ডিজিটাল উন্নয়নের বৈশ্বিক মিশনে ‘বিডিএসআইএফ’

প্রকাশিত: ১৫ জুলাই ২০২১, ১১:৩০ পিএম
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এ সময়ে জীবন-জীবিকার সেতুবন্ধন রচনা করছে প্রযুক্তি ও ভার্চুয়াল মাধ্যম। সমাজ উন্নয়নের শক্তিশালী মাধ্যম হিসাবে টেক আর টেকসই-এর মধ্যে তারুণ্যের দারুণ এক ভাব রচনা করে চলেছে বাংলাদেশ ডিজিটাল সোশ্যাল ইনোভেশন ফোরাম (বিডিএসআইএফ)। প্রতিষ্ঠার মাত্র তিন বছরেই দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বময় জৌলুস ছড়াতে শুরু করেছে। যুবকদেরকে টেকসই উন্নয়নে অংশীদার করতে স্কলারশিপ, ফেলোশিপ এবং স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে মাইগ্রেশনের মাধ্যমে ক্যারিয়ারে নতুন একটি মাত্রা যোগ করছে। বিদেশে স্বেচ্ছাসেবকদের কর্মসংস্থানে ভূমিকা রাখতে চলেছে সংগঠনটি। টেকসই উন্নয়নের চতুর্থ ভিত্তিপ্রস্তর স্বেচ্ছাসেবাকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মর জন্য অন্যতম ক্যারিয়ার হিসাবে গড়ে তুলতে কাজ করছে মহাসমারোহে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল সোশ্যাল ইনোভেশন সামিট এবং বাংলাদেশ ডিজিটাল সোশ্যাল ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড ২০২১ দিয়ে প্রযুক্তির শক্তিতে বলিয়ান তরুণদেরকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণের অভিনব একটি প্লাটফর্ম উপহার দিয়েছে সংগঠনটি। এ ছাড়াও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কাজ করতে প্রতিটি দেশেই খোলা হচ্ছে নতুন নতুন চ্যাপ্টার। এর মাধ্যমে প্রযুক্তিভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবক ক্যারিয়ারকে একটি প্লাটফর্মে সন্নিবেশ করছে প্রতিষ্ঠাতা মো. আলী আকবর আশা। বর্তমানে তিনি ক্যানাডার ওট্টাওয়া শহরে একটি অলাভজনক অর্গানাইজেশনে সার্ভিস সাপোর্ট কাউনসেলর হিসাবে (এনওসি সোশ্যাল ওয়ার্কার) হিসাবে কর্মরত। এরইমধ্যে তরুণ স্বেচ্ছাসেবীদের সামনে বেশ বড় একটা আশার দুয়ার খুলে দিতে কাজ করছেন তিনি। বিডিএসআইএফ মিশন কীভাবে শুরু হয়েছিল জানতে চাইলে আলী আকবর আশা বলেন, তথ্য ও প্রযুক্তির যুগে যেখানে প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে মানুষ ব্যবসা ও আনন্দদায়ক জিনিসের পিছনে বেশি ছুটছে। ঠিক একই সময়ে কিছু মানুষ এই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করেই সামাজিক উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কাজ করে যাচ্ছে, যার ফলে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে এসব কার্যক্রম। বিডিএসআইএফ একটি সার্বজনীন প্লাটফর্ম, যেখানে ভালো কাজগুলোকে প্রচার করা হয়। আর গ্লোবাল ভিলেজের সুবিধা নিয়ে বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতেই কাজ করছি আমরা। বিডিএসআইএফ প্রমাণ করেছে প্রবৃদ্ধির মূল্যায়নে সবচেয়ে বড় নিয়ামক স্বেচ্ছাসেবা বা সামাজের ইতিবাচক পরিবর্তনে ভূমিকা রাখা। নিজের জীবন দিয়েই এই দর্শনকে প্রতিষ্ঠা করে চলেছেন মো. আলী আকবর। তার ভাষায়, ব্যক্তি আর সমাজ যেহেতু একাট্টা। তাই সামাজকে ছাড়া ব্যক্তির উন্নয়ন অসম্পূর্ন। সেই দর্শন থেকেই ২০১৮ সালে এর শেষের দিকে গড়ে তুলি বিডিএসআইএফ। আমি যখন ক্যারিয়ারের ডাকে কানাডায় পাড়ি জমাই। তখন অ্যাম্বাসিতে এই প্রযুক্তিভিত্তিক সামাজিক উদ্যোগকেই নিয়ে আসা হয় সবচেয়ে বড় যোগ্যতা হিসাবে। প্রযুক্তিতে একাডেমিক কোনো শিক্ষা না থাকা সত্ত্বেও এই যাত্রায় সফল হলেন কীভাবে প্রশ্নের জবাবে আলী আকবর বলেন, ‘বরাবরই কম্পিউটারের প্রতি টান ছিল। স্কুল জীবনে কম্পিউটার নিয়ে পড়ে থাকতাম। তবে নিজে যাচাই করে শিক্ষা গ্রহণ করাটা আমার ফ্যাশন ছিল আর এটাই আমাকে সফলতা এনে দিয়েছে। ইন্টারনেটের ওপর এতটাই ভালোলাগা ছিল যে, কলেজে পড়া অবস্থায় বন্ধু ও ছোটভাইদের নিয়ে ব্রডব্যান্ড ব্যবসা শুরু করি, যদিও দক্ষতা কম থাকায় সফল হয়নি। শেখার আগ্রহ থাকলেও মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে হিসাবে সুযোগ কম ছিল। ইন্টারনেট সেই বাধা দূর করে। ফেসবুকের ব্লুপ্রিন্টের ৭৬টা কোর্স শেষ করেন ২ রাতে। উডিমাই, উডাসিটি ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স, লিংকডইন এর ডিজিটাল মার্কেটিং অ্যাডভার্টাজিং এবং আইবএমআই থেকে মার্কেটিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন থেকে এমবিএ, গুগল অ্যাডওয়ার্ড সার্টিফিকেশন, ইকগাই হাব, ইলিয়ানস থেকে নানা প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন প্রযুক্তির অঙ্গনে। তিনি বলেন, ‘চাকরি জীবনে আমি একটি প্রাইভেট রিয়েল এস্টেট কোম্পানির সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ছিলাম। যেহেতু সেলসে কাজ সুতরাং প্রতিনিয়ত নতুন ক্লায়েন্ট মিট করতে বেশ ভালো একটা খরচ লাগে যার সক্ষমতা আমার নেই, যেহেতু সবার কাছে এখন স্মার্টফোন আছে চাইলে আমার প্রচারণাগুলো আমি একটি ভালো ব্যানার দাড় করিয়ে পৌঁছে দিতে পারি সবার কাছে। তখন ফেসবুক অ্যাড ম্যানেজার চালু করেনি তাই পেইড প্রমোশনের সুযোগ ছিল না। এসএমএস আর প্রিন্টের ওপর নির্ভরশীল ছিল। আর ওই এক চিন্তাই আমার ক্যারিযার সেলসম্যান থেকে ব্র্যান্ডিং-এ শিফট হয়। এভাবেই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সুবিধা নিয়েই অফিসে বসে প্লট সেলসে রেকর্ড করে স্থগিত হওয়া বেতনের সঙ্গে বোনাসও পান আলী আকবর। অনুধাবন করতে থাকেন সামনের পৃথিবীতে টিকে থাকতে হলে প্রযুক্তির বিকল্প নেই। প্রযুক্তির মাধ্যমে সামাজিকায়নের প্রবৃদ্ধি এবং জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়নের ১৭টি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিশ্ব যুব সমাজের ক্যারিয়ার গড়ার মিশনে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: