প্রথম স্ত্রীর পেটে চতুর্থ সন্তান, আরো দুই বিয়ে করলেন স্বামী

প্রকাশিত: ০৯ মার্চ ২০২১, ০৭:২৪ পিএম
স্কুলশিক্ষক স্বামীর অমানবিক নির্যাতন ও আঘাতের চিহ্ন নিয়ে হাসপাতালে যন্ত্রণায় ছটফট করছেন আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা প্রথম স্ত্রী ফারজানা বেগম (৩৪)। বর্তমানে নির্যাতিত ওই নারী খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে ঘটনাটি ঘটে নড়াইল সদর উপজেলার মাইজপাড়া ইউনিয়নের চারিখাদা গ্রামে। অভিযোগ, স্বামী শাহান শাহ সরদার এক মাস আগে তার এক ছাত্রীকে বিয়ে করেন। এটি তার তৃতীয় বিয়ে। জানা গেছে, মাইজপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষক শাহান শাহ সরদারের সঙ্গে ২১ বছর আগে বিয়ে হয় ফারজানার। তাদের বড় মেয়ে শাহজাদী মারিয়া এইচএসসি পরীক্ষার্থী, মেঝো মেয়ে শাহ আফরিন নবম শ্রেণির ছাত্রী ও ছোট মেয়ে ফাতেমা তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। এখন চতুর্থ সন্তানের মা হতে যাচ্ছেন ফারজানা। বর্তমানে তিনি আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ফারজানা বেগম বলেন, বিয়ের পরই আমার স্বামীর বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির তথ্য জানতে পারি। যেহেতু বিয়ে করেছি সে কারণে সব মুখ বুঝে সহ্য করে এসেছি। তিনি বলেন, বিয়ের ৪-৫ বছর পর অর্থাৎ ২০০৫ সালে পলি নামে এক মেয়েকে দ্বিতীয় বিয়ে করে আমার স্বামী। পরবর্তীতে পরিবার ও আমার অনুরোধে তাকে তালাক দেয় সে। এরপর সংসারে কিছুদিন শান্তি ছিল। কিন্তু মাঝেমধ্যেই আমার স্বামীর বিরুদ্ধে নারী ঘটিত বিভিন্ন অভিযোগ পেতাম। তিনি আরো বলেন, সর্বশেষ এ বছরের ১ ফেব্রুয়ারি নিজের এক ছাত্রীকে বিয়ে করে সে। এটি তার তৃতীয় বিয়ে। মারিয়া নামে ওই নারী মাইজপাড়া ইউনিয়নের কল্যানখালী গ্রামের বাসিন্দা। ৬ মার্চ সন্ধ্যার দিকে তাকে নিয়ে আমার স্বামী বাড়িতে নিয়ে আসে এবং ঘরে তুলতে চায়। তখন আমি বাধা দেয়ায় আমার শ্বশুর সবদার সরদার, স্বামী শাহান শাহ সরদার ও তার তৃতীয় স্ত্রী মারিয়া মিলে আমাকে কিল-ঘুষি-লাথি মারতে থাকে। আমার মেয়েরা ঠেকাতে গেলে তারাও রক্ষা পায়নি। আমার গর্ভে আট মাসের সন্তান রয়েছে। পেটে লাথি মারায় প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। নির্যাতনের এক পর্যায়ে আমি অচেতন হয়ে পড়ি। জ্ঞান ফিরলে নিজেকে হাসপাতালের বিছানায় দেখতে পাই। ফারজানা বেগমের মেয়ে শাহ আফরিন বলেন, মারধরের এক পর্যায়ে আমার মা অচেতন হয়ে পড়লে আমরা তিন বোন অ্যাম্বুলেন্সে করে রাতেই তাকে নড়াইল সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। জরুরি বিভাগে ডাক্তার দেখানোর পর অবস্থায় খারাপ হওয়ায় তারা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। রাত ২টার দিকে মাকে আমরা এখানে ভর্তি করি। আফরিন আরো বলেন, ঘটনার পর আমার বাবা আমাদের ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। এছাড়া আমাদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন। এখন আমরা কোথায় উঠবো ভেবে পাচ্ছি না। আমার বাবা অপরাধী। এ পর্যন্ত তার দ্বারা অন্তত ২৫ জন নারী কলঙ্কিত হয়েছে। আমরা তার সঠিক বিচার চাই। শাহান শাহ সরদার দাবি করেন, তার প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে কোনো ঝামেলা হয়নি। পরে তার স্ত্রী এখন কোথায় আছে কেমন আছে- এমন প্রশ্ন করলে তিনি ফোন কেটে দেন। মাইজপাড়া ইউনিয়নের দায়িত্বরত এসআই মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: