আলমডাঙ্গা থেকে ৪৫ বছর আগে পাচার হওয়া শিশুকন্যার সন্ধান মিলেছে পাকিন্তানে

প্রকাশিত: ১২ অক্টোবর ২০২১, ০৭:১০ পিএম
৪৫ বছর আগে আলমডাঙ্গার বাবুপাড়া থেকে পাচার হয়ে যাওয়া শিশুকন্যা কোমো খাতুনের সন্ধান মিলেছে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে। সেই শিশুকন্যার বয়স এখন ৫৪ বছর এবং এক প্রতিবন্ধি ব্যক্তির সাথে তার বিয়ে দেয়া হয়েছে। পাকিস্তানের এক ইউটিউব চ্যানেলের সাক্ষাতকারে কোমো খাতুন তার বাড়ি আলমডাঙ্গার বাবুপাড়ায় জানিয়ে জীবনে একবার তার স্বজনদের দেখার আকুতি জানান। জানা গেছে, আলমডাঙ্গার বাবুপাড়ার মৃত শেখ মনির উদ্দীনের মেয়ে কোমো খাতুনের বয়স যখন ৮ বছর তখন পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েন। পাচারকারীরা তাকে ১৯৭৫ সালের দিকে পাকিস্তানে নিয়ে করাচির (ইসলামাবাদ) এক ব্যক্তির নিকট ৫৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। পরে ওই ক্রেতা তার প্রতিবন্ধী ছেলের সাথে কোমো খাতুনের বিয়ে দেন। কয়েক দিন পূর্বে পাকিস্তানের এক ইউটিউব চ্যানেলের সাক্ষাতকারের এ সব তথ্য জানিয়ে কোমো খাতুন জীবনে একবারের জন্য হলেও বাংলাদেশে তার স্বজনদের কাছে ফেরার আকুতি জানান। গত ৩ দিন পূর্বে পাকিস্তান টু ডে নামক ইউটিউব চ্যানেলে উর্দু ভাষায় পাকিস্তানি যুবক ওয়ালিউল্লাহ মারুফকে এক সাক্ষাতকার দেন কোমো খাতুন। সে সাক্ষাতকারে তিনি উল্লেখ করেন, কোমো খাতুনের বয়স যখন ৮ বছর তখন পাকিস্তানে নিয়ে গিয়ে তাকে বিক্রি করে দেয়া হয় ৫৫ হাজার টাকায়। যে ব্যক্তি তাকে ক্রয় করেন তিনি তার প্রতিবন্ধী ছেলের সাথে বিয়ে দেন। সাক্ষাৎকারের ভিডিওতে কমো খাতুনের পাশে তার প্রতিবন্ধী স্বামীকে বসে থাকতে দেখা যায়। যখন বিয়ে হয় তখন কোমোর বয়স ছিল মাত্র ১১/১২ বছর এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিটির বয়স ৩০ বছর। তিনি গত ৪৫ বছর ধরে প্রতিবন্ধী স্বামীর সংসার করছেন। সাক্ষাৎকারে কোমো খাতুন আরও জানান, তার ভাইয়ের সাথে শত্রুতার জের ধরে বাংলাদেশী এক মহিলা তাকে ফুঁসলিয়ে সাথে নিয়ে ভারত হয়ে সড়কপথে পাকিস্থানের করাচীতে চলে যায়। সেখানে ৩ বছর যাবৎ নানা ভাবে নির্যাতনের পর তাকে বিক্রি করে দেয়া হয়। শুধু তিনি একা নন, সেই সময়ে আরও অনেক বাংলাদেশী মেয়ে একসাথে এভাবে অপহরণের শিকার হন। কোমো খাতুন উল্লেখ করে আরও বলেন, তারা ৫ বোন ও ২ ভাই, যাদের মধ্যে ৪ বোন ও ২ ভাই আলমডাঙ্গা বাবুপাড়ায় থাকেন। তিনি মেজো বোনের নাম বলেছেন আমিরন। এদিকে, উর্দু ভাষায় এ সাক্ষাতকারের ভিডিওটি কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওটি আলমডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর বাবুপাড়ার আলী আজগর সাচ্চুর নজরে আসে। তিনি খুঁজে বের করেন পাচার হওয়া কোমো খাতুনের পরিবারকে। গতকাল ১১ অক্টোবর বিকেলে কোমো খাতুনের বোনদের খুঁজে বের করেন তিনি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: