কালভার্ট ভরাট করে ‘আ.লীগ নেতার বাজার সম্প্রসারণ’

প্রকাশিত: ২৬ জানুয়ারি ২০২১, ১১:৩৫ পিএম
বগুড়ার ধুনট উপজেলার মথুরাপুর-ধানঘরা সড়কের তালতলা চারমাথা এলাকায় তিনটি কালভার্টের মুখ মাটি দিয়ে ভরাট করেছেন স্থানীয় ভূমি মালিকরা। আওয়ামী লীগ নেতার নতুন বাজার সম্প্রসারণের নামে তারা কালভার্টগুলোর মুখ বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে এলাকার পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ওই এলাকার শত শত একর আবাদি জমি চাষাবাদে হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে কৃষকরা। সরেজমিনে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে কালভার্টগুলো নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে ওই পাকা সড়কটির সংস্কার কাজ চলমান। সড়কটির তালতলা চারমাথা এলাকায় মথুরাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রায় এক বছর ধরে বাজার গড়ে তুলছেন। বাজার গড়ে ওঠার পাশাপাশি সেখানকার জমির মূল্য বেড়ে গেছে। তাই তিন ফসলি জমি ভরাট করে সেখানে দোকানঘর নির্মাণের প্রতিযোগিতায় নেমেছে স্থানীয়রা। তালতলা চারমাথা এলাকায় তিনটি কালভার্টের মুখ মাটি দিয়ে বন্ধ করে সেখানে দোকানঘর নির্মাণ করছেন স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হাকিম, মকুল হোসেন, সুলতান মাহমুদ, আনোয়ার হোসেন ও শাহ আলম। স্থানীয়রা জানায়, ক্ষমতাসীন দলের নেতার প্রভাব খাটিয়ে এমন পরিবেশ ও জনস্বার্থবিরোধী কাজ করা হচ্ছে। প্রভাবশালী নেতাকে কিছু বলতেও সাহস পাচ্ছে না কেউ। এলাকার জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কের কালভার্ট তিনটি বন্ধ করার কারণে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ছে। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হবে কৃষকসহ স্থানীয় লোকজনের। গ্রামবাসীর স্বার্থে এই কালভার্টের মুখ সম্পূর্ণ খুলে দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা স্বাভাবিক করা দরকার। এলাকার কৃষকরা জানান, কালভার্টের মুখ মাটি দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ায় ফসল ডুবে যাওয়ার আশঙ্কায় এলাকায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অতিদ্রুত কালভার্টের এই মাটি অপসারণ করা না হলে সামান্য বৃষ্টি হলেই চলতি মৌসুমে ইরি-বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হবে। ফসল নষ্ট হলে এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন এলাকার কৃষকরা। তবে কালভার্টের মুখ বন্ধকারীরা বলছেন, তাদের জায়গা দিয়ে পানি নামতে দেবেন না তারা। তাদের জায়গায় দোকান করার জন্য মাটি ভরাট করেছেন। অন্যের জায়গায় মাটি ভরাট করেননি। তাদের নিজ প্রয়োজনে কালভার্টের মুখ ভরাট করছেন। এতে কার কী ক্ষতি হলো- এটা দেখার বিষয় নয়। উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোর্তজা বলেন, কালভার্টের পাশের ভূমি মালিকদের সঙ্গে কথা বলে বিকল্প পদ্ধতিতে ফসলি জমি থেকে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ধুনট উপজেলা প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম বলেন, পরিবেশ আইন অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সরকারি কালভার্ট বা জলাধার বন্ধ করে কোনো প্রতিষ্ঠান বা স্থাপনা নির্মাণ করতে পারেন না। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: