লকডাউনে ম্যাজিস্ট্রেট দোকান বন্ধ রাখতে বলায় ক্ষিপ্ত হয় ব্যবসায়ীরা!

প্রকাশিত: ০৬ এপ্রিল ২০২১, ০৫:৪০ এএম
লকডাউনের সময় কাপড় দোকান খোলা রাখার সময় দোকানদারদেরকে সতর্ক করার কথা বলায় পঞ্চগড় সদর উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলামের সাথে অশালীন আচরণ করেছে কাপড় ব্যবসায়ীরা। প্রথমে ওই ম্যাজিস্ট্রেট এর সাথে কথাকাটাকাটি হয় এরপর বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে ম্যাজিস্ট্রেটকে ঘিরে রেখে হট্ট্রগোল তৈরি হলে আমিনুল ইসলামের উপর চড়াও হয় বস্ত্র ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা। লকডাউনের মধ্যেও দোকান খোলা রাখায় পঞ্চগড় বাজারের আলহাজ¦ ক্লোথ স্টোরে জরিমানা করতে চাইলে পঞ্চগড় সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরে প্রতিরোধের মুখে সেখান থেকে সরে যেতে বাধ্য হন তিনি। সোমবার (৫ এপ্রিল) বিকেলে জেলা শহরের কাপড় বাজারের আলহাজ্ব এর দোকানে এই ঘটনা ঘটে। জানা গেছে আলহাজ্ব এর দোকানের এই ঘটনার সময় আশে পাশের দোকানদার ও কর্মচারিরা ছুটে আসে এক থমথমে পরিস্থিতি তৈরি হয়। এসময় কয়েক মিনিটের মধ্যেই দোকান খোলা রাখার দাবিতে পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়ক প্রায় এক ঘন্টা অবরোধ করে রাখে বস্ত্র ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা। কয়েকশ বস্ত্র মালিক ও কর্মচারীরা মহাসড়কসহ করতোয়া সেতুর উত্তর প্রান্তে বাঁশ ফেলে অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেয় পঞ্চগড় বস্ত্র মালিক সমিতির সভাপতি শহিদুল ইসলাম খান ও সহসভাপতি আব্দুল হান্নান আলহাজ¦। বিক্ষোভকারীরা সড়কে আগুন জে¦লে মিছিল করতে থাকে। এ সময় সড়কে কয়েকশ যানবাহন আটকা পড়ে। চরম দুর্ভোগে পড়েন পথচারীরা। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সরকার লকডাউন ঘোষণা করলেও পঞ্চগড়ে সব চলছে স্বাভাবিক নিয়মে। বালু পাথর পরিবহণসহ বিভিন্ন যানবাহন চলছে। সেখানে কেউ কোন প্রতিবাদ করছে না। এমনকি তাদের জরিমানাও করা হচ্ছে না। কিন্তু কেবল কাপড়ের দোকান খোলা থাকায় জরিমানা করতে আসছে প্রশাসনের লোকজন। করোনার শুরু থেকেই লোকসানের মধ্যে রয়েছে বস্ত্র মালিকরা। আবারো দোকান বন্ধ রাখতে হলে বড় আকারের লোকসানে পড়বেন বলে অভিযোগ করেন তারা। এছাড়া বেকার হয়ে পড়বে শত শত কর্মচারী। তাই তারা বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেন। পঞ্চগড় বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতির শহিদুল ইসলাম খান বলেন, ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে আমাদের এক দোকান মালিকের বাগবিতন্ডা হয়েছে। এ ঘটনায় পরে আমাদের নামে যেন মামলা না হয় আমরা সেই চেষ্টা করছিলাম। সবাই একসাথে সড়কে থাকার কারণে চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বহিরাগত কিছু লোকজন অবরোধ করে। বস্ত্র মালিক ও কর্মচারীরা এর মধ্যে জড়িত ছিলো না। পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফ হোসেন, ব্যবসায়ীদের সাথে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরে তারা দুঃখ প্রকাশ করেছে। তারা দোকান খোলা রাখার দাবি করতেছিল। এটা কেবিনেটের সিদ্ধান্ত। তাই আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়ার ক্ষমতা রাখি না। তারপরও আমরা তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভ না করে জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলার জন্য বলেছি। পরে তারা বিক্ষোভ তুলে নিয়েছে। এ বিষয়ে নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম বলেন আমি দুইজন পুলিশ সদস্য কে নিয়ে বিকেল পৌনে চারটার দিকে পঞ্চগড় বাজার পরিদর্শনে গিয়েছিলাম । এসময় কাপড় দোকানগুলো যেহেতু নিত্যপ্রয়োজনীয় নয় এজন্য তাদেরকে শুধুমাত্র দোকান বন্ধ রাখার জন্য সতর্কতা দিয়েছি। বেশিরভাগ দোকান আমার পরিদর্শনের সময় বন্ধ করে দিয়েছিল । তবে আলহাজ্ব ক্লথ স্টোরের মালিক আব্দুল হান্নান আলহাজ্ব বিষয়টি নিয়ে হট্ট্রগোল তৈরি করে। আমি মনে করি কাপড় ব্যবসায়ীরা পরিকল্পিতভাবে এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: