চুয়াডাঙ্গায় কর্মকর্তা সংকটে অচলাবস্থা সাব-রেজিস্ট্রার অফিস

প্রকাশিত: ০৯ অক্টোবর ২০২১, ০৭:৪৪ পিএম
চুয়াডাঙ্গা জেলার ৪ টি সাব রেজিস্ট্রি অফিসের কার্যক্রম চলছে মাত্র ১ জন সাব রেজিস্ট্রার দিয়ে। দামুড়হুদা উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েও দলিল লেখকদের অনুরোধে বাকি ৩ টি উপজেলার সাব রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। কিন্তু বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা সদর, আলমডাঙ্গা ও জীবননগর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের জমি রেজিস্ট্রি কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে পড়ে। এতে প্রতিদিনের রেজিস্ট্রি অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। অধিকাংশ সপ্তাহেই বন্ধ থাকছে সাব রেজিস্ট্রি অফিসের তালা। এতে যেমন সেবা প্রত্যাশীদের হয়রানি ও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তেমনি বিপাকে পড়েছে জেলার সকল সাব রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দলিল লেখকরা। সেই সাথে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। দীর্ঘ দিন ধরে এমন সংকট চললেও তা নিরসনে উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, করোনার প্রকোপ ও লকডাউনের প্রভাবে প্রায়  ৩ মাস ধরে বন্ধ ছিল জেলার সকল রেজিস্ট্রি কার্যক্রম। এরপর লকডাউন খুললেও সংকট কাটেনি চুয়াডাঙ্গার সাব রেজিস্ট্রি কার্যালয়গুলোতে। লকডাউন খোলার পরই আলমডাঙ্গা উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার মামুন বাবরকে ক্লোজ করে জেলা কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়। সদর উপজেলার সাব রেজিস্ট্রার স্মৃতি কণা দাস ও জীবননগর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার মাসুদুর রহমান গত আগস্ট মাসে বদলীজনিত কারণে কর্মস্থল ত্যাগ করেন। সেই থেকেই চুয়াডাঙ্গা সদর, আলমডাঙ্গা ও জীবননগর উপজেলার সাব রেজিস্ট্রার অফিসে অফিসার শূন্য হয়ে রয়েছে। তবে এমন জনগুরুত্বপূর্ণ অফিসে কোনমতে কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন দামুড়হুদা উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার এম নফিয বিন যামান। তিনিই জেলার চারটি উপজেলা কার্যালয় সামাল দিচ্ছেন। তিনিও গত ১০ সেপ্টেম্বর দামুড়হুদায় যোগদান করেন। একাই সকল অফিস সামাল দিতে গিয়ে যেমন বেড়েছে চাপ; তেমন বেড়েছে জনভোগান্তি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সপ্তাহের প্রতি রবি ও সোমবার চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায়; রবি, সোম ও মঙ্গলবার আলমডাঙ্গা উপজেলায় এবং সপ্তাহের প্রতি পাঁচ দিনই জীবননগর উপজেলায় সাব রেজিস্ট্রি অফিসে জমি রেজিস্ট্রির কার্যক্রম চলে। উপজেলাগুলোতে কাজের পরিধি বেশী হওয়ায় দিনরাত সমানতালে কাজ করেও অনেক কাজ বিলম্বিত থাকতো। কিন্তু এখন পুরোপুরি ভাবেই বন্ধ হয়ে পড়েছে এই তিনটি উপজেলার রেজিস্ট্রি কার্যক্রম। মাঝেমধ্যে দামুড়হুদার সাব রেজিস্ট্রার এসব উপজেলাগুলোতে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। তবে সেটিও নিয়মিত না। এজন্য একেবারে অচলাবস্থায় পরিণত হয়েছে রেজিস্ট্রি অফিসের কার্যক্রম। ভুক্তভোগীরা বলছেন, টানা ১ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে এসব জনগুরুত্বপূর্ণ অফিসের কার্যক্রম। এতে প্রতিদিন জমি রেজিস্ট্রিসহ অন্যান্য কাজ আটকে রয়েছে। তাই অফিসে এসেও ঘুরে যেতে হচ্ছে তাদেরকে। অনেকে জমি ক্রয়-বিক্রয়ও করতে পারছে না। এভাবে আর কয়েক সপ্তাহ চললে কাজের চাপ আরও বাড়বে। তখন নিয়মিত কার্যক্রমেও ভাটা পড়বে। টানা তিনমাসের অচলাবস্থায় বিপাকে পড়েছে কর্মচারী ও দলিল লেখকরা। তারা বলছেন, এর আগে করোনার কারণে ৩ মাস ধরে বন্ধ ছিল রেজিস্ট্রি কাজ। এরপর কর্মকর্তা শূন্যতায় কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে টানা ১ মাস। রেজিস্ট্রি কার্যক্রম বন্ধের কারণে জেলার হাজার খানেক দলিল লেখকের অধিকাংশই অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছেন। একইসাথে এ খাত থেকে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। এ বিষয়ে জেলা রেজিস্ট্রার শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা জেলার সাব- রেজিস্ট্রার সংকটের বিষয়টি নিবন্ধন অধিদপ্তরকে জানিয়েছি। বদলী প্রক্রিয়ার কাজ করে আইন মন্ত্রণালয়। সেখান থেকে বদিল আদেশ না হলে নতুন কর্মকর্তা শূণ্যই থাকবে এ ৩ টি উপজেলায়। তবে আশার খবর হচ্ছে, চলতি সপ্তাহের মধ্যেই একটি বদলি হতে পারে। এ আদেশ হলেই তিনটি সাব রেজিস্ট্রার শূণ্য পদ পূরণ হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: