট দিয়ে বাচ্চা এবং নিজের মাথায় আঘাত করছেন বলে খবর পেয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর ও পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি মঞ্জিলা মিমিকে অবগত করলে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, এই নারী প্রতারনার আশ্রয় নিয়েছেন। তখন বাচ্চাদের হাসপাতালে নেয়া হলে সকালে হাসপাতালের কাউকে না জানিয়ে তিনি গোপনে পালিয়ে যান। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক দুলাল তালুকদার বলেন, তাকে যখনই বলা হয় তার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে এবং তার স্বামীর কাছে নিয়ে যাওয়া হবে, তখনই কৌশলে তিনি সটকে পড়েন। জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারী জানান তার নাম রুমি, স্বামীর নাম সুজন, বাড়ি রংপুরে। আবার কখনো বলেন, তার বাড়ি কুমিল্লার চান্দিনায়। তিনি আরো জানান, সঙ্গে থাকা শিশু সাকিবের বয়স ৩ বছর, সুমাইয়ার বয়স ৯ মাস। তিনি সন্তানদের নিয়ে বর্তমানে শহরের সহদেবপুরের একটি বস্তিতে থাকেন। যদিও প্রতারণার বিষয়টি ওই নারী অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, দূর্ঘটনায় তার সন্তানদের মাথা ফেটেছে। চিকিৎসা না করিয়ে হাসপাতাল থেকে সটকে পড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো জবাব দেননি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: