মধুমতীর গর্ভে বিলীনের পথে ৪ প্রাথমিক বিদ্যালয়

প্রকাশিত: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০১:১৪ এএম
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় মধুমতী নদীর তীব্র ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। যে কোনো মূহুর্তে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে বিদ্যালয় চারটি। বিদ্যালয়গুলো হলো- গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া গ্রামের চরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের পশ্চিম চরনারানদিয়া গ্রামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১ নং চরপাচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পাঁচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। জানা যায়, উপজেলার পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের পশ্চিম চরনারানদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৮০ সালে স্থাপিত এবং ১৯৯৩ সালে পুনঃনির্মাণ করা হয়। বিদ্যালয়টির বর্তমান শিক্ষার্থী সংখ্যা রয়েছে ১০০ জন। বিদ্যালয়টি থেকে নদী মাত্র ৩ হাত দূরে অবস্থান করছে। দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে বিদ্যালয়টির শেষ রক্ষা হবে না। এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়নব খাতুন বলেন, বর্তমানে বিদ্যালয়টি থেকে নদী মাত্র ৩ হাত দূরে অবস্থান করছে। দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে বিদ্যালয়টি রক্ষা করা সম্ভব হবে না। একইভাবে ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া চরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১ নং চরপাচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৩৭ নং পাঁচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া চরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৯৫ সালে স্থাপিত। ২০১৪ সালে নতুন একতলা ভবনটি নির্মিত হয় । বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা বর্তমানে ৮৯ জন। এই বিদ্যালয়টিও মধুমতি নদীর  ভাঙনে মারাত্মক হুমকিতে পড়েছে। ভাঙ্গন বিদ্যালয়ের ভবনের থেকে মাত্র ১০ গজের মধ্যে চলে এসেছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে কয়েক দিনের মধ্যে ভবনটাই বিলীন হয়ে যেতে পারে। এ ব্যাপারে বাজড়া চরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদা ইয়াসমিন জানান, বিদ্যালয়ের ভবন থেকে নদী এখন মাত্র কয়েক গজ দূরে  আছে। যে কোন সময় বিলীন হয়ে যেতে পারে বিদ্যালয়টি। পাঁচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৩৫ সালে স্থাপিত। এরপর ২০১০ সালে পুনঃনির্মাণ করা হয়। বিদ্যালয়টির বর্তমান শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৭৫ জন। বর্তমানে বিদ্যালয়টি থেকে মাত্র ৫০ হাত দূরে অবস্থান করছে মধুমতি নদী ভাঙ্গন। ১ নং চরপাচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা ৭২ জন। বিদ্যালয়টি নদী থেকে ৩০-৩৫ হাত দূরে আছে। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা প্রীতিকনা বিশ্বাস বলেন, আমাদের এই চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। এর মধ্যে পশ্চিম চরনারানদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। যে কোন মুহূর্তে নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যেতে পারে। আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ এলাহী জানান, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। নদীগর্ভে কোন বিদ্যালয় বিলীন হয়ে গেলে দ্রুত অন্য কোন নিরাপদ স্থানে সেটি পুনঃস্থাপন করা হবে। ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিই) সন্তোষ কর্মকার বলেন, আপদকালীন বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে বিদ্যালয়গুলো রক্ষা করতে জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য করা আবেদনটি গত ২৫ মে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় হয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে প্রকল্পটি একনেক সভায় চূড়ান্ত হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: