জামাইকে গাছে বেঁধে নির্যাতনকারী সেই শ্বাশুড়ি গ্রেফতার

প্রকাশিত: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:৩৫ পিএম
বিয়ে করার অপরাধে মধ্যযুগীয় কায়দায় গাছে বেঁধে জামাই নাসিরুল(২৬) কে মারধরের ঘটনায় শাশুড়ি শিরিনা আক্তারকে আটক করেছে থানা পুলিশ। শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তার নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রানীশংকৈল থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম জাহিদ ইকবাল। শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে এক যুবককে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে শ্বশুর-শাশুড়ির চাচা শ্বশুরের বিরুদ্ধে। গত সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার ভাংবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত ১২টার দিকে রাণীশংকৈল প্রেসক্লাব এর সাধারন সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আকাশ ব্যক্তিগত ফেসবুকে মধ্যযুগীয় কায়দায় গাছে বেধে নির্যাতনের ভিডিও আপলোড দিয়ে এ ঘটনার ধিক্কার জানিয়ে সঠিক বিচারের দাবী জানান। এর পরে মুহুর্তে কয়েক'শ শেয়ার ও কমেন্টে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। সেই ভিডিও ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকেও। অনেকে নির্যাতনকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। নূর মোহাম্মদ নামে একজন মন্তব্য করে বলেন, ছেলেটিকে যারা গাছে বেঁধে নির্যাতন করেছে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করছি। এলাকাবাসী জানায়, একই এলাকার করিমুলের মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ওই যুবকের। দীর্ঘদিন সম্পর্কে থাকার পর তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। এক পর্যায়ে পরিবারকে না জানিয়ে তারা বিয়ে করে আত্মগোপনে থাকেন। আজ শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয়রা জানায়, খলিলুর রহমানের ছেলের সাথে একই এলাকার করিমুলের মেয়ের প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে। প্রেম থেকে তারা পরিবারের অগোচরে বিয়ে করে গত ৯ সেপ্টেম্বর ঠাকুরগাঁও নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ের হলফনামা গ্রহণ করে। পরে তারা দুজুনে ঢাকায় চলে যান। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ছেলে ও মেয়ের পরিবারের সম্মতিতে স্থানীয়ভাবে সমাধানের কথা বলে ছেলে মেয়েকে বাড়ীতে আসার ব্যবস্থা করা হয়। নাসিরুলের চাচা দবিরুল বলেন, আমি সহ ছেলে ও মেয়েকে ঢাকা থেকে নিয়ে আসি। এদিকে মেয়ের পরিবার থেকে ছেলের পরিবারকে মেয়েকে ফিরিয়ে দিতে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। বিয়ে মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেয়। মেয়ের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় ছেলের পরিবার ভীত হয় এবং ছেলেকে ফিরে আসার আকুতি জানায়। মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়ে ছেলেও মেয়েকে পরিবারের কাছে দিয়ে আসে। পরে সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে তার বাসায় যান ওই যুবক। তখনই মেয়ের বাবা-মা চাচা তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন করতে থাকেন। ওই যুবক চিৎকার করে কেঁদে কেঁদে ছেড়ে দেওয়ার আকুতি জানান, বারবার ক্ষমা চান। তবুও তাকে মারধর করতে থাকে মেয়ের পরিবার। শেষে পুলিশ গিয়ে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে যুবককে। নির্যাতনের শিকার যুবক ঐ গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে নাসিরুল ইসলাম(২৬)। সে ও তার ভাই কুদ্দুস বর্তমানে দিনাজপুর আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজে গুরুত্বর অবস্হায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ বিষয়ে থানা পরিদর্শক (ওসি) এস এম জাহিদ ইকবাল বলেন, ভিডিও তে ভাইরাল হওয়া নির্যাতনকারী শ্বাশুড়ি শিরিনা আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান ওসি।  

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: