বরগুনায় মা-বাবার ঝগড়া থামাতে গিয়ে প্রাণ গেল সুমনের

প্রকাশিত: ২৪ জুন ২০২১, ০১:০১ এএম
মা-বাবার মধ্যে ঝগড়া থামানোর সময় মাকে রক্ষা করতে গিয়ে নবম শ্রেনীর ছাত্র মো. সুমন (১৪) বাবা আসাদুল খাঁনের হাতে নিহত হয়েছে। আমতলী থানা পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে প্রেরন করেছে। বাবা আসাদুল খাঁন নিহত ছেলে সুমনের মরদেহ আমতলী হাসপাতালে রেখে পালিয়েছে। স্কুল ছাত্র সুমনের নিহতের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি ও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত সুমনের সহপাঠীরা ঘাতক বাবার শাস্তি দাবী করেছেন। ঘটনা ঘটেছে তালতলী শহরের টিএনটি সড়কে বুধবার (২৩ জুন) দুপুরে। জানা গেছে, তালতলী উপজেলা শহরের টিএনটি সড়কের আসাদুল খাঁনের সাথে তার স্ত্রী সেলিনা বেগমের পারিবারিক বিষয় প্রায় বিরোধ হতো। বুধবার (২৩ জুন) বেলা ১১টার দিকে বাবা ও মা ঝগড়ায় জড়িয়ে পরে। এ সময় ছেলে সুমন বাড়ীতে ছিল না। প্রাইভেট পড়তে তালতলী সরকারী মাধ্যমিক স্কুলে যায়। সুমন বাড়ীতে এসেই দেখে বাবা আসাদুল খাঁন মা সেলিনাকে ধারলো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে উদ্ধত হয়। এ সময় ছেলে বাবাকে ফেরাতে মায়ের সামনে দাড়ায়। ওই মুহুর্তে ধারালো অস্ত্রের আঘাত স্ত্রী সেলিনা বেগমের শরীরের না লেগে ছেলে সুমনের কপালে লাগে। মুহুর্তের মধ্যেই ছেলে সুমন মাটিয়ে লুটিয়ে পড়ে। তাৎক্ষনিক বাবা আসাদুল খাঁন ও স্থানীয়রা উদ্ধার করে তালতলী হাসপাতালে নিয়ে আসে। ওই হাসাপাতালের চিকিৎসক ফাইজুর রহমান সঙ্কটজনক অবস্থায় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করেন। ছেলের অবস্থা খারাপ দেখে বাবা আসাদুল ছেলে সুমনকে আমতলী হাসপাতালে নিয়ে আসে। ওই হাসপাতালে ছেলেকে রেখেই বাবা আসাদুল খাঁন পালিয়ে যায়। পরে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. কেএম তানজিরুল ইসলাম ছেলে সুমনকে মুত্যু ঘোষনা করেন। বাবার হাতে ছেলের নিহতের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত সুমনের সহপাঠিরা ঘাতক বাবার দৃষ্টান্তমুলক শান্তি দাবী করেছেন। নিহত সুমন তালতলী সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্র। আসাদুল খান ও তার স্ত্রী সেলিনার আত্মীয়দের সুত্রে জানা যায়, প্রায়ই পারিবারিক বিষয় নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া বিপদ লেগে থাকতো। বুধবার বেলা ১১ টার দিকে বাবা আসাদুল মা সেলিনাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। মাকে রক্ষায় ছেলে এগিয়ে গেলে ওই ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছেলের কপালে লাগে। সাথে সাথে ছেলে সুমন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তাৎক্ষনিক বাবা ও স্থানীয়রা ছেলেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক কেএম তানজিরুল ইসলাম বলেন, সুমনকে হাসপাতালে আনার পূর্বেই মারা গেছে। মা সেলিনা বেগম কান্নাজনিত কন্ঠে বিডি২৪লাইভকে বলেন, আমার স্বামী প্রায়ই আমাকে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে মারধর করতো। আমাকে রক্ষা করতে গিয়েই আমার ছেলে খুন হয়েছে। আমি এ ঘটনার শাস্তি দাবী করছি। তালতলী থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, খবর পেয়েই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘাতক বাবাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। আমতলী থানার ওসি মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেন, খবর পেয়ে নিহত স্কুল ছাত্র সুমনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা হাসপাতালে প্রেরন করেছি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: