প্রধানমন্ত্রীর তিন কন্যার ঘরে ৬ নাতি-নাতনি

প্রকাশিত: ০৩ জুন ২০২১, ০৬:৫৮ পিএম
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছয় নাতি-নাতনি। এদের এক জনের নাম সৈয়দ আলী মর্তুজা আযান, দ্বিতীয় সৈয়দ আলী মোহাম্মদ সুজাত, তৃতীয় আয়াতুল রহমান শ্রদ্ধা, চতুর্থ আকিব হোসেন রমাদান, পঞ্চম আয়াত হোসেন আদর এবং ষষ্ঠ আয়ান হোসেন আসিম। এই ছয় নাতি-নাতনি হলো নিমতলী ট্র্যাজেডিতে স্বজন হারিয়ে নিঃস্ব হওয়া সেই তিন কন্যার সন্তান। প্রধানমন্ত্রীর তিন কন্যারা হলেন—উম্মে ফারোওয়া আক্তার রুনা, সাকিনা আক্তার রত্না ও আসমা আক্তার শান্তা। চাঁনখারপুলের হোসনী দালান রোডের ১৮/১০, শিয়া গলির বাড়ির তৃতীয় তলায় থাকেন প্রধানমন্ত্রীর বড় মেয়ে রুনা। গতকাল দুপুরে ঐ বাড়ির দরজায় কলিং বেল চাপতেই বেরিয়ে আসেন রুনার স্বামী রাশেদ হাসান জামিল। বাসার ভেতরে নিয়ে বসতে দিতেই ছুটে এলো তার দুই ছেলে সৈয়দ আলী মর্জুতা আযান ও সৈয়দ আলী মোহাম্মদ সুজাত। কিছুক্ষণ পর এলেন রুনা। কেমন আছেন? জানতে চাইলে রুনা বলেন, ‘মায়ের দোয়ায় ভালোই আছি। হারিয়ে যাওয়া মা, খালা, বোনদের কথা বারবার মনে পড়ে। তাদের হারানোর পর প্রধানমন্ত্রীকে মা হিসেবে পাওয়ার পর আমাদের আর কোনো কষ্ট নেই। মা জানেন যে, আমরা শিয়া সম্প্রদায়ের। আমাদের ১০ মহরমে আমরা রান্না করি না, সেদিন মা নিজ হাতে রান্না করে আমাদের বাসায় খাবার পাঠান। কয়েক মাস আগে আম্মু আমাদের সারপ্রাইজ দিয়েছেন। তিন মেয়েকেই একটি করে ফ্ল্যাট দিয়েছেন। সেখানে চার মাস ছিলাম। এখন এখানে শিফট হয়েছি। মায়ের নাতিরা দাদা-দাদির বাসা ছাড়া থাকতে চায় না।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের তিন বোনেরই একটাই দাবি—পুরান ঢাকায় যত কেমিক্যাল গোডাউন রয়েছে সব যেন উচ্ছেদ করা হয়। নিমতলী ও চুরিহাট্টার পর তৃতীয় বারের যেন এ রকম ঘটনা আর না ঘটে।’ ২০১০ সালের ৩ জুন নিমতলীর ৪৩, নবাব কাটরা পাঁচতলা বাড়িতে সেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১২৩ জন প্রাণ হারান। আপনজন হারিয়ে নিঃস্ব হয় কয়েকটি পরিবার। বাড়ির নিচে কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন লেগে বিস্ফোরিত হয়ে এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। রুনার বিয়ের ‘পানচিনি’ অনুষ্ঠানের দিন এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিঃস্ব রুনা, রত্না ও শান্তাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্তান পরিচয়ে বুকে টেনে নেন। গণভবনে নিজে উপস্থিত থেকে প্রধানমন্ত্রী তার তিন কন্যার বিয়ে দেন। প্রধানমন্ত্রীর আরেক কন্যা রত্না থাকেন নবাব কাটরার বাসায়। এক সন্তান ও স্বামী নিয়ে সুখেই আছেন। তার স্বামী সাইদুর রহমান সুমন বেসিক ব্যাংকে চাকরি করেন। তিনি বলেন, ‘মায়ের সঙ্গে করোনার আগে দেখা হয়েছে। আর দেখা হয়নি। কিন্তু ফোনে আলাপ হয়। যারা আছেন তাদের মাধ্যমেও কথা হয়। তিনি প্রতি উত্সবে আমাদের খোঁজখবর রাখেন। মায়ের সহযোগিতায় ভালোই চলছে আমাদের সংসার। রত্মার একমাত্র কন্যা আয়াতুল রহমান শ্রদ্ধা। তার বয়স এখন ৯ বছর চলছে। প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে ভাবতে কেমন লাগে বলতেই রত্না বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে এটা অনেক বড় ব্যাপার। উনি যে স্বীকৃতি দিয়েছেন এটাই আমাদের জন্য অনেক বড়। এটার তুলনা হয় না। গত বছরের ডিসেম্বরে আমাদের ফ্ল্যাট দিয়েছেন। তার শ্বশুর মিরপুরের ফ্ল্যাটে থাকতে চান না বলে তারা আপাতত পুরান ঢাকাতেই থাকছেন।’ তবে প্রধানমন্ত্রীর তৃতীয় কন্যা আসমা আক্তার সপরিবারে থাকছেন মায়ের দেওয়া ফ্ল্যাটে। গত বছরের নভেম্বরে আসমা মিরপুরে নতুন ফ্ল্যাটে উঠেছেন। তার স্বামী আলমগীর হোসেন সেনাবাহিনীতে চাকরি করেন। আলমগীরের চাকরিও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বামী আর তিন সন্তান রমাদান, আদর ও আসিমকে নিয়ে খুব ভালোভাবেই চলছে আসমার সংসার। সুত্র: ইত্তেফাক।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: