কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ধর্ষণ মামলার আসামী ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি রিয়াজুল হক জোদ্দারের জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর ফুল দিয়ে তাকে বরণ করে আনন্দ মিছিল করেছে স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। এ দৃশ্যের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে রাজনৈতিক মহলে চা ল্য সৃষ্টি হয়েছে। জামিনে সহযোগিতা করা চিলমারী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান গওছল হক মন্ডল জানান, কে কি বলল তাতে যায় আসে না। রিয়াজুল হক জোদ্দার মুক্তি পেলে সকলে তাকে বরণ করেছে। সেখানে কিসের আওয়ামীলীগ, কিসের বিএনপি।
জানা যায়, চিলমারী উপজেলার কড়াই বরিশাল গ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা (২৪) এক নারীর সাথে পাশর্^বর্তী অস্টমির চর ইউনিয়নের পশ্চিম ডাটিয়ার চর গ্রামের জমের আলী আকন্দের পূত্র সফিকুলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরই জেরে চলতি বছর ইদের পরদিন ২২ জুলাই বিকেলে বিয়ের প্রলোভনে ওই নারীকে বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে নৌকায় উঠিয়ে বেড়ানোর কথা বলে এক পর্যায়ে তাকে ধর্ষণ করে।
পরে তাকে রাত ৯টার দিকে কৌশলে বাড়ির পাশে ভিকটিমকে নামিয়ে দিয়ে সটকে পরে। এ ঘটনায় বিচারক হয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে চিলমারী ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি রিয়াজুল হক জোদ্দার।
পরে নির্যাতনের শিকার ওই নারী নিজে বাদী হয়ে ২৪ জুলাই রাতে সফিকুল ও রিয়াজুল হক জোদ্দারসহ ৫ সহযোগীর নামে চিলমারী থানায় মামলা দায়ের করে। রাতেই চিলমারী থানা পুলিশ পার্শ্ববর্তী ঢুষমারা থানা পুলিশের সহযোগিতায় সফিকুলকে তার বাড়ী থেকে গ্রেফতার করে। ওই ধর্ষণ মামলার পর দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর গত ১৭ সেপ্টেম্বর পুলিশ রিয়াজুল হক জোদ্দারকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠায়।
মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) তিনি জামিনে মুক্তি পান। তার মুক্তির পর সন্ধ্যায় চিলমারী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা ওই বিএনপি নেতাকে ফুলের মালা পড়িয়ে আনন্দ মিছিল করেন। আনন্দ মিছিলে অংশ নেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি, ৬ নং ওয়ার্ড সভাপতি রফিকুল ইসলাম, সেক্রেটারী বকুল মিয়া, ৭নং ওয়ার্ড সভাপতি আকবর আলী, ৮নং ওয়ার্ড সভাপতি চাঁন মিয়া, সেক্রেটারী রফিকুল ইসলামসহ দলের অঙ্গসংগঠনের একাধিক নেতাকর্মী। এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
উপজেলা বিএনপি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি ও নয়ারহাট ইউপি চেয়ারম্যান আবু হানিফা বিডি২৪লাইভকে বলেন, বিএনপি’র চেয়ারম্যান প্রার্থীওক আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান গওছল হক মন্ডল কর্তৃক জামিনে মুক্ত করার বিষয়টি রহস্যজনক। বিষয়টি পার্টির সভায় আলোচনা করে তার বিরুদ্ধে পরবর্তি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
চিলমারী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান গওছল হক মন্ডল বিডি২৪লাইভকে জানান, কে কি বলল তাতে যায় আসে না। রিয়াজুল হক জোদ্দার মুক্তি পেলে সকলে তাকে বরণ করেছে। সেখানে কিসের আওয়ামীলীগ, কিসের বিএনপি।
উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল বারী সরকার অভিযোগ অস্বীকার করে বিডি২৪লাইভকে বলেন, চিলমারী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান গওছল হক মন্ডল মানবিক কারণে তার জামিনের ব্যবস্থা করেছেন। জামিনে মুক্তির পর নিজ এলাকা ফিরলে স্থানীয় জনগণ তাকে ফুল দিয়ে বরণ করেন।
পাঠকের মন্তব্য: