ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বের এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপাড় পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার সৃষ্টি হয়েছে। এরফলে স্থানীয় যাত্রীদেরও গন্তব্য স্থানে পৌঁছাতে বিঘ্ন ঘটেছে। অপরদিকে, সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কসহ হাটিকুমরুল গোলচত্বর থেকে ৩টি রুটে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এতে বিকল্প সড়ক হিসেবে সিরাজগঞ্জ শহরে প্রবেশের বিভিন্ন সড়কেও যানবাহন ঢুকে পড়ায় চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে।চরম ভোগান্তিতে পড়েন পারাপার হওয়ার জন্য অপেক্ষারত যাত্রী ও পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা।
বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) ভোর রাত থেকে বঙ্গবন্ধুর সেতু পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ের সিরাজগঞ্জে এই ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মহাসড়কের যানজটের তীব্রতা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। জানা গেছে, সেতুর পশ্চিমে নলকা ব্রিজ সংস্কার ও মহাসড়কে উন্নয়নকাজ চলমান থাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইল-সিরাজগঞ্জের ২ প্রান্তে সকালে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেতুর পশ্চিম পাড়ে আরও ১৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে থেমে থেমে যানজট সৃষ্টি হয়। এরআগে সকাল ৯টার পর টোল আদায় শুরু করলে পরিবহন ধীরগতিতে চলাচল করছে।
বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপাড় থেকে তোলা। ছবি- সংগৃহীত।
বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমকর্মীদের বলছে- সিরাজগঞ্জের পশ্চিম প্রান্তে নকলা ব্রিজ ও মহাসড়কের উন্নয়ন- সংস্কার কাজ চলমান থাকায় গত কয়েকদিন ধরেই পশ্চিম যানজটের সৃষ্টি হচ্ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার ভোর রাত থেকে সেই যানজট সেতু পূর্ব প্রান্তের টোলপ্লাজা পর্যন্ত পৌঁছে গেলে সেতু দিয়ে উত্তরবঙ্গগামী যানবাহন পারাপার সম্ভব না হওয়ায় ভোর সাড়ে ৪ টা থেকে টোল আদায় বন্ধ রাখে সেতু কর্তৃপক্ষ।
এর ফলে পূর্ব প্রান্তে পারাপারের অপেক্ষায় থাকা যানবাহনের চাপে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সকাল ৯ টা থেকে এখন টোল আদায় শুরু করলে যানচলাচল ধীরগতিতে স্বাভাবিক হয়। এদিকে, এ তীব্র যানজট কারণে দুই প্রান্তের পারাপারে অপেক্ষায় থাকতে হয়। বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপাড়ের রেলস্টেশনে যানজটে বগুড়াগামী ট্রাক ড্রাইভার আব্দুল মতিন জানান, সকাল থেকে ঘণ্টাখানেক ধরে বসে আছি। টোল না নেয়ায় এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব থানার ওসি (তদন্ত) মো. সাহেদুল ইসলাম গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ভোর থেকেই বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব টোলপ্লাজায় উত্তরবঙ্গগামী লেনে টোল আদায় বন্ধ ছিল। এতে ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেড়ে গিয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে, সেতু পশ্চিম পাড়ের নকলায় ব্রিজ নির্মাণ ও মহাসড়কের উন্নয়ন কাজ চলমান থাকায় দুই প্রান্তে যানজট সৃষ্টি হয়। সকাল ৯টার পর টোল আদায় শুরু হলে ধীরগতিতে পরিবহন চলাচল করছে।
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম পাড়ের নকলা এলাকা থেকে তোলা। ছবি- সংগৃহীত।
এদিকে জানা যায়- ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়া নলকা সেতু পার হতে ৫০ মিটার দূর থেকেই গতি কমিয়ে দিচ্ছেন যানবাহনের চালকরা। ধীরগতিতে সেতু পার করতে হয় চালকদের। এসব কারণে সেতুর উভয় প্রান্তে সব সময় শত শত যানবাহন আটকে থাকে। একই সঙ্গে মহাসড়কটির বেশ কয়েকটি স্থানে উন্নয়নকাজ চলমান থাকায় যানবাহনের ধীরগতির কারণে কিছুক্ষণ পরপর দুই পাশে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। যানজট বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম পাড় থেকে শুরু হয়ে হাঁটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার এলাকায় বিস্তৃত হচ্ছে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী দিদারুল আলম তরফদার গণমাধ্যমকে জানান, সংস্কারকাজ শুরু হওয়ার পর সেতুটির মাঝামাঝি পশ্চিমাংশে ছাদের ওপর বেশ কিছু গর্ত পাওয়া গেছে। যে কারণে এসব স্থানে স্টিলের পাটাতন দিয়ে সেতুর সংস্কারকাজ শুরু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেকটাই শেষ করে আনা হয়েছে। সেতুটির সংস্কারকাজ শেষ করে আশপাশের সড়ক মেরামত করতে আরও ২ থেকে ৩ দিন সময় লাগবে।
পাঠকের মন্তব্য: