মা কারাগারে, দুগ্ধপোষ্য শিশুভ্রাতাকে সঙ্গে নিয়ে অসহায় শিশু আলিফের অবস্থান কর্মসূচি

প্রকাশিত: ১৮ জুলাই ২০২১, ১২:৫০ এএম
পারিবারিক কলহের জের ধরে দাদীর দায়ের করা মিথ্যে মামলায় মা কারাগারে। একই মামলায় বাবা গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে আত্মগোপনে, দাদী ও ফুফু শিশু সন্তানদের ঘর থেকে বের করে দেয়ায় বাধ্য হয়ে দুগ্ধপোষ্য শিশুভ্রাতাকে সঙ্গে নিয়ে মায়ের মুক্তি চেয়ে আজ জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্তরে অবস্হান কর্মসূচি করে ১২ বছরের অসহায় শিশু আলিফ। শনিবার (১৭ জুলাই) সকালে প্রথমে শহরের টাউনহল এলাকার অগ্নিঝরা একাত্তরের পাদদেশে অসহায় দুই শিশুর এ অবস্থান কর্মসূচি দেখতে ভিড় জমান উৎসুক জনতা। অবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন অনেকেই। ভুক্তভোগী শিশু আলিফের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাবার চাকুরির সুবাদে তারা গাজিপুর জেলায় বসবাস করে আসছিলো। সে সেখানকার একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ব্রিটিশ কাউন্সিলের মাধ্যমে একটি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে মেধাবী শিক্ষার্থী আলিফ ইংল্যান্ডে লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছে। তার ভিসাও প্রস্তুত। করোণার কারণে তার ইংল্যান্ড যাওয়া বিলম্বিত হয়েছে। অথচ এমন একটি সময়ে তার দাদীর দায়ের করা মিথ্যে মামলায় কারাগারে রয়েছে তাদের মা আনিতা জামান। শিশু আলিফ আরও জানায়, তার বয়স এখন ১২ বছর। অথচ মিথ্যে মামলায় তার বয়স ১৮ বছর দেখিয়ে তাকেও আসামী করা হয়েছে! অন্যদিকে উভয়পক্ষের আইনজীবীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, করোণাকালীন সময়ে গত দুই তিনমাস ধরে শিশু আালিফ ও গালিফকে নিয়ে মা আনিতা জামান বরগুনায় তাদের গ্রামের বাড়ি সদর উপজেলার আয়লাপাতাকাটা ইউনিয়নের খেজুর তলা গ্রামে বসবাস করছে। জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পারিবারিকভাবে আলিফ ও গালিফের বাবা মনিরুজ্জামান জুয়েল ও তার মা-বোনদের মাঝে কলহ চলছে। মামলায় আলিফের বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে বৃদ্ধ দাদীকে মারধরের অভিযোগ করা হয়েছে। ভুক্তভোগী শিশু আলিফের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গছে তার নানা বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলায়। বরগুনায় তার দাদীবাড়ির স্বজন ছাড়া আর কোন স্বজন নেই। তার ফুফুদের যোগসাজশে তার দাদী তার মা-বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় গত বৃহস্পতিবার তার মাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ওদিকে বাবা মো. মনিরুজ্জামান জুয়েল গাজিপুরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। মামলায় ঘটনার যে সময় দেখানো হয়েছে সেসময় আলিফের বাবা মো. মনিরুজ্জামান জুয়েল তার কর্মস্থলে ছিলেন। সেখানে ডিজিটাল হাজিরায় তার হাজিরা রয়েছে। অথচ মিথ্যে তথ্য দিয়ে সেই মামলায় তার বাবা মনিরুজ্জামান জুয়েলকেও আসামী করা হয়েছে। তার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। এ অবস্থায় ২ বছরের দুগ্ধপোষ্য শিশু ছোট ভাই গালিফকে নিয়ে চরম অসহায়ত্বের মধ্য দিয়ে দিন কাটছে তাদের। তাই প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে এ মিথ্যে মামলা থেকে মায়ের মুক্তির দাবি জানিয়েছে অসহায় দুই শিশু আলিফ ও গালিফ। এ বিষয়ে আসামী পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. নজরুল ইসলাম সিকদার জানান, ‘ভুক্তভোগী দুই শিশু আলিফ এবং গালিফের চাচা ও ফুফুদের ভেতরকার পারিবারিক দ্বন্দ্বের জের ধরে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে অসহায়ত্বের শিকার হয়েছে ছোট ছোট দুই শিশু। দুগ্ধপোষ্য শিশু ও এবং করোণাকালীন সময়ে একজন নারীর অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলাম। আদালত জামিন না মঞ্জুর করেছেন। আগামীকাল আবারও আসামীপক্ষে জামিন আবেদন করা হবে।’ এ বিষয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. মিসকাত সাজ্জাদ জানান, করোণাকালীন সময়ে গত দুই তিনমাস ধরে শিশু আালিফ ও গালিফের বাবা-মা বরগুনায় থাকছেন। জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পারিবারিকভাবে আলিফ ও গালিফের বাবা মনিরুজ্জামান জুয়েল ও তার মা-বোনদের মাঝে কলহ চলছে। আলিফের বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে বৃদ্ধ দাদীকে মারধরের অভিযোগ রয়েছে বলেও জানান তিনি।সকাল ৯ টা বিকাল ৬টা পর্যন্ত অবস্হানের পরে প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক সোহেল হাফিজের স্রী জাফরীন নীতু তার দায়িত্বে শিশু আলিফ ও গালিবকে নেন। এসময় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি হাসানুর রহমান,জাগোনারীর নির্বাহী সদস্য সায়েরা খাতুন রুবী সহ গণমাধ্যম কর্মী ও সামাজিক নারী নেতৃবৃন্দ উপস্হিত ছিলেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: