অ্যাপ ব্যবহারে আগ্রহ কমছে বাইক চালকদের

প্রকাশিত: ১০ ডিসেম্বর ২০২০, ০৭:৩৩ পিএম
কুমিল্লার ফারুক হোসেন ঢাকার একটি বেসরকারি ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। এর পরে তিনি জীবিকার তাগিদে চলে যান দেশের বাইরে। কয়েক বছর পরে দেশে ফিরে ঢাকায় অ্যাপভিত্তিক মোটরসাইকেল রাইড সেবার কাজ বেছে নেন। জীবিকার তাগিদে ঢাকায় এসে প্রথমে বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করে মোটরসাইকেলের মাধ্যমে যাত্রী পরিবহন বেশ লাভজনক হিসেবে মনে করেন। এভাবেই বেশ কিছু দিন বাইক চালিয়ে যান তিনি। প্রথমে অ্যাপ ব্যবহার করেই বাইক চালাতেন তিনি। তখন দিনে ১ হাজার থেকে ১২'শ টাকার মতো আয় করতেন। এই আয়ের টাকা দিয়েই চালাতেন সংসার। ফারুক হোসেনের দাবি, প্রথমে অ্যাপ ব্যাবহার করলেও পরবর্তীতে অ্যাপের প্রতি তার অনাগ্রহ বাড়তে থাকে। কারণ দিন দিন বাইকের সংখ্যা বাড়তে থাকলেও যাত্রীর সংখ্যা বাড়েনি। যখন বাইকের সংখ্যা বেড়ে যায় তখন অ্যাপের মাধ্যমে তেমন কলও আসে না। তাই অ্যাপ ছাড়া যাত্রীদের সাথে কন্টাক্ট করে বাইক চালান তিনি। তিনি বলেন, এর পাশাপাশি কোম্পানিদেরকে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ টাকা দিয়ে দিতে হয়। এতে আমাদের কষ্ট কর হয়ে যায়। তাই অ্যাপ ব্যবহারে আমার অনাগ্রহ তৈরি হয়। অ্যাপ কোম্পানিগুলো যদি দশ শতাংশ করে টাকা নিত তাহলে আমাদের সাধ্যের মধ্যে থাকতো। অ্যাপ ব্যবহার না করার এটাও হচ্ছে অন্যতম কারণ। তিনি আরও বলেন, এভাবে কন্টাক্ট এর মাধ্যমে বাইক চালালে আমাদের জন্য যেমন সুবিধা হয়, তেমন আবার অসুবিধাও রয়েছে। সকল যাত্রীতো আর ভালো নয়, অনেক যাত্রী মাদকদ্রব্য সরবরাহ করে। আমার এক যাত্রী চেকপোস্টে মাদকসহ আটক হয়। তখন আমাকেও সমস্যায় পড়তে হয়। আর এমন ঝুঁকি নিয়েও বাইক চালাই। আরেক বাইকার মাহমুদুল হাসান বলেন, করোনার কারণে অনেক মানুষই তাদের চাকরি হারিয়ে এই পেশায় সংযুক্ত হয়েছে। এতে করে মোটরসাইকেলের সংখ্যা বাড়লেও যাত্রীর সংখ্যা বাড়েনি। বাইক বাড়ার কারণে অ্যাপ থেকে খুব কমসংখ্যক কল আসে। তাই আমরা অ্যাপ ছাড়াই কন্টাক্ট এর মাধ্যমেই বাইক চালাচ্ছি। এতে করে আমাদের সুবিধা হয়। তিনি বলেন, অ্যাপ থেকে যখন কল আসে তখন ৮ থেকে ১০ মিনিটের পথ বাইক চালিয়ে গিয়ে যাত্রী আনতে হয়। আর কন্টাক্ট এর মাধ্যমে এই সমস্যাটা হয় না। আবার অ্যাপ কোম্পানিগুলোকে ২৫ শতাংশ টাকা দিয়ে দিতে হয়। বিভিন্ন অ্যাপ মালিকরা যদি এক জায়গায় বসে পরামর্শের ভিত্তিতে ২৫ শতাংশ টাকার পরিবর্তে এর পরিমাণ কিছুটা কমিয়ে আনে তাহলে অ্যাপের মাধ্যমে আমাদের বাইক চালাতে কোন সমস্যা নেই। বাইক চালক শহীদুল চৌধুরী ও সবুজও একই সমস্যার কথা বলেন। তাদেরও অ্যাপের মাধ্যমেই বাইক চালাতে অনাগ্রহ তৈরি হয়েছে। তারাও কন্টাক্ট এর মাধ্যমে যাত্রী সেবার কাজ করেন। এদের মতো আরও অনেকেই এই সমস্যার কথা বলেন। এ বিষয়ে উবার কি পদক্ষেপ নিবে জানতে চাইলে এই প্রতিবেদককে ই-মেইলে তাদেরকে প্রশ্ন পাঠাতে বলেন। ই-মেইল পাঠানোর তিনদিনের মধ্যেও উবার অ্যাপ কোন মন্তব্য করেন নি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: