সব পুলিশই কি এমন

প্রকাশিত: ০৭ জুলাই ২০২১, ০৬:৪১ এএম
নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার প্রেমনগর ছালিপুরা গ্রামের বৃদ্ধা রেনু আক্তার (৭০)। এই বয়সে চার মাইল হেঁটে কলা বিক্রির আশায় বের হয়েছেন। লকডাউনে বাজারের দিনে গ্রামের বাজোরে মানুষ নেই। তাই প্রায় চার মাইল সড়ক পাড়ি দিয়ে ওই বৃদ্ধা কলা বিক্রির আশায় শেষ পর্যন্ত যাচ্ছিলেন বারহাট্টার গোপালপুর বাজার। কঠোর লকডাউনে সড়কে পুলিশের চেকপোস্ট। এক চেকপোস্টে এক ওসি মো. মিজানুর রহমানের প্রশ্নের মুখোমুখি বৃদ্ধা রেনু। ওসিকে জানালেন তিনি নিজের দারিদ্র্য ও অসহায়ত্বের কথা। ঘরে টাকা পয়সা নেই। খাবার নেই। তাই কলা বিক্রি করে খাবার নেবেন তিনি। ওসি মিজানুর রহমান সব শুনে বললেন, ‘মা টাকা আমি দিচ্ছি, আপনি ঘরে যান’। প্রেমনগর ছালিপুরা গ্রামের বাসিন্দা রেনু বেগম জানালেন, এখন ঘর থেকে বের হতে না পেরে কাজকর্ম বন্ধ থাকায় পেট চালাতে পারছেন না তিনি। ঘরে খাবারদাবার নেই। শেষ পর্যন্ত উপায়ন্তর না পেয়ে বুদ্ধি খাটিয়ে বাড়ির গাছ থেকে কলা পেরে বিক্রি করে বাজার করতে চাচ্ছিলেন। সংসার জীবনের দারিদ্র্যতার কথা জানিয়ে তিনি বললেন, এক ছেলে এক মেয়ে রয়েছে তারা নিজেরাই চলতে পারে না, অভুক্ত থাকে। ওদের জীবনই তো দুর্বিষহ… ওরা নিজেরা চলতে পারতো আর তখন যদি আমার ভরণপোষণ না করতো তবে মনে কষ্ট থাকতো। কিন্তু এখন তা নেই। নিজেরাই চলতে পারছেন না। এদিকে সবকিছু শুনে ওসি অসহায় বৃদ্ধা রেনু বেগমকে বললেন, মা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা মধ্যে আপনার বাইরে থাকা বা কলা বিক্রির দরকার নেই। আমি টাকা দিচ্ছি, কি দরকার তা কিনে আপনি ঘরে চলে যান। অফিসার ইন-চার্জ মো. মিজানুর রহমানের কথা শুনে তার দেয়া টাকা হাতে পেয়ে বেজায় খুশি হলেন রেনু বেগম। তিনি প্রশ্ন করলেন, সব পুলিশই কি এমন? বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, লকডাউনে টহলের সময় সড়কের পাশে ওই বৃদ্ধাকে দেখে গাড়ি থামালাম। উনি আমাদের দেখে ভয় পাচ্ছিলেন। আশ্বস্ত করলাম, কথা বললাম। তিনি নিজের গাছের কলা কয়েক মাইল হেঁটে নিয়ে বিক্রি করতে যাচ্ছিলেন। এটা শুনে খুব খারাপ লেগেছে। তাই বাজার করার জন্য কিছু টাকা দিলাম। টাকা দিয়ে বাড়িতে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করলাম।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: