বিডি২৪লাইভে সংবাদ প্রকাশের পর শিকলবন্দী রবিউলের পাশে ইউএনও

প্রকাশিত: ৩১ জুলাই ২০২১, ০৪:২৩ এএম
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে রবিউল ইসলাম নামে এক যুবক প্রায় দুই যুগ ধরে শিকলবন্দী। এই সংবাদ "বিডি২৪লাইভ ডটকম" এ প্রকাশের পর বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ্র নিজে উপস্থিত হয়ে চাল, ডাল,তেল আলু ও নগদ টাকা রবিউলের বাবার নিকট তুলে দেন। এসময় তিনি বিডি২৪লাইভ কে বলেন, রবিউলকে এই শিকলে বেধে রাখা একটা অমানবিক কাজ তাই রবিউলের বাবাকে শিকলমুক্ত করতে অনুরোধ করেছি এবং ছেলেকে প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন বলে জানান । তিনি আরও বলেন, আমরা সব সময় খোঁজ রাখছি। তার জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রয়োজনীয় সব সহযোগীতা করা হবে। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, রবিউল মাত্র দশ বছর বয়সে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে এখন আঠারো বছর যাবৎ মানবতার জীবনযাপন করছে। মানসিক ভারসাম্যহীন রবিউল ইসলাম বাড়ির একটি ভাঙ্গা ঘরের ভেতর এক ছোট গর্তে শুয়ে আছে। কোমরে লোহার শিকল বাঁধা। মুখে ঘন দাড়িভর্তি। পরনে কোন কাপড় নেই। তিন ভাইয়ের মধ্যে বড় রবিউল ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের বর্নিরচর পশ্চিমপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের বড় ছেলে। হতভাগা বাবা নুরুল ইসলাম পেশায় একজন কৃষক। আর্থিক অবস্থা নাজুক হওয়ায় পরিবারের একটু স্বচ্ছলতার জন্য মাঝে মাঝে ভ্যান চালিয়ে বাড়তি উপার্জনের চেষ্টা করেন। ছেলের মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থা তাকে প্রচন্ডভাবে ব্যথিত করলেও তিনি নিরূপায়। পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত সামান্য জমিজমা আর নিজের অর্জিত উদ্বৃত্ত অর্থের সবটাই ছেলে রবিউলকে সুস্থ করতে তার চিকিৎসার পেছনে ব্যয় করেছেন। চিকিৎসক, কবিরাজ, ফকির সবই দেখিয়েছেন। কিন্তু কোন সদর্থক ফলাফল অর্জিত হয়নি। রবিউলের বাবা নুরুল ইসলাম বিডি২৪লাইভকে বলেন, রবিউল দশ বছর পর্যন্ত সুস্থ স্বাভাবিক ছিল। হেসেখেলে বেড়াত। তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় হঠাৎ করে তার মধ্যে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থা দেখতে পাই। এরপর নিজের সাধ্যমতো চিকিৎসার চেষ্টা করেও সুস্থ করতে পারিনি। রবিউলের ছোট ভাই ইনামুল হোসেন বলেন, বর্তমানে ভাই যে ঘরে থাকে এখানে আমাদের মুদি দোকানঘর ছিল। দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর এই ঘরেই আমার ভাইটা এইভাবে পড়ে আছে। মাজায় ও পায়ে শিকল দিয়ে বাঁধা। সারাদিন শুধু হাত দিয়ে মাটি খুঁড়ে। হাঁটতে পারে না, কথা বলতে পারে না। শরীরে কোনো কাপড়-চোপড় রাখে না। এ ব্যাপারে ময়না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির মো. সেলিম বিডি২৪লাইভকে বলেন, ‘ছেলেটি মানসিক ভারসাম্যহীন। শিকল খুলে দিলেই ও অন্যত্র চলে যায়। কাপড়ও পরনে রাখতে চায় না।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার নিকট ওদের পরিবারের কেউ কখনো সাহায্যের ব্যাপারে আসেনি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: