কক্সবাজারে পৃথক পাহাড় ধসে রোহিঙ্গাসহ ৮ জন নিহত

প্রকাশিত: ২৭ জুলাই ২০২১, ১১:৫২ পিএম
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে, টেকনাফ ও মহেশখালীতে পাহাড় ধসে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া একজন রোহিঙ্গা শিশু পানিতে ডুবে নিহত হয়। মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) পৃথক সময়ে ৬ রোহিঙ্গাসহ আটজন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। জানা যায়, উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধস এবং পানিতে ভেসে মোট ৬ রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বালুখালীস্থ ক্যাম্প ১০ এ পাহাড় ধসে মারা গেছে ৫ জন। পালংখালীস্থ ক্যাম্প ১৮ তে পানিতে ভেসে মারা গেছে এক রোহিঙ্গা শিশু। মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে পাহাড় ধসের এ ঘটনা ঘটে। এতে পাহাড় ধসে নিহতরা হলেন- ক্যাম্পের ব্লক জি/৩৭ এর নুর মোহাম্মদের মেয়ে নুর বাহার (৩০), শাহ আলমের ছেলে শফিউল আলম (১২), ব্লক জি/৩৮ এর ইউসুফের স্ত্রী দিল বাহার (২৪) ও তাদের দুই সন্তান আবদুর রহমান (৩) এবং আয়েশা সিদ্দিকা (২)। পানিতে ভেসে নিহত রোহিঙ্গা শিশুর পরিচয় পাওয়া যায়নি। এতে পাহাড় ধসে কয়েকজন আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে ক্যাম্পের অভ্যন্তরে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে পাঁচজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। উখিয়া রাজাপালং ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন জানান, পাহাড় ধসে ৫ জন রোহিঙ্গা নিহত হওয়ার খবর জেনেছি। এসময় ১০ থেকে ১২ জন আহত হয়েছে। তিনি প্রশাসনের প্রতি দাবী জানান, পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার। তথ্য নিশ্চিত করে কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. সামুদ্দৌজা নয়ন বলেন, ভারী বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসের এই ঘটনা ঘটে। এতে ৫ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া বৃষ্টিতে খালে গোসল করতে নেমে পানিতে ভেসে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। পাহাড় ধসের ঘটনায় অনেকেই আহত হয়েছেন। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। তখন থেকে উখিয়া ও টেকনাফে ৩৪টি আশ্রয় শিবিরে সাড়ে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছে। অন্যদিকে টেকনাফে পাহাড় ধসে ঘরের দেয়াল চাপা পড়ে রকিম আলী (৫৫) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) সকাল ১১ দিকে হোয়াইক্যংয়ের মনিরঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রকিম আলী হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডে মনিরঘোনা এলাকার মৃত আলী আহমদের ছেলে। টেকনাফ হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জালাল উদ্দিন জানান, টানা দু’দিন ভারী বৃষ্টিপাতে মনিরঘোনা এলাকায় পাহাড়ের একাংশ ধসে রকিম আলীর মাটির ঘরের দেয়ালে পড়ে। এতে দেয়াল চাপায় তিনি নিহত হয়। খবর পেয়ে স্থানীয়রা মাটি সরিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ পারভেজ চৌধুরী বলেন, দেয়াল চাপা পড়ে একজন নিহত হওয়ার বিষয়টি শুনেছি। এছাড়া গত কয়েকদিন ধরে পাহাড়ের পাদদেশে বা আশপাশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। অপর দিকে মহেশখালী উপজেলার ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের উত্তর সিপাহী পাড়ায় পাহাড় ধসে এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) দিবাগত রাত ২ টার দিকে পাহাড়ের একাংশ ধসে স্থানীয় মো. আনছারের মাটির ঘরের দেয়ালে পড়ে। এতে ঘরের দেয়ার চাপা পড়ে তার মেয়ে মুরশিদা (১৫) নিহত হয়।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: