সচিবালয়ের বৈঠকে লকডাউন ও শিল্পকারখানা নিয়ে সিদ্ধান্ত

প্রকাশিত: ২৭ জুলাই ২০২১, ০৯:৫১ পিএম
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান খান জানিয়েছেন, আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত চলমান লকডাউন বহাল থাকবে। এসময় শিল্পকারখানার মালিকরা কারখানা খুলে দেয়ার ব্যাপারে অনুরোধ করলেও সেটি এই মুহূর্তে রাখা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি। আজ মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) সচিবালয়ের পূর্বঘোষিত এক বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে সাংবাদিকদের জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এরআগে, আজ দুপুরে চলমান লকডাউন ও শিল্পকারখানা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠকে বসেন সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা। জানা গেছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিধিনিষেধ পর্যালোচনাসহ পরবর্তী করণীয় নিয়ে বৈঠকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান খান। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন একাধিক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবগণ। বার বার লকডাউন দেয়াসহ নানাধরণের কঠোর উদ্যোগ নেয়ার পরেও নিয়ন্ত্রণে আসছে না দেশের করোনা প্রকোপ। প্রতিদিন বাড়তেই আছে দেশে মৃতের সংখ্যা, সাথে বাড়ছে শনাক্তের হার। তাই সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠকে বসেছিল সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা। গতকাল সোমবার (২৬ জুলাই) সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এই বৈঠকের কথা মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। বিধিনিষেধ আরও বাড়ানো হবে কি না বা আরও কঠোর করার পরিকল্পনা রয়েছে কি না- জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘কাল আমরা মিটিং করব। তারপর সিদ্ধান্ত। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সচিবালয়ে এ মিটিং হবে।’ প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত ১ থেকে ৭ জুলাই কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। পরে তা বাড়িয়ে ১৪ জুলাই করা হয়। ঈদুল আজহার কারণে ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। পরে ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ‘কঠোরতম বিধিনিষেধ’ জারি করে সরকার। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, শুরু হওয়া দুই সপ্তাহের লকডাউনের বিধিনিষেধ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন গত ১৩ জুলাই জারি করে সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, করোনা ভাইরাসজনিত সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট দিনগত রাত ১২টা পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো। কঠোর বিধিনিষেধের শর্তগুলো হলো- সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। সড়ক, রেল ও নৌপথে গণপরিবহন (অভ্যন্তরীণ বিমানসহ) এবং সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। শপিংমল, মার্কেটসহ সব দোকানপাট বন্ধ থাকবে। সব পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। সব প্রকার শিল্প-কলকারখানা বন্ধ থাকবে জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক (বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান, ওয়ালিমা), জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি ইত্যাদি) রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এদিকে দেশে করোনায় মৃত্যু যেন লাফিয়ে বাড়ছে। আর লাগামহীনভাবে ছুটছে করোনা শনাক্তের সংখ্যাও। কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না সংক্রমণ। একদিনে মৃতের সংখ্যা সর্বোচ্চ ২৪৭ জনে ঠেকেছে। যা একদিনে রেকর্ড মৃত্যু। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে মোট মৃত্যু ১৯ হাজার ৫২১ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৫ হাজার ১৯২ জন। এ নিয়ে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৮২৭ জনে। সোমবার (২৬ জুলাই) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১১ হাজার ৫২ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ১০ লাখ ৯ হাজার ৯৭৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫০ হাজার ৯৫২ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ৮২ শতাংশ। এর আগে, রোববার (২৫ জুলাই) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২২৮ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া করোনা শনাক্ত হয় ১১ হাজার ২৯১ জনের।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: