গোল্ডেন ক্রাউন তরমুজ আবাদ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে মিজানুর

প্রকাশিত: ০৪ মে ২০২১, ০৯:৩৮ পিএম
বাজারে সাধারণত দেখা মেলে সবুজ বা গাঢ় সবুজ বর্ণের তরমুজ। কিন্তু ব্যতিক্রমী সোনালি বর্ণের বিদেশি গোল্ডেন ক্রাউন, বা মাল্টা তরমুজ জাতের তরমুজের আবাদ করে নওগাঁর পত্নীতলায় যুবক কৃষক মিজানুর রহমান (৩৫) এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। হলুদ রঙের তরমুজ। কেউ বলছেন মাল্টা তরমুজ, কেউ বলছেন গোল্ডেন ক্রাউন। তবে নাম যাই হোক, জ্যৈষ্ঠের খরতাপে রসালো স্বাদ মিটাতে এই ফলের জুড়ি নেই। রসে ভরা নতুন জাতের এই তরমুজ চাষ দেখতে নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার ইছাপুর গ্রামে এখন দিন দিনই বাড়ছে উৎসাহি কৃষক সহ সাধারন মানুষের ভিড়। কৃষি বিভাগ বলছে, এ জাতের তরমুজ মালচিং পদ্ধতিতে মাচায় চাষ করতে হয়। এতে তরমুজের রোগবালাই কম ও ফলনও ভালো হয়। তরমুজের ওপরের রং হলুদ ও ভেতরের রং টকটকে লাল। এক বিঘা জমিতে গোল্ডেন ক্রাউন জাতের তরমুজ চাষে কৃষকের খরচ হয় ৩৫/৪০ হাজার টাকা। আর বিঘা প্রতি কৃষকের লাভ প্রায় লাখ টাকা। মাত্র ২ মাসের মধ্যে গোল্ডেন ক্রাউন, বা মাল্টা তরমুজ বাজারজাত করা যায়। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় দিনদিনই চাহিদা বাড়ছে এ তরমুজের। সরজমিনে দেখা-গেছে, উপজেলার ইছাপুর গ্রামের যুবক কৃষক মিজানুর রহমান তার সোয়া দুই বিঘা জমিতে উন্নত জাতের গোল্ডেন ক্রাউন জাতের তরমুজের ৩হাজার ৫শ চারা গাছ প্রায় দেড় মাস পূর্বে রোপণ করেন। পলি মাটিতে লাগানো চারা গাছ গুলো দিন দিন বড় হতে থাকলে তা ফল আসার আগ মহুর্তে বাঁশের মাচায় উঠিয়ে দেয়া হয়েছে। হলুদ রং বেষ্টিত এসব উন্নত জাতের তরমুজ গুলো সুন্দর ভাবে মাচার নিচে ঝুলছে। কৃষক মিজানুর রহমান জানান, স্বল্প মেয়াদি এই ফল সারা বছর উৎপাদন হয়। তাই বছরে কয়েকবার চাষ করা যায়। পরিপক্ক ফলের বাইরের রঙ হলুদ হলেও ভেতরে লাল। খেতে অন্যান্য জাতের তরমুজের মতই রসালো, সুস্বাদু ও মিষ্টি। বীজ বোপনের মাত্র ৬০দিনের মধ্যেই এটি বাজারজাত করা যায়। ওজন হয় তিন থেকে সাড়ে চার কেজি পর্যন্ত। আর মাচায় চাষ করলে অধিক ফলন পাওয়া যায়। তার এই ফল গুলির এখন বয়স ৪৬ দিন। এরই মধ্যে ফল গুলোতে নেটিং ব্যাগ ব্যবহার করা হয়েছে। এই ফল গুলি ৬০ দিনের মাথায় প্রায় ৩/৪ কেজি ওজন হলে পরিপক্ক হবে এবং তা বাজার জাত করার উপযোগী হবে। সে আশাবাদী এবারে তার এই ক্ষেত থেকে প্রায় ৬হাজার ফল পাওয়া যাবে। যার প্রতিটি ফলের ৬০/৭০ টাকা কেজি দরে বাজার মূল্য হবে ১৮০/২২০ টাকা। সোমবার বিকেলে তার এই তরমুজ ক্ষেত পরিদর্শন করেন কৃষি অধিদপ্তর নওগাঁর উপ-পরিচালক সামসুল ওয়াদুদ। এসময় তিনি বলেন, গোল্ডেন ক্রাউন বা মাল্টা তরমুজ অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি সুস্বাদু ফল। গোল্ডেন ক্রাউন জাতের তরমুজ আবাদ দেশে ভালো সাড়া ফেলেছে। বীজ বপনের মাত্র ২৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে ফুল আসে এবং ৫৫ থেকে ৬০ দিনের মাথায় ফল কাটা শুরু হয়। এ তরমুজের আদি নিবাস তাইওয়ান। নতুন জাতের তরমুজটি উপজেলায় প্রথমবারের মতো চাষ শুরু হলেও বাজারে ভাল দামের পাশাপাশি চাহিদাও রয়েছে বেশ। কৃষক মিজানুরের এই ক্ষেতটি পলি মাটিতে হওয়ায় এর ফলন ভালো হবে। তার তরমুজ চাষের সাফল্য দেখে অন্যান্য কৃষকরাও এগিয়ে আসলে কৃষি বিভাগ মিজানুরের মতো তাদেরকেও সার্বিক সহযোগীটা প্রদান করবেন বলে তিনি আশ্বাস প্রদান করেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রকাশ চন্দ্র সরকার, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোহায়মিনুল ইসলাম, উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মশিউর রহমান, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও পত্নীতলা প্রেসক্লাব সভাপতি আলহাজ্ব বুলবুল চৌধুরী, প্রো-বোনো ল’ইয়ার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর এ্যাসিস্টেন্ট পাবলিকেশন সেক্রেটারি ও বঙ্গবন্ধু আইন ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী তানভীর আহম্মেদ, কৃষক মিজানুর রহমান, আফজাল হোসেন সহ অন্যান্য কৃষক প্রমুখ।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: