পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিরাজুল ইসলাম। যিনি নির্বাচিত হয়ে মডেল উপজেলা গড়ে তোলার ঘোষণা ছুড়ে দেন। এমনকি এলাকাবাসী মনে করেন তিনি সফলও হয়েছেন । নিজের কর্ম দক্ষতা এবং বুদ্ধিমক্তা কাজে লাগিয়ে মাত্র এক বছরেই আধুনিক ভান্ডারিয়া রূপ দিতে সক্ষম হয়েছেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া এই চেয়ারম্যান। জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০১৯ এর জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ উপজেলা পদকে ভূষিত ও হয়েছেন।
তিনি উপজেলা পরিষদের নান্দনিক স্থাপত্য ভবন, নয়নাভিরাম অডিটরিয়াম, দৃষ্টি নন্দন প্রবেশ গেট, আধুনিক ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেম, বড় পর্দার স্কিন, ফুল আর ফলের বাগানে সজ্জিত বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমান, তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত তোরন বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
সাথে মালটি কালারের আলোকরশ্মির সাথে ফোয়ারা নতুন পরিষদকে যেন নতুন এক মডেল উপজেলার নান্দনিক রুপ এনে দিয়েছে। তাছাড়া গরীব ও অসহায়দের বিনা মূল্যে চিৎকিসা ও ওষুধ বিতরণ, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ তুলে দেওয়াসহ উপজেলাজুড়ে বালক বালিকাদের মাঝে বিতরণ করেছেন ক্রীড়া সামগ্রী।
তবে দায়িত্ব গ্রহনের পরে তার বড় চ্যালেঞ্চ ছিল উপজেলাকে মাদক মুক্ত করা। সে কারণে যুব সমাজকে মাদক মুক্ত রাখতে মাদক বিরোধী প্রচারনা, লিফলেট বিতরণ, ব্যানার এবং গ্রুপ ভিত্তিক বছর জুড়ে তার মাদক বিরোধী কার্যক্রম জনগণের কাছে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে।
এভাবেই ভান্ডারিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিরাজুল ইসলামের কথাগুলো বলছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা আলি আকবর।
আলী আকবরের কথা থেকে জানা গেছে, শুধুমাত্র উপজেলার উন্নয়নেই নয়, বরং দলীয় কাজেও তিনি পারদর্শিতার প্রমান দিয়েছেন বহুবার। উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে তিনি তৈরী করেন ১৮০ ফুট দৈর্ঘ্যর নৌকা আকৃতির মঞ্চ। পাশে সংযোজন করেন ২৮০ ফুট পদ্মা সেতুর মডেল, রেল লাইন আর রিমোট কন্টোল গাড়ি চলাচলের নমুনা। যা দেখে মানুষ মোহিত হয়ে পড়েন।
ব্যাপক সাজসজ্জার ফলে সম্মেলনস্থল বিহারী পাইলট স্কুল মাঠ নান্দনিক যৌন্দর্যের প্রতিরূপে অবতির্ন হয়। তাছাড়া নির্মান করা সম্মেলনের ওই মঞ্চেই জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে ১০০ ফাউন্ড কেক কেটে মিলাদ ও দোয়া মোনাজাতের আয়োজন করেন উপজেলার প্রবীন এই নেতা।
এদিকে শুরু হয় বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে। করোনা মহামারী ঠেকাতে উপজেলার লোকসমাগম ঘটে এমন ছয়টি স্থানে সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করেন তিনি। বিতরণ করেছেন ৫০ হাজার মাস্ক, ২৫ হাজার হ্যান্ডসেনিটাইজার, ৫ হাজার পিপিই ও হ্যান্ডগ্লোবস।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দান করেন সমান পরিমান উপকরন ও নগদ ১০ লক্ষ টাকা। সাথে ২৪ ঘন্টা ফ্রি এম্বুলেন্স, লক ডাউন থাকার কারনে ভ্রাম্যমাণ কাচাবাজার জরুরী শিশুখাদ্য সাতটি গাড়ি করে টিম সদস্যদের মাধ্যমে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। করোনার প্রার্দুভাব বৃদ্ধি পেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গেটে করোনার নমুনা সংগ্রহের বুথ স্থাপন ও হাসপাতালের প্রবেশদারে জীবাণুনাশক টানেল তৈরী করে দিয়ে আলোচনার শীরোনাম হন তিনি।
তাছাড়া ঈদ উল ফিতরে প্রধানমন্ত্রীর উপহার স্বরুপ মানবিক সহায়তা খাদ্য সামগ্রী ৭২ হাজার পরিবারের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। বিভিন্ন সংগঠনে প্রনোদনার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন তিনি। ঈদের দিনে উপজেলা চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলামের একটি মানবিক কাজ সকল মানুষের হৃদয়ে নাড়া দিয়েছে।
ঈদের দিন রাস্তায় ঘুড়ে বেরানো এক বৃদ্ধ হঠাৎ করেই তার ঘড়ে উঠে যান। এটা দেখে ক্ষুব্ধ হলেন না, বরং সকল আলোচনা বাদ দিয়ে তার সমস্যার কথা জানতে চান চেয়ারম্যান। উত্তরে বৃদ্ধ কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ‘আমি অসুস্থ’। এতোটুকু বলতেই চেয়ারম্যান পকেটে হাত দিয়ে যতগুলো ৫০০ টাকার নোট ছিল তার সবগুলোই তুলে দেন ওই বৃদ্ধর হাতে। তার এমন কান্ড দেখে সবাই বিমোহিত হন। এমন অনেক মানবিক কাজের দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন মোঃ মিরাজুল ইসলাম।
এদিকে করোনা দুর্যোগের মধ্যেই দক্ষিণাঞ্চলে আঘাত হানে শক্তিশালী ঘুর্ণিঝড় আম্পান। এতে ভান্ডারিয়া সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন পানিতে প্লাবিত হয়। এতে অসহায় হয়ে পড়ে ওই ইউনিয়নগুলোর মানুষ। আম্পানে ক্ষতিগ্রস্থ এসব পরিবারের পাশে দাঁড়ান উপজেলা চেয়ারম্যান। বাড়িয়ে দেন সহায়তার হাত। নগদ অর্থ, চিড়া, মুড়ি, শিশুখাদ্য, রেইন কোর্ট, ছাতা বিতরণ করেন দুর্গতদের মাঝে। উপজেলায় কন্টোল রুম ও হট লাইন সার্ভিস চালু করেন স্কাউট সহ সকলের সহযোগিতায়।
বর্তমান সময়ে পুরো উপজেলায় করণীয় কল্যাণকর কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়ে অগ্রসর হচ্ছেন উপজেলা পরিষদের জনপ্রিয় এই চেয়ারম্যান।মডেল উপজেলা বাস্তবায়নে কাজ করছেন তিনি।
মিরাজুল ইসলামের সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, আমি প্রচারে বিশ্বাসী নই, কাজে বিশ্বাসি। তবে ভালো কাজের প্রচার ও সহযোগিতা করলে কৃতজ্ঞ থাকবো। তার বিশ্বাস আর মন্তব্য ‘মানুষ আল্লাহর সৃষ্টি, আমি খেতমতে দেব দৃষ্টি’।
পাঠকের মন্তব্য: