খেতাব বাতিলের ক্ষমতা জামুকা কেন সরকারেরও নেই: মোশাররফ

প্রকাশিত: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১২:০৬ এএম
খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত সরকারের পক্ষ থেকেই উত্থাপন করা হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আজকে যেই দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে তার থেকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য তাদের এমন সিদ্ধান্ত। আপনাদের (সরকারের) এই অপচেষ্টা সফল হবে না। তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্রহীনতা, বিচারহীনতা, সুশাসনের অভাব, লুটপাট, রাহাজানি এবং সর্বশেষ যেই ঘটনা ঘটেছে এগুলো শিকার করার তাদের কোন সুযোগ নেই। সেই জন্যই মানুষের দৃষ্টি অন্য দিকে প্রবাহিত করার জন্য জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিল করবে। এটা বাতিল করার ক্ষমতা তাদের নেই। জামুকা কেন আজকের সরকারেরও কোন ক্ষমতা নেই। এই খেতার কেউ দেয়নি জিয়াউর রহমানসহ যারা পেয়েছেন তারা অর্জন করেছেন। এই খেতাবের ওপর হাত দেওয়ার কারও কোন অধিকার নেই। রবিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের 'বীর উত্তম' খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম এই সমাবেশের আয়োজন করে। খন্দকার মোশাররফ বলেন, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশে প্রথম মুক্তিযুদ্ধের সূচনা করেছেন এবং সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। জিয়াউর রহমানের আগে কেউ মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছে এটা আর কেউ দাবি করতে পারবে না। সশস্ত্র ভাবে পাকিস্তান হানাদারদের প্রতিহত করেছেন। তিনি সেনাবাহিনীর একটি সাউনিতে থেকে, পাকিস্তানের একজন মেজর হয়ে পঁচিশে কালরাত্রির শেষ রাতে বলেছিলেন আমি বিদ্রোহ ঘোষণা করছি। কার বিরুদ্ধে, পাকিস্তান এবং পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। জামুকার উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা ভালো করে ইতিহাস জানেন না শুধু বিকৃত করাই আপনাদের কাজ। বিদ্রোহ করেই জিয়াউর রহমান ক্যান্টনম্যান্ট থেকে বেরিয়ে আসেননি। পাকিস্তানি অফিসারদের গ্রেফতার করে, বাঙালি সৈন্যদের নিয়ে সকল অস্ত্রসহ ক্যান্টনম্যান্ট থেকে বেরিয়ে পড়েছিলেন। এর পর ২৭ মার্চ কালুর ঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে তিনি স্বাধীনতার ডাক দিলেন। তখন আমরা একটি নামই শুনেছি মেজর জিয়া বলছি। আর কারো নাম কেউ শুনে নাই। কারো আহ্বান শুনে নাই। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ডাক দিয়েছেন কে, জিয়াউর রহমান। অতএব তার বিরুদ্ধে আপনার সিদ্ধান্ত নিতে চান। মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সেক্টর কমান্ডার কে, আবার সেই জিয়াউর রহমান। মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ফোর্সেস কমান্ডার জিয়াউর রহমান। "জিয়াউর রহমান ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করা সম্ভব নয়। আজকে যারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করছেন, কিন্তু যারা ইতিহাস লিখছেন সত্যকে মেনে নিয়েই লিখতে হবে। জিয়াউর রহমানই সশস্ত্র অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ শুরু করেছেন। আর তাকে নিয়ে টানাটানি, আগুন নিয়ে খেলছেন। আপনাদের হাত পুরে যাবে, ছাই হয়ে যাবে। বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন,যারা আজ দেশ পরিচালনা করছেন তারা জনগণের ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায়। তারা আজ গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যাকরে গায়ের জোরে স্বৈরশাসক প্রতিষ্ঠা করেছে। এই আওয়ামী লীগের স্বাধীনতার পরে গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। স্বাধীনতাকে হত্যা করেছিলো, বাক স্বাধীনতা হত্যা করেছিলো, রক্ষীবাহিনী দিয়ে মুক্তিযুদ্ধাদের হত্যা করেছিলো। এই আওয়ামী লীগ আজ ১২ বছর যাবত ক্ষমতায়। জনগণের ভোট চুরি করে তারা ক্ষমতায় আসছে। আওয়ামী লীগ মিথ্যার ওপর প্রতিষ্ঠিত মিথ্যাই তাদের বলতে হবে। অন্যায় ভাবে প্রতিষ্ঠিত অন্যায়ই তাদের করতে হবে। তিনি বলেন, সরকারের পায়ের নিচে মাটি নাই, মাটিতো হচ্ছে জনগণ। ভোট ডাকাতি করে যারা ক্ষমতায় থাকে তাদের জনগণের ওপর বিশ্বাস কিভাবে থাকবে। জনগণের আস্থা এই সরকারের ওপর নাই তাই সরকারের পায়ের নিচে মাটি নাই। সরকারের বিরুদ্ধে আজকে সারা বাংলাদেশ ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। সরকারের পতনের জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। মূল সেই টার্গেট থেকে আমাদের দৃষ্টি অন্য দিকে ফেরানো যাবে না...। এই স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে; বলেন বিএনপির এই নেতা। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান এর সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর অবঃ হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল সালাম, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: