আজ পরীক্ষামূলক টিকা প্রয়োগ হবে রাজধানীর ৫ হাসপাতালে

প্রকাশিত: ২৮ জানুয়ারি ২০২১, ০৩:০২ পিএম
দেশে কোভিড-১৯-এর টিকা প্রয়োগ শুরু হয়েছে গতকাল। দেশে প্রথম ভ্যাকসিন নিয়েছেন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তা। এর ধারাবাহিকতায় আজ বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) রাজধানীর পাঁচটি হাসপাতালে পরীক্ষামূলক টিকা প্রয়োগ করা হবে। এসব হাসপাতালের ৪০০ থেকে ৫০০ স্বাস্থ্যকর্মীকে এক যোগে দেয়া হবে টিকা। সাত দিন পর্যবেক্ষণের পর ৭ই ফেব্রয়ারি দেশব্যাপী টিকা কার্যক্রম শুরু করবে সরকার। বুধবার (২৭ জানুয়ারি) দেশের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে দিনটি। এদিন, নানা শ্রেণীপেশার ২৬ জনের দেহে সফল টিকা দিয়ে বিশ্বের অনেক দেশকেই পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। কোন ধরণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই সফল এই টিকা প্রয়োগ শুরু হচ্ছে পর্যায়ক্রমে। এবার টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও সার্বিক অভিজ্ঞতা যাচাই করতে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে শুরু হবে পরীক্ষামূলক টিকাদান কর্মসূচি। রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালসহ আরো চারটি হাসপাতালে চলবে এই কার্যক্রম। এরই মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালকে প্রস্তুত করা হয়েছে। এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে টিকা প্রদান করা হবে যার তালিকা এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমেদ। এরপরই টিকার নিবন্ধন করতে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে অ্যাপ ‘সুরক্ষা’। চিকিৎসক, নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও প্রশাসনের লোকজনসহ ১০০ জনের মতো স্বাস্থ্যকর্মীর তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে কাউকে জোর করে টিকা দেওয়া হবে না। যারা স্বেচ্ছায় টিকা নিতে চান, কেবল তারাই টিকা পাবেন। টিকাদানের পর পর্যবেক্ষণ শেষে আগামী ৭ই ফেব্রুয়ারি থেকে দেশব্যাপী ব্যাপক হারে টিকা কার্যক্রম শুরু হবে। টিকা নিয়ে কোন সংশয় নেই বলে আবারো জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তবে, পরিকল্পনা অনুযায়ী, অন্তঃসত্ত্বা নারী ও ৩৭ শতাংশ জনগোষ্ঠী যারা ১৮ বছরের কম বয়সী, তাদেরও টিকা দেওয়া হবে না। এর আগে, টিকা প্রদান কার্যক্রম ভার্চুয়ালি উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে প্রথমে পাঁচজনকে টিকা দেওয়া হয়। তারা হলেন- কুর্মিটোলা হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কোস্তা, চিকিৎসক আহমেদ লুৎফুল নোবেল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এডিজি অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা, ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তা বিদারুল ইসলাম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম ইমরান হামিদ। এরপর ধাপে ধাপে আরো ২১ জনকে টিকা দেওয়া হয়। তারা হলেন- মো. মাজেদুল ইসলাম, সানজিদা সুলতানা, মো. আব্দুল হালিম, মোহাম্মদ এনামুল হাসান, মো. হামজা, শাম্মী আক্তার, মুহাম্মদ শাহজাহান, ডা. আল মামুন শাহরিয়ার সরকার, ডা. ফরিদা ইয়াসমিন, ডা. আফরোজা জাহিন, ডা. অরূপ রতন চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. আব্দুল কাদের খান, মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান, মো. আব্দুর রহিম, কাজি জসিম উদ্দীন, মোশারফ হোসাইন, সাংবাদিক মাসুদ রায়হান পলাশ, মো. আল মাসুম মোল্লা, আমিরুল মোমেনীন, মিস মুন্নি খাতুন, মো. আশিকুল ইসলাম। উল্লেখ্য, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে প্রস্তুতকৃত যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ‘কোভিশিল্ড’র তিন কোটি ডোজ কিনেছে সরকার। এর মধ্যে ৫০ লাখ ডোজ বাংলাদেশে পৌঁছেছে। এর আগে ২১ জানুয়ারি ২০ লাখ ডোজ কোভিশিল্ড বাংলাদেশকে উপহার পাঠায় ভারত সরকার। ভারত সরকারের উপহারের টিকা দিয়েই প্রাথমিক টিকাদান কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। টিকা গ্রহণে আগ্রহীদের সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে টিকার জন্য নিবন্ধন করতে হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: