স্বপ্ন বাস্তবায়নে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা চলছে মেট্রোরেলের কাজ

প্রকাশিত: ০৪ ডিসেম্বর ২০২০, ০৭:৩৯ পিএম
মেট্রোরেল একসময় দেশবাসির কাছে স্বপ্নের মতো মনে হলেও ধীরে-ধীরে তা বাস্তবায়ন হতে চলেছে। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল নির্মাণে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা কাজ করে যাচ্ছে শ্রমিক-কর্মকর্তারা। এখন পর্যন্ত ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৫৩ ভাগ। আর উত্তরা থেকে আগারগাঁ অংশের অগ্রগতি ৭৭ ভাগ এবং আগারগাঁ থেকে মতিঝিল অংশের কাজ শেষ হয়েছে ৪৭ ভাগ। মেট্রোরেলের উত্তরা থেকে আগারগাঁও ১১ দশমিক ২৯ কিলোমিটার অংশ পর্যন্ত ২০২১ সাল ও আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার ২০২৩ সালের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য ছিল। কিন্তু এখন নতুন লক্ষ্য অনুযায়ী ২০২১ সালের মধ্যেই পুরো মেট্রোরেল দৃশ্যমান হতে পারে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক। তিনি বলেন, আগামী বছরের মধ্যে মেট্রোরেলের কাজ শেষ করতে আমরা রাত দিন ২৪ ঘণ্টা কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিশেষ করে রাতের বেলায় কাজ এগিয়ে নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরও বলেন, দিনের বেলায়ও যথারীতি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে কাজ করছেন শ্রমিক-কর্মকর্তারা। মেট্রোরেল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৬ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা দিচ্ছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)। বাকি ৫ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা সরকারের তহবিল থেকে সরবরাহ করা হবে। আটটি প্যাকেজে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে এ প্রকল্পটি। প্রকল্পটির তথ্যমতে, উত্তরা-মতিঝিল মেট্রোরেল প্রকল্পের ১নং প্যাকেজের (সিপি-০১) আওতায় রয়েছে উত্তরায় ডিপোর ভূমি উন্নয়ন। ২০১৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বরে এ প্যাকেজের চুক্তি সই করা হয়। ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে এ প্যাকেজের কাজ সম্পন্ন হয়। আর ২নং প্যাকেজের (সিপি-০২) আওতায় ডিপোর পূর্ত কাজ চলছে। ২০১৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর এ প্যাকেজের চুক্তি সই হয়। প্রকল্পটির ৩ ও ৪নং (সিপি-০৩ ও ০৪) প্যাকেজের আওতায় উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট (উড়ালপথ) ও ৯টি স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। ৫নং প্যাকেজের (সিপি-০৫) আওতায় আগারগাঁও থেকে কারওয়ান বাজার পর্যন্ত প্রায় ৩ দশমিক ১৯৫ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট এবং বিজয় সরণি, ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজার এলাকায় তিনটি স্টেশন নির্মাণ করা হবে। এ অংশের কাজ যৌথভাবে করছে জাপানের টেকেন করপোরেশন, অ্যাবে নিক্কো ও বাংলাদেশের আবদুল মোনেম লিমিটেড। মেট্রোরেলের ৬নং প্যাকেজের (সিপি-০৬) আওতায় কারওয়ান বাজার থেকে মতিঝিল পর্যন্ত প্রায় ৪ দশমিক ৯২ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট নির্মাণ করা হবে। এছাড়া শাহবাগ, টিএসসি, প্রেস ক্লাব ও মতিঝিলে চারটি মেট্রো স্টেশনও নির্মাণ করা হবে। এ অংশের কাজ যৌথভাবে করছে জাপানের সুমিতোমা মিতসুই কনস্ট্রাকশন কোম্পানি ও ইটাল-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি। ৭নং প্যাকেজের আওতায় মেট্রোরেলের স্টেশনগুলো ওঠানামার জন্য চলন্ত সিঁড়ি ও লিফট, প্রায় ২০ কিলোমিটার রেলওয়ে ট্র্যাক, স্বয়ংক্রিয় ভাড়া আদায় ব্যবস্থাপনা, ১৩২ কেভি বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন ও ট্রেনে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা, টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম, প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর ইত্যাদি স্থাপন করা হবে। সর্বশেষ ৮নং প্যাকেজের (সিপি-০৮) আওতায় মেট্রোরেলের জন্য রোলিং স্টক (ইঞ্জিন-কোচ) ও ডিপো ইকুইপমেন্ট সরবরাহ করছে জাপানের কাওয়াসাকি-মিতসুবিশি কনসোর্টিয়াম। এর মধ্যে ২৪ সেট ট্রেন এবং ডিপো ইকুইপমেন্ট ছাড়াও ট্রেন সিমুলেটর, খুচরা যন্ত্রাংশ ও সংশ্লিষ্টদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ২০১৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর এ প্যাকেজের বাস্তব কাজ শুরু হয়।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: