এবার বরগুনায় সরকারি ৫২ বস্তা চাল জব্দ

প্রকাশিত: ০৮ জুলাই ২০২১, ০৬:১৬ এএম
রগুনার পাথরঘাটায় সরকারী খাদ্য গুদাম থেকে চাল পাচারের সময় ১১ বস্তা চাল জব্দ করা হয়েছে। বুধবার দুপুর ২ টার দিকে বরগুনা জেল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. তানভীর আহমেদ এ চাল জব্দ করেন। সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম বিভিন্ন সময় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে চালগুলো কখনো ভোর রাতে আবার কখনো দিনের বেলায় পাচার করছে। তাছারা সে খাদ্যগুদামের ভিতরে সরকারী চালের বস্তা থেকে অন্য প্লাস্টিকের বস্তায় চাল ভর্তি করে সেলাই দিয়ে বাহিরে বিক্রি করে থাকেন। স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা অনুসন্ধান চালালে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে। ওই কর্মকর্তা স্থানীয় জনপ্রতিনিধির আত্নীয় হওয়ার সুবাদে এগুলো করার সুযোগ পেয়ে থাকেন বলেও জানা গেছে। এ চালের কথা বরগুনার অতিরিক্ত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিট্রেড তানভীর আহমেদকে জানালে তিনি চালগুলো জব্দ করে পাথরঘাটা থানায় পৌছান। স্থানীয়রা জানান, বুধবার সকাল থেকে পাথরঘাটায় প্রচুর বৃষ্টি হওয়ার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে খাদ্য গুদাম থেকে চাল পাচার করেন গুদামের লোকজন। স্থানীয়রা দুপুর ১টার দিকে ১১ বস্তা চাল সহ দুটি অটোরিকশাকে আটক করে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ভারপ্রাপ্ত) জানান। তারা আরো জানান, সকাল থেকে মোট ৫২ বস্তা চাল খাদ্য গুদাম থেকে বের হয়েছে বলে তাদের হাতে সংবাদ এসেছে। এর মধ্যে ১১ বস্তা আটকাতে পেরেছেন এবং বাকিগুলো সরিয়ে ফেলেছেন। চাল বহনকারী অটোরিকশা চালক ইদ্রিস ও লিটু জানান, খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালামের চাচা শশুর রাসেল ক্বারী খাদ্য গুদাম থেকে ১১ বস্তা চাল এনে তাদের গাড়িতে উঠিয়ে বাজারে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভাড়া করে। এর আগেও কয়েকটি গাড়িতে করে চাল খাদ্য গুদাম থেকে অন্য গাড়িতে বাজারে পাঠিয়েছে বলেও জানান তারা। রাসেল ক্বারী জানান, তিনি বিভিন্ন সময় উপকারভোগীদের চাল কিনে তার চাচাতো ভাই (খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার শশুর) সাবেক কাউন্সিলর মরহুম লিটনের বাসায় রাখতেন। তিনি সেখান থেকেই চালগুলো নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছিলেন। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ভারপ্রাপ্ত) এর প্রতিনিধি পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা ও সমবায় কর্মকর্তা জানান, 'বিষয়টি প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। তবে তদন্তে এখনো খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম ও পাচারকারী স্থানীয় জাহাঙ্গীর ক্বারির ছেলে রাসেল ক্বারীর বক্তব্য পাওয়া যায়নি তাই এখন পর্যন্ত বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না।' বরগুনার অতিরিক্ত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিট্রেড তানভীর আহমেদ জানান, যেহেতু চালগুলো খাদ্য গুদাম থেকে বের হয়েছে সে ক্ষেত্রে এগুলো কিভাবে বের হয়েছে এর কারনে অনুসন্ধান চলছে। এ বিষয়ে পাথরঘাটা থানায় মামলা হবে। তিনি জানান, খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালামের অনুপস্থিতি সন্দেহ অনেকটাই নিশ্চিত করেছে যে সে এঘটনায় জড়িত। খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন বলেও জানান তানভীর আহমেদ। এদিকে ঘটনার পরপরই উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালামের সাথে কথা হলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলবেন না বলে ফোন কেটে নাম্বার ব্লাকলিষ্টে ফেলে রাখেন। পরবর্তীতে অন্য ফোন দিয়ে কল দিলে কল টি কেটে দিয়ে ফোনটি বন্ধ করে রাখেন। এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পাথরঘাটা সার্কেল তোফায়েল আহমেদ সরকার জানান, জব্দ চালগুলো থানায় রয়েছে। এছাড়া পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: