করোনাকালে ব্যর্থ সরকারের পদত্যাগ করা উচিত: বিএনপি

প্রকাশিত: ২০ এপ্রিল ২০২১, ০৬:৩৬ এএম
করোনাকালে মানুষের জীবন-জীবিকার নিশ্চয়তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় সরকারের পদত্যাগ করা উচিত বলে জানিয়েছে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি। পাশাপাশি এই কমিটি চট্টগ্রামের বাঁশখালিতে শ্রমিক হত্যার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার এবং নিহত শ্রমিকদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও আহতদের সুচিকিৎসার দাবি করেছে। সোমবার (১৯ এপ্রিল) বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের এই সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমে জানানো হয়। শনিবার (১৮ এপ্রিল) বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই ভার্চুয়াল সভা হয়। এ সময় দলের চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী করোনা আক্রান্ত খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনা করা হয়। স্থায়ী কমিটির সভায় অবিলম্বে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকা আমদানি, বিতরণ এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত বেড, অক্সিজেন সরবরাহ, আইসিইউ, ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা করার এবং করোনা কালে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে নগদ আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ও অর্থনীতিকে সচল রাখতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। সভায় দুর্নীতিতে জড়িত চিহ্নিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বানও জানানো হয়। চট্টগ্রামের বাঁশখালিতে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি আদায়ের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের গুলিবর্ষণে পাঁচজন নিহত ও শতাধিক আহত হওয়ায় স্থায়ী কমিটির এ সভায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানানো হয় বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। স্থায়ী কমিটির সদস্যরা মনে করেন, সরকারের সীমাহীন অবহেলা, অযোগ্যতা, ভুল সিদ্ধান্ত এবং দুর্নীতির কারণে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। সময়োচিত পদক্ষেপ না নেওয়ায় সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সরকারের কোনো পর্যায়ে কোনো জবাবদিহির ব্যবস্থা না থাকায় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের অবাধ দুর্নীতির কারণে পরিস্থিতি এখন মানুষের জীবনের ও জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। স্থায়ী কমিটির এই সভা মনে করে, করোনার টিকা সংগ্রহ ও আমদানিতে বেসরকারি ব্যবসায়ীকে সম্পৃক্ত করায় এবং সুপরিকল্পিত কোনো কৌশল না থাকায় টিকাপ্রাপ্তি এখন অনিশ্চিত। ভারত টিকা রপ্তানি বন্ধ করায় বাংলাদেশের মূল্য পরিশোধিত টিকা পাওয়াও এখন সম্পূর্ণ অনিশ্চিত। তা ছাড়া ১৮ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার কোনো পরিকল্পনাও জনগণের কাছে কখনোই স্পষ্ট করে বলা হয়নি। একটি মাত্র উৎস থেকে টিকা আমদানির সিদ্ধান্ত দূর্নীতির কারণে নেওয়া হয়েছে বলে সভা মনে করে। স্থায়ী কমিটির সভা থেকে বলা হয়েছে, লকডাউন ঘোষণার ফলে নিম্ন আয়ের মানুষ, দিন আনে দিন খায় মানুষ, শ্রমিক, প্রান্তিক কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা চরম সংকটে পড়েছেন। সব ধরনের শ্রমিকেরা মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। সভায় ২৬ মার্চ থেকে চলমান ব্যাপক গণ-গ্রেপ্তার, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও হয়রানিমূলক তৎপরতার নিন্দা জানানো হয়। অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, গণ-গ্রেপ্তার বন্ধ এবং গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এতে অংশ নেন- ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: