৯ বছরের শিশু তামিমের ঘাড়ে ৬ সদস্যের পরিবার, মানবেতর জীবনযাপন

প্রকাশিত: ১৪ অক্টোবর ২০২১, ০৩:৩২ এএম
স্ত্রী সন্তানকে রেখে বিয়ে করে অনত্র চলে গেছেন বাবা। সংসারের খোঁজ নেন না তিনি। পরিবারের বড় ছেলে তামিম। বয়স মাত্র ৯ বছর, এই বয়সে হাতে বই-খাতা থাকার তামিমের হাতে এই বয়সেই ৬ জনের সংসারের বুজা তার তার মাথায়। আনন্দে হৈচৈ করে ঘুরে বেড়ানোর সময়। কিন্তু, কোনোটিই তার ভাগ্যে জোটেনি। জীবনসংগ্রামে তাকে কাঁধে তুলে নিতে হয়েছে সংসার নামক সমুদ্রের দায়িত্ব। তামিম জেলার ফুলবাড়িয়ার নাওগাঁও ইউনিয়নের হরিরামবাড়ী এলাকার জুলহাস ও তাসলিমা দম্পত্তির ছেলে। সংসারে তামিমসহ তিন ভাই ও বোন নিয়ে তাসলিমা৷ সংসার। নিজের থাকার মত কোন জমি তাদের নেই। নানার বাড়িতে তাদের বসবাস। তামিমে'র মা তাসলিমা বিডি২৪লাইভকে জানান, তামিম স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করতো। তামিমের বাবা জুলহাস দিন মুজুরের কাজ করে সংসার চালাত। হঠাৎ করে গত বছরের ডিসেম্বরে জুলহাস আরেকটি বিয়ে করে অনত্র চলে যাওয়ার পর আমি দিশেহারা হয়ে পড়ি। এমনতাবস্তায কি করবেন? কিভাবে সংসার চলবে এবং ছেলে মেয়েদের কিভাবে মানুষ করবেন এমন সব চিন্তা ভাবনার পাশাপাশি অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাতে থাকে। তিনি আরও বিডি২৪লাইভকে বলেন, সংসার চালানোর জন্য আমি মানুষের বাড়িতে বাড়িতে কাজ করি। সংসারের অভাব অনটনের কারণে ছেলেকে মাদ্রাসা থেকে এনে স্থানীয় বাজারে একটি বেকারীতে টুকিটাকি কাজ করে । সেখান থেকে মাসে ৩ হাজার টাকা দেয। এই টাকা দিয়েই আমার সংসার চলে। তিনি বলেন, আমার থাকার মত কোন জায়গা নেই। বাবার বাড়িতে থাকি। আমাকে একটি ঘর করে দিয়েছে। সেই ঘরে বসবাস করি। বৃষ্টি হলে ঘরে পানি পড়ে। সরকার যদি আমাদের কোন সহায়তা করত। তাহলে আমার কস্ট কিছুটা দুর হতো। এ বিষয়ে তামিম বিডি২৪লাইভকে বলেন, বাবা বিয়ে করে আমাদের ফেলে চলে গেছে। আমাদের কোন খোঁজখবর নেয় না। তাই, বাধ্য হযে সংসার চালানোর মাদ্রাসা ছেড়ে বেকারীতে কাজ নিয়েছি। এখানে আমাকে মাসে ৩ হাজার টাকা দেয়। এই টাকা মায়ের হাতে তুলে দেই। স্থানীয়রা জানায়, পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে তামিম সবার বড়। তার মা তাসলিমা বেগমসহ পরিবারে ৬ন সদস্য। ছয় সদস্যের ওই পরিবারের ঘানি টানতে সে বেকারীতে কাজ করে। তাছাড়া, তামিমের অন্যের বাসায় করেন। বেকারীর মালিক সারোয়ার আলম গণমাধ্যমকে বিডি২৪লাইভকে বলেন, ৭ মাস যাবত তামিম আমার এখানে কাজ করে। সে আমার খাবার বাড়ি থেকে এনে দেই এই কাজটি করে নিয়মিত। এ ছাড়া সে অন্য কোন কাজ করে না। এ বিষয়ে ময়মনসিংহ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা হক বিডি২৪লাইভকে বলেন, খোঁজ খবর নিয়ে তামিমসহ অন্যান্যদের লেখাপাড়ার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও সংসার যেন ভাল ভাবে চলে সেই ব্যবস্থাও করা হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: