মুন্সীগঞ্জে প্রত্নতাত্ত্বিক যাদুঘর উদ্বোধন

প্রকাশিত: ০৩ মার্চ ২০২১, ১১:০১ পিএম
মুন্সীগঞ্জে রঘুরামপুর ও নাটেশ্বর প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি। ৫ মাসব্যাপী খননে যেসব প্রত্নবস্তু মিলেছে সেসব ঘুড়ে দেখেন প্রতিমন্ত্রী। প্রায় ১০ একর ঢিবিতে উৎখনন কাজ চলছে। এসময় বিক্রমপুরী বৌদ্ধবিহার প্রত্নস্থান জাদুঘর উদ্বোধন করা হয়। বুধবার (৩ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১ টায় সদর উপজেলার রঘুরামপুর ও টংগিবাড়ী উপজেলার নাটেশ্বর প্রত্নস্থান ঘুড়ে দেখেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নাটেশ্বর দেউলে দ্বিতীয় স্থরে ইতিপূর্বে এবং এবার যে আবিষ্কার হলো তা পরিষ্কারভাবে ঘোষণা করে যে, নাটেশ্বর প্রত্নস্থানে ছিল দশম-একাদশ শতকে একটি বৃহৎ এবং সমৃদ্ধ স্থূপ কমপ্লেক্স যা বাংলাদেশে প্রথম। বিগত বছরের আবিষ্কার যেমন বৃহৎ আকারের নান্দনিক কেন্দ্রীয় অষ্টকোণাকৃতি স্থুপ। এটির চতুপার্শ্বে চারটি স্থুপ হলঘর। প্রতীকী স্থাপত্যগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দুইটি বৃহৎ আকারের অষ্টকোণাকৃতির স্থুপ, স্মারক কুঠুরি, সুরক্ষা প্রাচীরের অংশ, নকশাকৃত ইট। অষ্টকোণাকৃতির স্থূপের কেন্দ্রে বিশেষ ধরণের স্থাপিত্য 'স্মারক কুঠুরি' একটি দুষ্প্রাপ্য ও তাৎপর্যপূর্ণ আবিষ্কার। যেখানে গৌতম বুদ্ধ বা তাঁর গুরুত্বপূর্ণ শিষ্যের দেহ ভষ্ম, ব্যবহৃত জিনিস রাখা হতো। এর উপরের অংশ গোলাকার ও নিচের অংশ চতুষ্কোণাকৃতি। বাংলাদেশে এ আবিষ্কার প্রথম। স্মারক কুঠুরির গোলাকার অংশ বৌদ্ধ ধর্মের দর্শনের সৃষ্টিতত্ত্ব 'শুন্যবাদ' এর প্রতীকী রুপ। এছাড়া স্থূপের ভেতরের অন্ত্রস্থলটি নির্মিত হয়েছিল স্পোকযুক্ত গাড়ির চাকার আলদে। গোল চাকাঈ শুন্যের প্রতিরুপ এবং চাকা গতির প্রতীক। উলম্ব ইটের বিন্যাসকে চাকার স্পোকের সঙ্গে তুলনা করা হয়। স্পোককে কল্পনা করা হয় সূর্যের রশ্নির সঙ্গে। ইতিপূর্বে ইট নির্মিত সুরক্ষা প্রাচীরের অংশবিশেষ পাওয়া গেলেও বিস্তৃতি বুঝা যায়নি। সুরক্ষা প্রাচীরটি যে পুরো স্থুপ কমপ্লেক্স জুড়েই ছিল এবারের আবিষ্কারে তা অনেকটা পরিষ্কার হয়েছে। পুরো বসতি জুড়ে সুরক্ষা প্রাচীরও বাংলাদেশ এই প্রথম। ইতিপূর্বে উৎখননে নকশা আকৃতির ইটের ভাঙ্গা টুকরা পাওয়া গেলেও স্থাপত্যের সঠির অবস্থানে ইটের নকশা পাওয়া যায়নি। এবার সুরক্ষা প্রাচীরের বহিঃস্থ দেয়ালে একটি হলেও ইটের পূর্ণাঙ্গ নকশা সঠিক অবস্থানে আবিষ্কৃত হয়েছে। খননকালে হতাশার জায়গা ছিল নাটেশ্বরে পোড়ামাটির ফলক না আবিষ্কৃত হওয়া কিন্তু নকশাকৃত ইটের ব্যবহার বুঝতে পেরে রহস্যটি উন্মোচিত হলো। অতীশের জন্মভূমিতে স্থুপ কমপ্লেক্সের দেয়াল অলংকরণের ক্ষেত্রে পোড়ামাটির ফলকের পরিবর্তে নকশাকৃত ইট ব্যবহৃত হয়েছে যার কারণ গবেষকদের নতুন করে ভাবতে সহায়তা করবে। এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদার, পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন, বিক্রমপুর অঞ্চলে প্রতœতাত্ত্বিক খনন ও গবেষণা কর্মসূচির 'কর্মসূচি পরিচালক' ড. নূহ-উল-আলম লেনিন, গবেষণা পরিচালক ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: