নিজ ঘরের আঙিনায় বিদেশি ফলের চাষ করে সফল আলম

প্রকাশিত: ২৪ জুন ২০২১, ০৮:০৩ পিএম
বাড়ির আঙিনায় চারদিকে সবুজের সমারোহ। সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে ড্রাগন ফল গাছ। সবুজ গাছে শোভা পাচ্ছে গোলাপি, লাল আর সবুজ ফল। স্বপ্নীল পরিপাটি এ বাগানটি গড়ে তুলেছেন রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার চাইল্যাতলি বাসিন্দা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। নিজ ঘরের আঙিনায় বিদেশি ফলের চাষ করে সফলতা দেখিয়েছেন তিনি। রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার ড্রাগন ফল চাষি জাহাঙ্গীর আলম জানান, ২০১১ সালে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটে ড্রাগন ফলের চাষ দেখে তিনি এ ফলের চাষবাদ করার উদ্যোগ নেন। পরে তিনি রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুকুল দেওয়ানের কাছ থেকে মাত্র ৪টি ড্রাগন ফলের চারা এনে রোপন করেন। এরপর থেকেই তিনি প্রতিবছর ড্রাগন ফলের চাষ করে আসছেন। এবারও বাড়ির আঙিনায় বাণিজ্যিকভাবে প্রায় ১ একর জমিতে ১১০টি ড্রাগন ফলের চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। এছাড়াও তিনি প্রতিবছর ড্রাগন ফল চাষ করে ৩০ হাজার থেকে প্রায় ৫০ হাজার পর্যন্ত মুনাফা অর্জন করেন। তবে প্রতিবছরের তুলনায় এবার বেশি মুনাফা অজর্ন হবে । তাঁর কাছে প্রায় ৪শত টি ড্রাগন ফলের চারা রয়েছে। তিনি এলাকার মানুষকে এই ফল চাষে উদ্বদ্ধ করার জন্য চারা বিতরণ ও বিক্রিও করেন এবং এলাকার অনেকেই এ ফলের চারা লাগিয়ে লাভবান হচ্ছেন। একটি ড্রাগন ফলের ওজন ৫০০ গ্রাম থেকে প্রায় ৭০০গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রতি কেজি ড্রাগন ফল বিক্রি হয় ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। এই ড্রাগন চাষেই নিজে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি নিজের উপজেলায় ড্রাগন চাষের বৈপ্লবিক পরিবর্তনের মাধ্যমে কৃষিক্ষেত্রে অনন্য অবদান রাখছেন মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। তিনি আরো জানান, সরকারিভাবে রাঙ্গামাটি পার্বত জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ক্ষুদ্র খামারীদের প্রদর্শনী দিলে ড্রাগন ফলের প্রচার বাড়বে এবং এলাকার প্রান্তিক কৃষকেরা এ ফলে চাষে আগ্রহ বাড়বে। ড্রাগন ফল চাষ খুবই সহজ ও বেশ লাভজনকও বটেই। অল্প পরিচর্যাই অধিক ফলন পাওয়া যায়। সার ঔষধ বেশি লাগে না,পোকা মাকড়ের আক্রমণ নেই বললেই চলে। ড্রাগন গাছের গায়ে কাটা যুক্ত থাকায় পশু-পাখি ক্ষতি করতে পারে না। বছরে কয়বার ফল পাওয়া যায় এমন প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শীত মৌসুমের প্রায় চার মাস ছাড়া বছরের বাকি আট মাস ড্রাগনের ফলন অব্যাহত থাকে। ১৫ দিন পরপর ফল তোলা যায়। রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী উপ-পরিচালক কৃষ্ণ প্রসাদ মল্লিক জানান, এবার রাঙ্গামাটিতে ১৫ দশমিক ৩ হেক্টর জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ৫ দশমিক ৯ মেট্রিক টন। অন্য ফসলের তুলনায় ড্রাগন চাষ লাভজনক। চারা লাগানোর এক বছরের মধ্যে ফল আসতে শুরু করে। তিনি লংগদু উপজেলায় প্রথম ড্রাগন চাষ শুরু করেন। তার দেখাদেখি এখন অনেকেই ড্রাগন চাষে ঝুঁকছেন। পুষ্টিগুণ, আকার-আকৃতি ও দামের কারণে বাজারে এই ফলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ক্যাকটাস জাতীয় গাছ হওয়ায় রোগ বালাইও কম। তাই চাষিরা সহজে এই ফল চাষ করতে পারে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: