লকডাউনে থমকে গেছে খেটে খাওয়া মানুষের জীবন

প্রকাশিত: ০৫ জুলাই ২০২১, ১০:১৭ পিএম
করোনাভাইরাসের উর্ধ্বগতি না কমায় সর্বাত্মক লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে। ১৪ দিনের সর্বাত্মক লকডাউনের পঞ্চম দিন চলছে। লকডাউনে বিপাকে পড়েছেন দেশের নিম্নআয়ের মানুষ। চিন্তার ভাঁজ খেটে খাওয়া দিনমজুরদের কপালে। তাদের চোখে-মুখে একটাই প্রশ্ন, কিভাবে হবে খাবার সংকটের সমাধান? জীবন বাঁচাতে সরকারের সহযোগিতার দিকেই চেয়ে আছেন শ্রমজীবী মানুষরা। লকডাউনে থমকে গেছে রাজধানী, থেমে গেছে শনিরআখড়ার বাদাম বিক্রেতা জহিরুল ইসলামের জীবনটাও। আগে প্রতিদিন যেখানে বিক্রি করতেন ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার। লকডাউনের কারনে তার দোকান বন্ধ রাখতে হয়। দোকান বন্ধ থাকায় দিশেহারা হয়ে দুদিন ধরে কোনো রকমে খুলেছেন তিনি। প্রথম দিন বিক্রি করেন ৬০ টাকা আর দ্বিতীয় দিন বিক্রি করেছেন ১৫০ টাকা। সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউনে জহিরুল ইসলামের মতই আরো দিশেহারা ঢাকার বিভিন্ন পেশার খেটে খাওয়া মানুষ। কারো কারো দৈনিক ৪০০/৫০০ টাকা থেকে আয় নেমে এসেছে মাত্র ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। সর্বাত্মক লকডাউনে প্রশাসনের কড়াকড়ির কারনে বাইরে বের হওয়া মানুষের সংখ্যা খুবই কম। যদিও গত চার দিনের তুলনায় মানুষের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। এদিকে যাত্রীর অপেক্ষায় সময় পার করছেন দিন মজুর রিক্সাচালক ও ভ্যান চালক। কখন আসবে যাত্রী রিক্সা চালক নিজেও জানেন না, জানেন শুধু পরিবার অপেক্ষা করছে বাজারের জন্য। সংসারের চিন্তায় যাত্রীর অপেক্ষায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অলস সময় পার করছেন রিক্সা ও ভ্যান চালকরা। কয়েকজন রিক্সা চালক ও ভ্যান চালকের সাথে কথা বললে তারা জানায়, 'সর্বাত্মক লকডাউনের কারনে মানুষ বাইরে কম বের হচ্ছেন, তারপরও আমরা বসে আছি। করোনা আতঙ্কে বাইরে মানুষ নেই, আপনারা কেন রিক্সা নিয়ে এসেছেন আপনাদের করোনা ভাইরাসের ভয় নেই, এমন প্রশ্ন করলে, তারা জানান সংসারের টানে ঝুঁকি জেনেও আমরা রিক্সা চালাতে এসেছি। পেট তো বুঝে না, করোনার ভয়ে থাকলে সবাইকে না খেয়ে থাকতে হবে।' টং দোকানে চা বিক্রি করতেন মো. রশিদ। তিনি বলেন, লকডাউনের কারনে দোকান বন্ধ। তাই ফ্লাক্সে করে হেটে হেটে চা বিক্রি করছি। টং দোকানে চা বিক্রি করেই আমার সংসার চলে। এখন দোকান বন্ধ হওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে। একদিন দোকান না চালাইলে সংসার চলে না। সেখানে এতো দিন দোকান বন্ধ রাখলে কি ভাবে চলবো? এ-সময় সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউনে তাদের মতই আরও দিশেহারা ঢাকার বিভিন্ন পেশার খেটে খাওয়া মানুষ। উল্লেখ্য, বুধবার (৩০ জুন) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ২১টি শর্ত দিয়ে এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। আজ সোমবার (৫ জুলাই) সর্বাত্মক লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়নো হশেছে। এ সময়ে জরুরি সেবা দেয়া দফতর-সংস্থা ছাড়া সরকারি-বেসররকারি অফিস, যন্ত্রচালিত যানবাহন, শপিংমল দোকানপাট বন্ধ থাকবে। খোলা থাকবে শিল্প-কারখানা। জনসমাবেশ হয় এমন কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: