যৌতুক দিতে না পারায় বিয়ের তিন মাসের মাথায় স্বামীর ঘর ছাড়তে হলো নববধুকে

প্রকাশিত: ১৫ ডিসেম্বর ২০২০, ০৫:৪১ এএম
স্বামী-শাশুড়ি ও দেবরদের দাবীকৃত এক লক্ষ টাকা যৌতুক দিতে না পারায় বিয়ের তিন মাসের মাথায় বাবার বড়িতে ফিরে আসতে হলো মোছাম্মৎ ফরিদা আক্তারকে। অপরদিকে বিয়ের একমাসের মাথায় যৌতুকের দাবীতে স্ত্রী'র উপর অমানষিক নির্যাতন শুরু করে যৌতুকলোভী স্বামী মহরম আলী( ২৮)। ঘটনাটি ঘটেছে সীতাকুণ্ড উপজেলার ১নং সৈয়দপুর ইউনিয়নে। চট্টগ্রাম চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে দায়ের করা স্ত্রী ফরিদা আক্তারের মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৯নং ভাটিয়ারী ইউনিয়নের ৫নং নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল মালেকের বাড়ির মোহাম্মদ জামাল আহম্মদের মেয়ে মোসাম্মৎ ফরিদা আক্তার এর সাথে দুই পরিবারের সন্মতিতে ১৫ এপ্রিল ২০২০ এ বিয়ে হয় উপজেলার ১নং সৈয়দপুর ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের আনোওয়ারের বাড়ির আনোয়ার হোসেনের ছেলে মোঃ আইয়ুব আলী(২৮) এর সাথে। বিয়ের কিছুদিনের পর থেকেই স্বামী মহরম আলী, শাশুড়ী রিজিয়া বেগম,দেবর মোঃ আইয়ুব আলী ও মোঃ ফারুক যৌতুকের জন্য ফরিদা আক্তারের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। যৌতুক হিসেবে তারা একলাখ টাকা দাবী করে। বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে স্বামী মহরম আলী প্রায় মারধর করতে থাকে। ফরিদা আক্তার বলেন,আমার পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। এত টাকা দেওয়া আমার বাবার পক্ষে কিছুতেই সম্ভব নয়। একথা বললে তারা আরো বেশী নির্যাতন করতে থাকে। গত ৮ই জুলাই রাতে যৌতুকলোভী স্বামী মহরম আলী ফরিদাকে মারধর করার সময় মাটিতে ফেলে গলায় পা দিয়ে চেপে ধরে বলতে থাকে "কাল সকালে একলক্ষ টাকা এনে দিবি" না হলে এখন গলা চেপে মেরে ফেলবো " আর আনতে না পারলে আমার ঘরে আসার দরকার নেই। এসময় প্রাণে বাঁচতে ফরিদা সকালে বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিবে বলে নির্যাতন থেকে রক্ষা পায়। আর ঐ রাতে তাকে সারারাত অভূক্ত অবস্থায় রুমে আটকিয়ে রাখে। পরদিন সকালে ফরিদাকে এক কাপড়ে ঘর থেকে বের করে দেয় স্বামী, শাশুড়ী ও দুই দেবর। এঘটনার পর ফরিদা আক্তার বাদী হয়ে চট্টগ্রাম চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে (সি.আর. মামলা নং-১৭৬) মামলা দায়ের করলে যৌতুকলোভী মহরম আলী আগাম জামিন নেয়। এরপর থেকে সে ফরিদাকে মামলা তুলে নিতে মোবাইল ফোনে হুমকী দিতে থাকে। এব্যাপারে ফরিদা আক্তারের মা শাহানারা বেগম বলেন, আমার স্বামী অন্ধ,আমার কোন ছেলে নেই, তিনটি মেয়ে নিয়ে অতিকষ্টে দিন যাপন করছি। মেঝো মেয়ে ঝিয়ের কাজ করে। আমিও ভাটিয়ারীতে একটি লোহার স্ক্র্যাপের দোকানে ডেইলী শ্রমিক হিসেবে কাজ করি। যেদিন কাজ হয়না সেদিন ঘরে রান্নাও হয়না। সাপ্তাহে দুই এক দিন না খেয়ে কাটাতে হয়। এমন দুরবস্থার আমি কিভাবে একলক্ষ টাকা দেবো মেয়ের জামাইকে। শশুড়বাড়ির লোকজন আমার মেয়েকে এক কাপড়ে বাড়ী থেকে বের করে দিয়েছে। এ ব্যপারে জানতে ফরিদার স্বামী মহরম আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: