রোনালদোর জোড়া গোলে ইউরোতে পর্তুগালের ‘শুভ সূচনা’

প্রকাশিত: ১৬ জুন ২০২১, ০২:৪৬ পিএম
গোটা ম্যাচ জুড়ে বল দখলে রেখে আক্রমণ সাজিয়েছে পর্তুগাল। একের পর এক আক্রমণে হাঙ্গেরির রক্ষণকে বেশ ভুগিয়েছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, ডিয়েগো জোটা, ব্রুনো ফার্নান্দেজরা। তবে গোল মিসের মহড়ায় এক সময় মনে হচ্ছিল জয়টা বোধ হয় হাতছাড়া করেই বসবে ইউরোর বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। তবে শেষ ১০ মিনিটে রাফায়েল গুয়েরোর একটি আর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর জোড়া গোলে ৩-০ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। সেই সঙ্গে মিচেল প্লাতিনিকে ছাড়িয়ে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতাও বনে গেছেন রোনালদো। বর্তমানে রোনালদোর গোলসংখ্যা ১১টি। মঙ্গলবার (১৫ জুন) হাঙ্গেরির বুদাপেস্টের পুস্কাস অ্যারেনায় ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা ধরে রাখার মিশনে মাঠে নামে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল। ম্যাচের ৮০ মিনিট পর্যন্ত পর্তুগালকে আটকে রাখলেও শেষ ১০ মিনিটে রোনালদোদের আর রুখতে পারেনি হাঙ্গেরি। শেষ দিকে রাফায়েল গুয়েরোর ৮৪ মিনিটের গোলে প্রথমবার লিড নেয় পর্তুগাল। এর মিনিট তিনেক পরে পেনাল্টি থেকে গোল করে লিড দ্বিগুণ করেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। আর যোগ করা অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে আরও এক গোল করে দলকে ৩-০ ব্যবধানের জয় এনে দেন পর্তুগিজ অধিনায়ক। ইউরোর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল হাঙ্গেরির পুস্কাস অ্যারেনায় ম্যাচের ৮৩ মিনিট পর্যন্তও গোলশূন্য সমতায় ছিল। তবে এরপরেই সবকিছু এলেমেলো করে দিল ফার্নান্দো সান্তোসের শিষ্যরা। গোটা ম্যাচে গোল মিসের মহড়া দিলেও শেষ ১০ মিনিটে এসে গুনে গুনে তিনবার হাঙ্গেরির জালে বল জড়ালেন রোনালদোরা। যার মধ্যে দুটিই এসেছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর কাছ থেকে। আর বাকি গোলটি আসে ডিফেন্ডার রাফায়েল গুয়েরোর কাছে থেকে। হাঙ্গেরির বিপক্ষে ম্যাচের ৭০ শতাংশ বল নিজেদের দখলে রেখে ১১টি শট হাঙ্গেরির গোলবরাবর নেয় পর্তুগাল। আর গোলের সুযোগ তৈরি করে ৯টি। বিপরীতে হাঙ্গেরি মাত্র ৫টি শট করতে সক্ষম হয় পর্তুগালের গোলবরাবর। আর গোলের সুযোগ তৈরি করে মাত্র তিনটি। ম্যাচের পাঁচ মিনিটের মাথাতেই লিড নিতে পারত পর্তুগাল। প্রতি আক্রমণে ডিয়েগো জোটা বল নিয়ে হাঙ্গেরির ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন আর জায়গা করে শটও নেন গোলবরাবর। তবে তাঁর শট ঘুষি দিয়ে বিপদমুক্ত করেন হাঙ্গেরির গোলরক্ষক পিটার গুলাচসি। তবে শট না নিয়ে বাঁ পাশে ফাঁকায় থাকা রোনালদোকে বল পাস দিলে গোল পেলেও পেতে পারতো সেলেসাওরা। ম্যাচের ১৯তম মিনিটে পেপের দুর্দান্ত এক বল পেয়ে গোলরক্ষককে কাটিয়ে বল জালে জড়াতে ব্যর্থ হন রোনালদো। আর তাতেই গোলের দুর্দান্ত আরও এক সুযোগ হেলায় হারায় পর্তুগিজরা। ৩০তম মিনিটে বার্নার্দো সিলভার ক্রসে মাথা ছোঁয়ান রোনালদো কিন্তু বল রাখতে পারেননি লক্ষ্যে। প্রথমার্ধের শেষ দিকে এসে জুভেন্টাস ফরোয়ার্ড ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো প্রথমার্ধের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি হাতছাড়া করেন। ডিয়েগো জোটার দারুণ এক ক্রস ডি-বক্সের ভেতর থাকা ব্রুনো ফার্নান্দেজের সামনে দিয়ে বেরিয়ে চলে যায়। ব্রুনো তৎক্ষণাত পা বাঁড়াতে না পারায় বল পেয়ে যান আনমার্কড থাকা রোনালদোর কাছে। এমন সুযোগ পেয়েও তিনি বল পাঠিয়ে দেন গোলবারের উপর দিয়ে। প্রথমার্ধ ঠিক যেখানে শেষ করেছিল দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটাও সেখান থেকেই করে পর্তুগিজরা। ৪৭তম মিনিটে ব্রুনো ফার্নান্দেজের ক্রসে লাফিয়ে উঠে মাথা ছোঁয়ান পেপে। তাঁর দারুণ হেডটি কর্নারের বিনিময়য়ে ফেরান হাঙ্গেরির গোলরক্ষক। ম্যাচের ৮০তম মিনিটে ভাগ্যজোরে বেঁচে যায় পর্তুগাল। লোভারেন্সিসের বাড়ানো বল পেয়ে শট নেন শচন। আর পর্তুগিজ গোলরক্ষক রুই প্যাট্রিসিওকেও পরাস্থ করে গোলের উজ্জাপনে মেতে ওঠে হাঙ্গেরি। তবে তাদের উজ্জাপন রুখে দেন রেফারি, জানিয়ে দেন অফসাইডের ছিলেন শচন। আর তাতেই হাফ ছেড়ে বাঁচে রোনালদোরা। এরপরে আর ম্যাচে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি রোনালদোদের। ৮৪তম মিনিটে রাফার নেওয়া শট হাঙ্গেরির এক খেলোয়াড়ের গায়ে লেগে ফিরে এসে পড়ে রাফায়েল গুয়েরোর সামনে। ডি-বক্সের ভেতর বল পেয়ে বাঁকানো শটে বল জালে জড়িয়ে দলকে ১-০ ব্যবধানের লিড এনে দেন গুয়েরো। এর মিনিট দুই পরে ব্রুনোর বাড়ানো বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন রাফা। তবে তাকে পেছন থেকে ফাউল করে ফেলে দেওয়ায় পেনাল্টি পায় পর্তুগাল। ৮৭তম মিনিটে গুলাচসিকে ভুল দিকে পাঠিয়ে বল জালে জড়িয়ে এবারের ইউরোতে নিজের প্রথম গোল করেন রোনালদো। সেই সঙ্গে দলের লিড দ্বিগুণ করেন অধিনায়ক। এরপর যোগ করা অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে রাফা সিলভার অ্যাসিস্ট থেকে দলের তৃতীয় এবং নিজের দ্বিতীয় গোল করেন রোনালদো। রাফার সঙ্গে বল দেওয়া নেওয়া করে ডি বক্সের ডান দিকে ঢুকে পড়েন রোনালদো আর সেখান থেকেই বল জালে জড়িয়ে পর্তুগালের ৩-০ ব্যবধানের জয় নিশ্চিত করেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: