পত্রিকায় নারী নির্যাতনের খবর ছাড়া কিছুই নেই: রিজভী

প্রকাশিত: ০৮ মার্চ ২০২১, ০৮:২১ পিএম
সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, শেখ হাসিনার উন্নয়নের এক যুগ আমরা দোখলাম। এ সময়ে নারী নির্যাতনের উন্নয়ন হয়েছে। খবরের কাগজের পাতা খুললে নারী নির্যাতনের খবর ছাড়া কিছুই দেখা যায় না। পুলিশের আইজিপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, পুলিশের আইজিপি যখন র‌্যাবের ডিজি ছিলেন তখনো তিনি আন্দোলনের সময় ওনার পুলিশ সদস্যদের বলেছেন, “আপনারা কি গুলি পকেটে রাখবেন? গুলি আপনাদের পকেটে রাখার জন্য দেয়া হয়েছে?” আমি বলতে চাই, আইজি সাহেব বাংলাদেশের প্রতিটি বিরোধী দল, প্রতিটি মানুষ কি মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী? যেখানে আপনি দেশের পুলিশের প্রধান কর্মকর্তা হয়ে এমন নির্দেশ দিচ্ছেন। একথা আপনি আইজি হয়ে কিভাবে বলতে পারেন। আজকে আমরা যেটা দেখছি সেটা হচ্ছে বাকশালের নমুনা। সোমবার (৮ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী নারী দল এ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশ শেষে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে নারী দিবসের র‌্যালি বের করে তারা। র‌্যালিটি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে নাইটেঙ্গেল মোড় ঘুরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। রিজভী বলেন, আইয়ুব খান উন্নয়নের দশক করেছিল, স্বৈরাচারী শাসকের উন্নয়নের দশক। আর শেখ হাসিনার উন্নয়নের একযুগ আমরা দেখলাম। সেই উন্নয়ন হচ্ছে নারী নির্যাতনের উন্নয়ন। খবরের কাগজের পাতা খুলে শুধু নারী নির্যাতনের খবর ছাড়া আপনারা কিছুই দেখবেন না। তিনি বলেন, বর্তমান যে সময় সে সময় আমরা সরকারের লোকজনের কাছ থেকে অনেক কথা শুনি। উন্নয়নের চাকচিক্যের কথা শুনি, কিন্তু উন্নয়নের চাকচিক্যের আড়ালে কত নারীর বোবা কণ্ঠ, কখন নারী-শিশুর গোঙ্গানির শব্দ এই আমলে হয়েছে তার হিসেব নেই। তিনি বলেন, কার কথা বলব! মিতুর কথা বলবো না তনুর কথা বলব না খাদিজার কথা বলব! বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আমার কাছে বিস্ময়কর হয়ে উঠেছে সংবাদপত্রের পাতায় খবরটি এসেছে মাননীয় প্রধান বিচারপতি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলার শুনানিতে তিনি বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেওয়া ঠিক নয়। আবার বলেছেন, অন্যান্য দেশেও ব্যঙ্গচিত্র হয় কিন্তু বাংলাদেশের ব্যঙ্গচিত্র অন্যরকম। এতে দেশের ইমেজ ক্ষুণ্ন হয়। কিন্তু আমি একটি প্রশ্ন রাখতে চাই, মাননীয় প্রধান বিচারপতি যখন কোনো নাগরিকের কথা বলা, মুক্তকন্ঠে আওয়াজ তোলা, কোন নাগরিকের চিত্রাঙ্কন সে যদি করে ব্যাঙ্গ চিত্র করে তাকে যদি সরকারি হেফাজতে খুন করা হয় তাহলে সেটাতে কি দেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি পাই কিনা? এটাতো জনগন জানতে চাইতেই পারে। আপনি প্রধান বিচারপতি, আপনি যে অভিমতগুলো দিয়েছেন এটা অবশ্যই শিরোধার্য। কিন্তু এই যে বলেছেন, ব্যঙ্গচিত্র করলে দেশের ইমেজ ক্ষুণ্ন হয়। তাহলে কার্টুন আঁকার জন্য সরকারি হেফাজতে, পুলিশ হেফাজতে যদি তাদেরকে হত্যা করা হয় তাতে কি দেশের ইমেজ বাড়ে? রিজভী বলেন, আজকে আমরা যেটা দেখি সেটা হলো বাকশালের নমুনা। বাংলাদেশ নাকি উন্নয়নশীল দেশে পরিনত হয়েছে। পুলিশ উৎসব করবে। এগুলো বাকশালের নমুনা। পুলিশ উৎসব করবে কেনো? পুলিশতো একটি রাষ্ট্রের নিরেপেক্ষ প্রতিষ্টান। আপনি কি বানাতে চাচ্ছেন? আমরা কয়েকদিন পর দেখবো যশোরের এসপি তিনি এসপি আবার আওয়ামীলীগ এর দপ্তর সম্পাদক। ফেনীর এসপি তিনি এসপি আবার আওয়ামীলীগ এর সমাজকল্যাণ সম্পাদক। অথাৎ রাষ্ট্র, দল, প্রশাসন সব একাকার। "স্বৈরাচারী যে সমস্ত দেশ সেসব দেশে এগুলো দেখা যায়। আজকে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে তনু, মিতু, রাফি এদের আর্তনাদ ভেসে আসছে। তাই জাতি হিসেবে আপনাদের আরো সোচ্চার হয়ে রাস্তায় নামতে হবে। কারো কোন নিরাপত্তা নাই, আপনার সন্তানেরও নিরাপত্তা নেই। সন্তানের নিরাপত্তার জন্য এ সরকারের পতন ছাড়া কোন বিকল্প নেই।" জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, মহিলা দলের সহ সভাপতি নিলুফার চৌধুরী মনি, সহ-সভাপতি নেওয়াজ হালিমা আরলি, সাবেক ছাত্রদল নেত্রী আরিফা সুলতানা রুমা প্রমূখ।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: